newsbazar24 : 12 দিন পর দিল্লি থেকে কলকাতায় আজ ফিরেছেন মুকুল রায়। শনিবার বিকেলে দমদম বিমানবন্দরে অবতরণ করে তার বিমান। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তার যাত্রা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি হন তিনি। বিজেপির কোনো নেতা কি তার সঙ্গে দেখা করেছেন? নাকি খালি হাতে ফিরতে হয়েছে? এমনই এক প্রশ্নের জবাবে কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক বলেন, ‘আমি সবার সঙ্গে দেখা করেছি। তবে মুকুলের এই দাবি সত্ত্বেও, রাজধানীর ব্যবসায়ীদের একাংশের মতে, মুকুলকে দিল্লি থেকে ‘খালি হাতে’ ফিরতে হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৭ এপ্রিল হঠাৎ করেই দিল্লি চলে যান মুকুল। সেখানে গিয়ে তিনি দাবি করেন যে তিনি বিজেপিতে যোগ দিতে চান। স্ত্রী-বিয়োগ হওয়ায় তার মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না। সেই খারাপ মানসিক অবস্থা নিয়েই তৃণমূলে যোগ দেন তিনি।
এবার নতুন করে বিজেপিতে যোগ দিয়ে বাংলায় পরিবর্তন আনতে চান তিনি। কিন্তু ছেলে শুভ্রাংশু রাই বিজয়পুর ও বিমানবন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন যে বাবাকে অপহরণ করা হয়েছে। বাবার মানসিক অবস্থা ভালো নয় বলেও দাবি করেন তিনি।
যদিও বাংলার রাজধানীতে ছেলের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন মুকুল। তিনি জানান, তার কোনো শারীরিক সমস্যা নেই। এবং তিনি নিজের ইচ্ছায় দিল্লিতে এসেছিলেন। তবে ছেলের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে সাময়িক ‘সমস্যা’ তৈরি হয়েছে তা মুকুলের মন্তব্যে বোঝা গেছে।
এই বিষয়ে মুকুল বলেন, “শুভ্রাংশুর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। আমি বাড়িতে গিয়ে কথা বলব।” এরপর তিনি বিমানবন্দর থেকে সোজা বিধাননগরে তাঁর বাড়িতে চলে যান। কিছুক্ষণ পরে কাঁচরাপাড়ায় ছেলের বাড়িতে ফিরে আসেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক।
মুকুল দিল্লি যাওয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সাথে দেখা করার জন্য সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজধানীর একটি সূত্র বলছে, এই তিন নেতার সঙ্গেতো নয়-ই, বিজেপির কোনো শীর্ষ নেতার সঙ্গেও দেখা করতে না পেরে কলকাতায় ফিরতে হয়েছে মুকুলকে।
তবে বিমানবন্দরে মুকুল বলেন, ‘আমি বিজেপিতে আছি, প্রয়োজনে আবার দিল্লি যাব’।
বলা বাহুল্য, ২০২২ সালের মে মাসে বিজেপির টিকিতে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে জেতেন মুকুল। ঠিক এক মাষ পর 21শে জুন তিনি ছেলে শুভ্রাংশুকে নিয়ে তৃণমূল ভবনে গিয়ে পুরনো দলে যোগ দেন। কিন্তু তারপর থেকেই রাজ্যের রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছেন মুকুল।
এরপর এই বছর মার্চে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়। এরপর থেকে তিনি বাড়িতেই থাকতেন। কিন্তু 17 এপ্রিল হঠাৎ করেই তার দুই সঙ্গীকে নিয়ে দিল্লি পাড়ি দেন মুকুল।
রাজধানীর রাজনৈতিক মহল মুকুলের সফরকে বৃথা বলে আখ্যায়িত করলেও তার দীর্ঘদিনের এক সমর্থক তা মানতে রাজি হননি। তাঁর নিজের কথায় মুকুলদা 17 তারিখ দিল্লি গিয়েছিলেন এবং 12 দিন দিল্লিতে ছিলেন। এই সময়ে তিনি কী করেছেন, কার সঙ্গে দেখা করেছেন তা কেউ জানে না। মুকুলদা জিজ্ঞেস করায় কেউ জানতে পারেনি। তাই তার যাত্রা যে নিষ্ফল হয়েছে তা বলার সময় এখনই নয়।