অসম ও বাংলায় মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে সংখ্যালঘু নীতিতে কি বদল আনতে চলেছে গেরুয়া শিবির?

news bazar24: অসমে হিন্দু জনসংখ্যার তুলনায় সংখ্যালঘু জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার কারণ, বাংলাদেশ থেকে প্রচুর মুসলিম উত্তর পূর্ব ভারতের গুরুত্বপূর্ণ এই রাজ্যে এসে বসবাস করতে শুরু করেছে। তাঁরা জাল নথিপত্র বানিয়ে এখানে এসে বসবাস করতে শুরু করেছে। সরকারি পরিসংখ্যানেই এই তথ্য মিলেছে। অসমে মুসলিম জনসংখ্যা এখন ৪০ শতাংশ। ১৯৫১ সালে অসমের মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ ছিল মুসলিম। সেটা বাড়তে বাড়তে এখন ৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর এই চমকে দেওয়া তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই বাংলা থেকে অসম। সংখ্যালঘু ইস্যুতে বাঙালি অধ্যুষিত রাজ্য গুলির বিজেপির নেতা মন্ত্রীদের একের পর বিতর্কিত মন্তব্যে জলঘোলা হয়েছে জাতীয় রাজনীতি।
তাহলে কি এবার সংখ্যালঘু নীতিতে বদল আনতে চলেছে গেরুয়া শিবির? নাকি ফের এনআরসি নিয়ে নতুন কোনও পদক্ষেপ নিতে চাইছে বিজেপি। এই নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি না হলে একই সময়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা এবং বাংলার বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী কেন একই বিষয়ে উত্তেজক মন্তব্য করলেন ? শুভেন্দু অধিকারীর ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ বন্ধ করো, মন্তব্যের পর অসমের অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে হিমন্তের সংখ্যালঘু মন্তব্যে একটি বিতর্কই মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বার বার।

সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, ‘সংখ্যালঘু অনুপ্রবেশে বদলে যাচ্ছে জনবিন্যাস, এটা বড় সমস্যা। আমার জন্য খুব বড় ইস্যু। এখন অসমে মুসলিম জনসংখ্যা ৪০ শতাংশ। ১৯৫১ সালে অসমের মোট জনসংখ্যার ১২ শতাংশ ছিল মুসলিম। সেটা বাড়তে বাড়তে এখন ৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বহু জেলা আমাদের হাতছাড়া হয়েছে। এটা আমার জন্য রাজনৈতিক ইস্যু নয়। এটা জীবন-মৃত্যুর ব্যাপার।’

যদিও বাংলায় অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে জবাব দিতে গিয়ে তৃণমূল বার বার সীমান্তের প্রহরায় থাকা বিএফএফ-এর ওপর দায় চাপিয়েছেন। বিজেপির আক্রমণের জবাব দিতে গিয়ে রাজ্যের শাসকদলের পাল্টা প্রশ্ন, সীমান্তে তারা দায়িত্বে থাকতে কিভাবে রাজ্যে অনুপ্রবেশ হচ্ছে? এই প্রসঙ্গে হিমন্ত বলেন, ‘অনুপ্রবেশকারীরা প্রথমে অসম, পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে। এরপর অনুপ্রবেশকারীরা ঝাড়খণ্ড, বিহারে যায়। আন্তর্জাতিক সীমান্তে অনুপ্রবেশ আটকানোর দায়িত্ব বিএসএফের। কিন্তু একবার সীমান্ত পেরিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলে, দায়িত্ব রাজ্যের। সেক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে আটকানোর দায়িত্ব রাজ্যের। একটা নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষ সারা ভারত জুড়ে যেভাবে অপরাধমূলক কার্যকলাপ চালাচ্ছে, সেটা যথেষ্ট উদ্বেগের।’

এদিকে মুসলমানদের পাশে বিজেপি রয়েছে বলে সাংবাদিক সম্মেলন করেন শমীক ভট্টাচার্য। তবে তিনিও সরাসরি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। এবিষয়ে বিজেপির লড়াইয়ের প্রসঙ্গও তুলে ধরেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁর বক্তব্য, ‘চুপিসারে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে যাঁরা ভারত দখলের ছক কষছেন, আমরা তাঁদের বিরুদ্ধে। এটা আমাদের ঘোষিত নীতি।’ অনুপ্রবেশ খালি আসাম বা পশ্চিম বঙ্গের সমস্যা নয়। অনুপ্রবেশ ভারতের জাতীয় সমস্যা।