ইউনুস সরকারের আমলে ঔষধের দাম অগ্নি মূল্য, জনসাধারণের মধ্যে চাপা ক্ষোভ

Newsbazar24 অন্তবর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশে ওষুধের দাম প্রায়ই বেড়েই চলেছে। গত কয়েক মাসেও ওষুধের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৯০ শতাংশ। স্বল্প আয়ের মানুষের বাড়তি মূল্যে ওষুধ কিনতে হিমশিম অবস্থা। ওষুধের দামের এই লাগামহীনতার জন্য উৎপাদক ও সবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অনৈতিক বিপণন চর্চা বা প্রোমোশনাল মার্কেটিং কার্যক্রমকে দুষছেন ক্রেতারা।
তারা বলছেন, প্রোমোশনাল মার্কেটিংয়ের নামে ডাক্তারদের উপহার বা উৎকোচ দেয় কোম্পানিগুলো, যা কেটে নেওয়া হয় তাদের পকেট থেকে। রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে বেঁচে থাকার অন্যতম প্রধান উপাদান ওষুধ। রোগ নিরাময়ের মাধ্যম হিসেবে ওষুধের কোনো বিকল্প নেই।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের মানুষের মোট চিকিৎসা ব্যয়ের ৬৫ শতাংশ শুধু ওষুধের জন্য ব্যয় হয়। অর্থাৎ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা খাতে মোট ১০০ টাকা খরচ করলে তার মধ্যে ৬৫ টাকা খরচ হয় ওষুধ কিনতে। এ থেকেই বোঝা যায়, বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ওষুধের ওপর কতোটা নির্ভরশীল। বাংলাদেশে গ্যাস্ট্রিক তথা অ্যাসিডিটির সমস্যা নেই, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। এছাড়া বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক প্রতি পাঁচজনে একজন ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। রাজধানী ঢাকার এক ফার্মেসির মালিক জানান, বাংলাদেশের বাজারে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় বিভিন্ন ধরনের গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ। এরপরের বিক্রির তালিকায় রয়েছে যথাক্রমে প্রেসার এবং ডায়াবেটিসের ওষুধ। গ্যাস্ট্রিকের ওষুধের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় সারজেল, প্যানটোনিক্স এবং ম্যাক্সপ্রো। এছাড়া প্যারাসিটামল গ্রুপের নাপাও রয়েছে সর্বোচ্চ বিক্রিত ওষুধের তালিকায়।
ঢাকা ফার্মেস সূত্রে জানা যায়, কয়েক মাসে বাংলাদেশে ওষুধের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ থেকে ৯০ শতাংশ। ওষুধের দাম বৃদ্ধির ফলে জনসাধারণের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ওষুধের মূল্য নির্ধারণে বাংলাদেশ সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় অসহনীয় পর্যায়ে দাম বাড়ছে। ঢাকার এক প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক অধ্যাপক জানান, বাংলাদেশে ওষুধের দাম বাড়ার অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, ওষুধ কোম্পানি ও চিকিৎসকদের মধ্যে চলা অনৈতিক বিপণন চর্চা। প্রোমোশনাল মার্কেটিংয়ের নামে ডাক্তারদের দেওয়া উৎকোচ বা উপহার কোনো কোম্পানিই নিজেদের পকেট থেকে দেয় না। ওষুধের দাম বাড়িয়ে সেই টাকা ক্রেতাদের কাছ থেকেই আদায় করে। ওষুধের অনৈতিক বিপণন চর্চা বন্ধ করা গেলে বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে ওষুধের দাম অনেকটাই কমানো সম্ভব এবং কোম্পানির মার্কেটিং খরচ ১০ শতাংশে নামিয়া আনা সম্ভব। এছাড়াও বাংলাদেশ সরকার পশুদের থেকে ভ্যাট সংগ্রহ করে ১৫%। এইগুলো যদি কমানো যায় তাহলে ওষুধের দাম অনেকটাই কমবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের।