Malda news:জেলা তৃণমূল নেত্রী সাবিত্রী মিত্রর বিধানসভা কেন্দ্রে শাসক দলে বড় ভাঙ্গন

Newsbazar 24: রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বেজেছে। একদিকে চলছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কাজ। অন্যদিকে শাসক শিবিরে ভাঙ্গন অব্যাহত। যদিও এখনো পর্যন্ত অধিকাংশ ক্ষেত্রে তৃণমূল প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে শুরু করেননি।
এবার শাসক শিবিরে বড়সড় ধস নামালো কংগ্রেস। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা মালদার মানিকচক কেন্দ্রের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের বিধানসভা কেন্দ্রে তার অনুগামীরা তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন। জানা যায়, মালদা জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সহ সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন, তার স্ত্রী জেলা পরিষদের তৃণমূল কংগ্রেসের বর্তমান সদস্য সাবিনা ইয়াসমিন ও তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত মানিকচক পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ সহ মোট ৪০০ জন এদিন ঘাসফুল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন।
এছাড়াও এদিন তৃণমূল যুবর মালদা জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকী ,তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সীমা বিবি, চৌকি মির্জাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান মোস্তাক আলম সহ মানিকচক ব্লকে ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে গত নির্বাচনে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যরা শাসকদল ছাড়েন।
মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “আমাকে দল তাড়িয়ে দেয়নি বা লিখিতভাবে সাসপেন্ডও করেনি। তবে আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমি কোনও দলবিরোধী কাজ করিনি। তৃণমূলের রাজ্য কমিটির ঘোষণা মতে মানিকচক ব্লক তৃণমূল কমিটির সভাপতি হন দেবব্রত ঘোষ।আমি সভাপতি দেবব্রত ঘোষের সঙ্গে দলের কাজ পরিচালনা করতে শুরু করি। এতেই আমার দলের নেতাদের রাগ হয়। পরবর্তীতে ব্লক সভাপতির পরিবর্তন হয়। আমি সেই সভাপতির সঙ্গেও কাজ করতে চেয়েছিলাম।কিন্তু আমাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বসিয়ে রাখা হল”।
তাদের সকলেরই দাবি, তৃণমূলে থাকতে গেলে দুর্নীতির সাথে আপোষ করতে হবে। এদের লাগাতার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্যই তারা দল ছেড়েছেন। যদিও এই দলবদলকে গুরুত্ব দিতে একেবারেই নারাজ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এই বিষয়ে জেলা তৃণমূল সহ-সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, টিকিটের জন্যই অন্য দলে যোগ। অনেকে ক্ষমতায় থেকে মানুষের কাজ করেননি। তারা টিকিট পাবেন না একথা জেনেই আগে থেকেই দল ত্যাগ করছেন। তবে সদস্যের একজোটে এই দলত্যাগে দলের কোনও ক্ষতি হবেনা বলেও জানান তিনি।তিনি আরও বলেন, “পরবর্তীতে তৃণমূলের ব্লক কমিটি বা অঞ্চল কমিটিতেও আমাকে রাখা হল না। আমার স্ত্রী জেলা পরিষদের বর্তমান সদস্যা হওয়া সত্বেও তাঁকে কোনও পার্টির মিটিং মিছিলে ডাকা হয়নি। কোনওরকম কারণ ছাড়াই ষড়যন্ত্র করে আমাদের একপ্রকার পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
অন্যদিকে, ঘটনা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মোত্তাকিন আলম বলেন, তৃণমূল কংগ্রেস সৎ মানুষের জন্য নয়। তাই যারা
সৎ বা ভালো মানুষ তারা তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করছেন। শুধু তাই নয়, এরপর তিনি আরও বলেন, “আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের ক্যান্সার হয়েছে। তাই সবাই দল ছেড়ে পালাচ্ছে।” প্রসঙ্গত, এই প্রথম নয়, পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই রাজ্যের একের পর এক জায়গা থেকে উঠে আসছে একই ঘটনা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তৃণমূল থেকে নেতা-কর্মীরা দলে দলে যোগ দিচ্ছেন বিরোধী শিবিরে। এবার এই দল বদলের প্রভাব ভোটবাক্সে কতটা পড়ে সেটাই দেখার।