প্রয়োজনে দেহ ব্যবসা করেও সংসার চালাতে হয়েছে – আদালতে স্বীকারোক্তি এক বিখ্যাত নায়িকার 

Newsbazar24:

সেই নায়িকার নাম শুনলে হয়তো আমরা সকলেই স্তম্ভিত হয়ে যাবো। কিন্তু বলি পাড়ায় আলোর পিছনে এমন অনেক অন্ধকার আছে। মায়ানগর মুম্বই! বলিউডের রুপোলি পর্দার হাতছানি! নায়ক-নায়িকাদের গ্ল্যামারে মোড়া জীবনের ঝলকানি! নাম-টাকা-যশ-প্রতিপত্তি! কোটি-কোটি ফ্যান ফলোয়ার, পাপারাৎজিদের ক্যামেরার ফ্ল্যাশ…তারকাদের ঝলমলে জীবনের আগাগোড়াই কি ঝলমলে? না কি এর নেপথ্যে থাকে কোনও অন্ধকার সত্যি?যেমনটা হয়েছিল বলিউডের এক প্রথম সারির নায়িকার ক্ষেত্রে! একটা ভুলেই শেষ হয়ে যায় তাঁর ঈর্শণীয় কেরিয়ার।

তখন নায়িকা কেরিয়ারের তুঙ্গে, আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে, ভরা আদালতে, বিচারপতির সামনে বলেছিলেন, ”দেহ ব্যবসা করে টাকা রোজগার করেছি।” কোন নায়িকার কথা বলা হচ্ছে জানেন? কথা হচ্ছে বলিউডের জনপ্রিয় নায়িকা মালা সিনহার! বাঙালি নেপালি পরিবারে জন্ম তাঁর। ছোটবেলায় নাম ছিল ‘আলডা’। কিন্তু সেই নাম পছন্দ ছিল না তাঁর, বন্ধুরা ‘ডালডা’ বলে ঠাট্টা করত। তাই ‘আলডা’ নাম বদলে ‘বেবি নাজমা’ হয়ে বলিউডে শিশুশিল্পী হয়ে আত্মপ্রকাশ করেন নেপাল থেকে আসা একরত্তি। পরে ফের নাম পরিবর্তন করেন। ‘নাজমা’ হয়ে ওঠে ‘মালা’। মালার বাবা অ্যালবার্ট সিনহা ছিলেন নেপালের বাসিন্দা। তবে মেয়ের জন্মের আগেই তিনি নেপাল থেকে কলকাতা চলে এসেছিলেন। ছোট থেকেই মালা নাচ-গান-অভিনয়ে পারদর্শী ছিলেন। শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছেন ‘জয় বৈষ্ণো দেবী’, ‘শ্রীকৃষ্ণলীলা’, ‘যোগবিয়োগ’, ‘ঢুলি’-র মতো ছবিতে। বাংলা ছবিতে বেশিদিন অভিনয় করেননি মালা। কেরিয়ারের শুরুতেই পাড়ি দেন মুম্বই। প্রথম হিন্দি ছবি ‘বাদশা’। ১৯৫৬ সালে মুক্তি পায় গুরু দত্তের ‘প্যায়াসা’। ইন্ডাস্ট্রিতে মাইলফলক এই ছবি ছিল মালার কেরিয়ারেরও টার্নিং পয়েন্ট। পাঁচ ও ছয়ের দশকে তিনি ছিলেন অন্যতম ধনী নায়িকা। পারিশ্রমিকের দিক থেকেও বহু তারকাকে ছাপিয়ে গিয়েছিলেন মালা সিনহা। কিন্তু কেরিয়ারের তুঙ্গেই একটা বড় ভুল করলেন তিনি। ১৯৭৮ সালে তাঁর বাড়িতে ইনকাম ট্যক্সের রেইড হয়। মালা সিনহার বাথরুমের দেওয়াল থেকে উদ্ধার হয় ১২ লাখ টাকা। বলিউড সূত্রে খবর, মালা সিনহা আইটি আধিকারিকদের বলেছিলেন, টাকাটা তাঁর বাবা বাথরুমের দেওয়ালের ভিতর লুকিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু আদালতে বিচারকের সামনে তিনি বলেন, টাকাটা তিনি দেহ ব্যবসা করে রোজগার করেছেন। এই স্বীকারোক্তির পর মালা সিনহা বাজেয়াপ্ত হওয়া ১২ লাখ টাকা ফেরত পেয়ে গিয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু এই একটা ভুলেই তাঁর কেরিয়ার শেষ হয়ে যায়।