একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে লড়াই করা বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি কবি রফিক আজাদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল স্বৈরাচারী ইউনূসের সরকার

Newsbazar24 :স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে লড়াই করা বাংলা সাহিত্যের কিংবদন্তি কবি রফিক আজাদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল স্বৈরাচারী ইউনূসের সরকার।
খবর প্রকাশ্যে আসতেই বাংলাদেশের সাহিত্যিকদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলেছেন মুক্তিযুদ্ধের কবি হওয়ার জন্যই কী তালিবানি ইউনূসের রোষানলে পড়তে হল এপার বাংলার অন্যতম জনপ্রিয়
কবিকে। ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের সময় তাঁর লেখা, ‘ভাত দে হারামজাদা, তা না হলে মানচিত্র খাবো’র মতো রণহুঙ্কার।
সাহিত্য আর মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য একাধিক রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও পেয়েছিলেন। তার বাড়ি ভেঙে দেওয়া প্রসঙ্গে, ইউনূসের দোসর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রকের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান জানিয়েছেন, ‘নতুন বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধাদের বিশেষ খাতির করা হবে না। বরং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারীদের গুরুত্ব দেওয়া হবে। এটাই তদারকি সরকারের সিদ্ধান্ত। তাছাড়া রফিক আজাদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের অনুসারী ছিলেন। শেখ মুজিবের বাড়ি যেখানে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেখানে দুই পয়সার কবি রফিক আজাদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ নয়।’বাংলাদেশী সাহিত্যিকদের একাংশের প্রশ্ন ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ যদি স্বাধীন না হতো তাহলে আজকের এই তথাকথিত নতুন স্বাধীনতা কি দেখতে পেত
এই স্বৈরাচারী শাসকেরা। জানা গেছে,
রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডির ১ নম্বর সড়কের ১৩৯/৪এ ঠিকানার বাড়িটিতে দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে বসবাস করেছিলেন কবি রফিক আজাদ। ১৯৮৮ সালে একতলা এই বাড়িটি রফিক আজাদের স্ত্রী কবি দিলারা হাফিজের নামে সাময়িকভাবে বরাদ্দ করে ‘এস্টেট অফিস’। শিক্ষা ক্যাডারের একজন প্রভাষক হিসেবে বাড়িটির বরাদ্দ পেয়েছিলেন। সর্বশেষ সরকারি তিতুমীর কলেজে ৪ বছর অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন শেষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডর চেয়ারম্যান হিসেবে চাকরি জীবন থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। এই বাড়িতে বসেই রফিক আজাদ ২০টির বেশি অমর কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছিলেন। ২০১৬ সালে প্রয়াত হন কবি। তার আগেই রফিক আজাদকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চক্রান্ত শুরু হয়। আচমকাই এক রহস্যময় ব্যক্তি সৈয়দ নেহাল আহাদ বাড়িটি নিজের বলে দাবি করেন। ২০১২ সালে নিজের মালিকানার পক্ষে আদালতের রায় জোগাড় করে নেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে রফিক আজাদের স্ত্রী দিলারা হাফিজ সৈয়দ নেহাল, হাউজিং অ্যান্ড পাবলিক ওয়ার্কস এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রককে বিবাদী করে মামলা করেন। আদালত বাড়িটির ওপর স্থিতাবস্থা দেন। পরের বছর এই স্থিতাবস্থা স্থায়ী করা হয়।
প্রয়াত রফিক আজাদের স্মৃতি স্মারকশালা গড়ার জন্য বাড়িটি বরাদ্দের অনুরোধ জানিয়ে গত মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রকের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মন্ত্রকের সচিব ও সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিবকে চিঠি দেন দিলারা হাফিজ। আর সেই চিঠির পরেই বুধবার বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার জন্য আসরে নামে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রক। বুলডোজার দিয়ে বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। কবি রফিক আজাদের অমর সৃষ্টি ‘ভাত দে হারামজাাদা,তা না হলে মানচিত্র খাবো