বাংলাদেশ বা পাকিস্তান যদি ভারতের এক ইঞ্চি মাটি নেওয়ারও চেষ্টা করে হাত কেটে নেব : ত্বহা সিদ্দিকি

news bazar24: শুধু বাংলাদেশ নয়, যে কোনো দেশ ভারতের দিকে হাত বাড়ালে বা আঙুল তুললে সেই হাত বা আঙুল কেটে দেওয়া হবে হুঁশিয়ারি দিলেন হুগলির ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী । পাকিস্তান ও বাংলাদেশ যদি মনে করে তাদের হাত মেলানোর পর আমাদের দেশকে চমকে দেবে, তাহলে সেই দিন চলে গেছে। আমি এটাই চাই, উভয় দেশের সংখ্যালঘু ও সংখ্যাগরিষ্ঠরা শান্তিতে ও সুখে বসবাস করুক।

কিছু অসাধু রাজনৈতিক নেতা আমাদের সুখ, শান্তি ও ঐক্য নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সেই চেষ্টা ব্যর্থ হবে। যারা দুই দেশের মধ্যে উসকানিমূলক মন্তব্য করছে তারা কখনো দেশের মঙ্গল চায় না। যারা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে তাদের আমরা পাত্তা দিই না। আমরা দেশ ও বাংলার সরকারের দিকে তাকিয়ে আছি। বাংলার মানুষের জন্য একটাই বার্তা, আসুন আগে ধর্মের পরিচয় না দেখে অসাধু রাজনৈতিক নেতাদের পাল্লায় না পড়ে ভাই-ভাইয়ের সম্পর্ক ধরে রাখি , এটাই দেশ ও বাংলার মানুষের কাছে আবেদন।

প্রশ্ন উঠতেই পারে কেন ত্বহা হঠাৎ এসব বলল ? হঠাৎ করে বলেননি। একটা দৃষ্টিকোণ আছে। কয়েকদিন আগের ঘটনা। বাংলাদেশে ভারত বিরোধী সুরের মধ্যে ভয়ানক হুমকি শোনা গেল। ঢাকার মিছিল থেকে কলকাতা দখলের ডাক ওঠে। শুধু ডাক নয়, চারদিনের মধ্যে কলকাতা দখলের হুমকিও দেওয়া হয়েছিল ওই মিছিল থেকে। এই ডাক দিয়েছেন একজন সাবেক বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তা। ঢাকায় রাওয়া কমপ্লেক্সের নিচে এক সমাবেশ করেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশি সামরিক সদস্যরা। সেই মিছিল থেকে সেই অদ্ভুত মন্তব্য করা হয়।

এই কথা শুনে কেউ হেসে উঠলেন, কেউ বিরক্ত হলেন, কেউ এই ইস্যুতে সময় নষ্ট না করে অন্য বিষয়ে মনোযোগ দিলেন, আবার কেউ কেউ মনের শান্তি নষ্ট না করে বিষয়টিকে পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিলেন। তবে কোনো কোনো মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অনেকেই বাংলাদেশের প্রতি ভয়ানক ক্ষুব্ধ হন সেদিন থেকে ।

ঠিক কী বলেছিলেন সেদিন সাবেক বাংলাদেশি সেনা কর্মকর্তারা ? সেই মিছিল থেকে ওই সেনা অফিসার বললেন, আমরা ৪ দিনের মধ্যে কলকাতা দখল করব। আমাদের সেনাবাহিনী ছাত্র ও জনসাধারণের সাথে আছে। আমাদের 5,000 সদস্যের অর্ধেকই নবীন। এর মধ্যে আড়াই হাজার যুদ্ধক্ষেত্রে যেতে পারে। যদি 3 মিলিয়ন শিক্ষার্থী আমাদের সাথে যোগ দেয়, তবে ভারতকে ছেড়ে দিন, এমনকি আমেরিকাও আমাদের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।

কেন হঠাৎ এসব কথা বলেছিলেন সাবেক সেনাপ্রধান? বিভিন্ন ইস্যুতে ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশিদের ক্ষোভ বাড়ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের। এর ওপরে দেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, ইসকন সন্ন্যাসীদের গ্রেপ্তারসহ বেশ কিছু সমস্যায় বাংলাদেশ। এমতাবস্থায় বাংলাদেশিদের ভারতবিরোধী হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধানের মন্তব্য প্রসঙ্গে সাবেক ব্রিগেডিয়ার প্রবীর সান্যাল তাৎক্ষণিকভাবে বলেন, আশ্চর্যের বিষয়, একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কীভাবে এমন অশোভন কথা বলতে পারেন! বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষমতার হিসাব করলেই তা বোঝা যাবে। ভারতের সামরিক শক্তি বিশ্বে পাঁচ নম্বরে। বাংলাদেশ হতে পারে ৩৭ নম্বরে। বাংলাদেশ ভালোই বোঝে আমরা কী করতে পারি।

তবে প্রতিবাদের সুর উঠেছে শুধু হুগলি থেকে নয়, পশ্চিমবঙ্গের আরও দুটি জেলা থেকেও। আজ বুধবার সেই সুর শোনা গেল। মালদা ও মুর্শিদাবাদ থেকে। বাংলাদেশের হুমকি প্রসঙ্গে মালদা জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি টিঙ্কু রহমান বিশ্বাস বুধবার বলেছেন, “15 মিনিটের জন্য সীমান্ত খুলে দিলে বাংলার সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশের দখল নেবে!”

এদিকে একই সুর শোনা গেল মুর্শিদাবাদেও। বুধবার মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির বাংলাদেশ নিয়ে কড়া মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, “প্রয়োজন হলে আমরা মাঠে নামব এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যোগ্য জবাব দেব। বাংলাদেশের মোকাবিলা করা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। আমরা, মুর্শিদাবাদের ৪৫ লক্ষ মুর্শিদাবাদবাসীই যোগ্য জবাব দেব।