চীনা রসুন উদ্ধারে টাস্কফোর্সের হানা ! খেলেই হবে ক্যান্সার , কিভাবে চিনবেন এই রসুন ?

newsbazar24 ঃ বাজারে গিয়ে রসুন কিনছেন, খুঁজছেন কোথায় কম দামে পাওয়া যাবে। কিন্তু, কখনো ভেবেছেন, আপনি বাজার থেকে কোন রসুন কিনছেন? ভাবছেন, এ আবার কোন রসুন ? রসুন মানেই রসুন। বাজার থেকে রসুন কিনে আনো , মাঝ মাংসের ঝোলে দাও । কিন্তু, আপনি কি নিশ্চিত বাজার থেকে যে রসুন কিনেছেন তা আপনার শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর ?

আপনি বাজার থেকে যে রসুন কিনেছেন, সেটার বেশিরভাগই হয়ত চাইনিজ রসুন ! আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনা রসুন শরীরের জন্য
মারাত্বক ক্ষতিকর। সে কারণেই ভারতে চীনা রসুন নিষিদ্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তারপরও বাজারে লুকিয়ে চীনা রসুন বিক্রি হচ্ছে কি না ,সেই বিষয়ে নিশ্চিত নয় প্রশাসন ! আর সেই কারনেই তা খতিয়ে দেখতে টাস্কফোর্সের সদস্যরা বাজার পরিদর্শন করছেন।

চাইনিজ রসুন-

মূলত চীনে যে রসুন চাষ করা হয় তাকে চীনা রসুন বলা হয়। এই রসুন বিশ্বের অনেক দেশই আমদানি করে। কিন্তু, চীনা রসুন নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চীনা কৃষকরা এই রসুন চাষে অতিরিক্ত পরিমাণে রাসায়নিক ব্যবহার করে। ফলে এই রসুন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ক্যান্সারের মতো রোগ হতে পারে। ভারতীয় রসুন চাষে খুব কম সার এবং রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনা রসুনে ছত্রাক প্রতিরোধে মিথাইল ব্রোমাইড ব্যবহার করা হয়। পোকামাকড় মারার জন্য রসুনে ক্ষতিকর ক্লোরিন ব্যবহার করা হয়। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনা রসুন থেকে নিয়মিত মিথাইল ব্রোমাইড গ্রহণ করলে লিভার-কিডনির ক্ষতি হতে পারে।

চাইনিজ রসুন কিভাবে চিনবেন-?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনা রসুন সাদা বা গোলাপি রঙের হয়। ভারতীয় রসুন সামান্য হলুদাভ। ভারতীয় রসুনের দানা সরু। চীনা দানা মোটা । চাইনিজ রসুনের চামড়া একটু মোটা। আর ভারতীয় রসুনের চামড়া পাতলা।

কলকাতা টাস্কফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোল চীনা রসুন সম্পর্কে বিক্রেতা ও ক্রেতাদের সতর্ক করতে বেশ কয়েকটি বাজার পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার চীনা রসুন নিষিদ্ধ করার পর মুখ্য সচিবের নির্দেশে আমরা বাজার পরিদর্শন করছি। আপাতত ভিআইপি বাজার, ইয়াদুবাবু বাজার, লেক মার্কেট, ল্যান্সডাউন মার্কেট পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে ইয়াদুবাবুর বাজার, লেক মার্কেটে চীনা রসুন পাওয়া গেছে। আমরা এ বিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে কথা বলেছি।”

রবীন্দ্রনাথ কোলে আরও বলেন, “সাধারণ উপভোক্তারা সতর্ক থাকলেও হোটেল ও রেস্তোরাঁয় প্রায়ই চাইনিজ রসুন ব্যবহার করা হয়। এখন দেখতে হবে কে বাজারে চাইনিজ রসুন আনছে। পোস্ট মার্কেটে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যেখানে পাইকারি বাজার আছে, সেখানে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।”

ব্যবসায়ীরা বলছেন, খুচরা বাজারে ভারতীয় রসুনের দাম কেজি প্রতি ৩২০ টাকা। সেখানে চীনা রসুনের দাম প্রতি কেজি ২০০ টাকা। দাম কম হওয়ায় অনেকেই চাইনিজ রসুন কিনে বিক্রি করেন । কিন্তু, বেশিরভাগ মানুষ এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানেন না।

অভিযোগ উঠেছে, শিয়ালদার কোলের বাজার থেকে খুচরা বিক্রেতারা চীনা রসুন কেনেন। কিন্তু, শিয়ালদা কোল বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা আর চীনা রসুন বিক্রি করেন না।

কোল বাজারের আরেক ব্যবসায়ী রাজু সরকার বলেন, “বাজারে এখন আর চীনা রসুন বিক্রি হয় না। তবে বাজারের বাইরে বিক্রি হয় কি না তা বলতে পারছি না৷”

বিভিন্ন বাজারের ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশির ভাগই ক্রেতাই চায়নিজ রসুন সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তারা দোকানদারের কাছ থেকে রসুন কেনে। অনেকেরই ধারণা নেই কোনটি চাইনিজ রসুন আর কোনটি ভারতীয় রসুন। চীনা রসুনের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে জানার পর একজন গ্রাহক বলেন, “এটা সত্যিই উদ্বেগজনক। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।”

প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারত নিষিদ্ধ করার পর চীনা রসুন নেপাল ও বাংলাদেশ হয়ে ভারতে প্রবেশ করছে। ফলে ভারতের বাজারে তুলনামূলক কম দামে চীনা রসুন পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সেই রসুন খেলে শরীরে বিষ ঢুকে চলেছে । বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। তবেই ভারতীয় বাজার থেকে চীনা রসুন আক্ষরিক অর্থেই নিষিদ্ধ করতে হবে ।