Saturday , 22 June 2019 |
  1. Delete-31-10-24
  2. উপাসনা এবং ধর্ম
  3. কলকাতা
  4. কৃষি ও ফুল বাগান
  5. খেলা
  6. গ্রহ শান্তি
  7. চলো যাই
  8. জানা অজানা
  9. দেশ
  10. পড়াশোনা
  11. পথ চলতি
  12. পেশা প্রস্তুতি
  13. প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান
  14. ফ্যাশান
  15. বিজ্ঞাপন

পশু হত্যা ও মাংস ভক্ষণ নিয়ে বেদে যা বলা হয়েছে। ?

প্রতিবেদক
Sankar Chakraboty,Admin
June 22, 2019 2:03 am

রুপকথা দাসঃ      যজুর্বেদ এর ১৩ নং অধ্যায়ের ৪৯ নং মন্ত্রের অর্থ দেখিয়ে অনেকে বলতে/বুঝাতে চায় যে, বেদে পশু হত্যার বিধান আছে। কিন্তু তারা বুঝতে চাই না কোন অর্থে বেদে পশু হত্যার কথা বলা হয়েছে। আজ সেই মন্ত্রের অর্থ নিয়ে নিম্নে আলোচনা করা হলঃ
.
“দয়া কে প্রাপ্ত পরোপকারী রাজন! তুমি মনুষ্যাদি প্রাণীর জন্য এই অসংখ্য সুখের সাধন, অসংখ্য দুধের ধারার নিমিত্ত ও অনেক প্রকার পালন যোগ্য কুপের সমান রক্ষাকারী, বীর্যসেচক ষাড় এবং ঘৃতের পূর্নকারী হত্যার অযোগ্য গাভীকে মেরো না এবং তোমার রাজ্যে স্থিত নীল গাই দ্বারা ক্ষেতের যে ক্ষতি হয় তাকে উপদেশ করছি। তাকে হত্যার দ্বারা সুরক্ষিত অন্ন দ্বারা উৎকৃষ্ট সর্বব্যাপক পরমাত্মা এবং বিস্তৃত ব্যাপক আকাশের মধ্যে বুদ্ধিকে প্রাপ্ত তুমি শরীরের মধ্যে নিবাস করো। তোমার শোক সেই নীল গাইকে প্রাপ্ত হোক এবং তোমার শত্রু যে আমাদের দ্বেষ করে তাদেরও প্রাপ্ত হোক।”
# যজুর্বেদ ১৩/৪৯.
.
পশু হত্যা করতে এই মন্ত্রে নিষেধ করা হয়েছে, কিন্তু বন্যপশুকে তখন হত্যা করতে বলা হয়েছে যখন সেই পশু আমাদের ক্ষতির কারণ হবে। উদ্ভিবজ্জ খাবারের জন্য বেদে ক্ষতিকর প্রাণী হত্যা করার কথা বলা হয়েছে, কিন্তু সেই প্রাণীকে ভক্ষণের আদেশ বা নির্দেশ এই মন্ত্রে দেওয়া হয় নি। বরংচ বুদ্ধি প্রাপ্তির জন্য অন্ন/ফসলকেই এখানে উৎকৃষ্টরূপে বর্ণনা করা হয়েছে। আর এই সকল ক্ষেত্র পশু হত্যা হিংসা নয়, ফসল রক্ষার্থে/আত্মরক্ষার্থে পশু হত্যা এটা অহিংস কর্মই।
.
মহর্ষি মনু মহারাজ এই ব্যাপারে মনুসংহিহায় বলেছেন,
.
” এই জগতে বেদ বিহিত যে পশু হত্যা নিয়ত আছে, তাকে  অহিংসা বলেই জানবে। কারণ, বেদে এই রকম বলা হয়েছে, বেদ থেকেই ধর্মের প্রকাশ হয়। (অর্থাৎ ধর্ম ও অধর্মের যে কথা তা একমাত্র বেদ থেকেই নিরূপিত হয়। আর সেই বেদই জানাচ্ছে যে, কোন কোন ক্ষেত্রে পশুহিংসা অভ্যুদয়ের কারণ হয়)।। 
মনুঃ ৫/৪৪.
.
“যে লোক নিজের সুখের জন্য হিংসাদিরহিত হরিণ প্রভৃতি (নিরীহ) পশুকে হত্যা করে, সে জীবিত অবস্থায় বা মৃত্যুর পরে অর্থাৎ কোনও অবস্থাতেই সুখলাভ করে না।” 
মনুঃ ৫/৪৫.
.
“যে ব্যক্তি কোন জীবের প্রতি হিংসা পোষণ করে না, সে যা কিছু ধর্মের অনুষ্ঠান করে, এবং সে যে পরমার্থতত্ত্বের অনুসন্ধানে মনোনিবেশ করে, সে সবই অনায়াসে লাভ করে থাকে।।” 
মনুঃ ৫/৪৭.
.
“প্রাণী হিংসা না করলে মাংস উৎপন্ন হয় না, কিন্তু প্রাণী বধ স্বর্গজনক নয় (অর্থাৎ দুঃখের কারণ)। অতএব অবিহিত মাংস ত্যাগ কর।”
মনুঃ ৫/৪৮.
.
“মাংস উৎপত্তির কথা বিবেচনা করে এবং মাংস লাভ করতে গেলে কিভাবে প্রাণীগণকে বধ ও বন্ধন করতে হয়- সেই সব পর্যালোচনা করে সাধু ব্যক্তিরা বিহিত মাংসের ভোজন থেকেও নিবৃত হন, অবৈধ মাংসের তো কথাই নেই।” 
মনুঃ৫/৪৯.
.
“যিনি শাস্ত্রের বিধান ত্যাগ করে পিশাচের মতো মাংস ভক্ষণ করেন না, তিনি জন সমাজে প্রীতির পাত্র হন এবং কোনও ব্যাধিও তাকে পীড়া দেয় না ।” 
মনুঃ ৫/৫০
.
এখন  ঘাতক কারা? মনু মহারাজ তাই বলছেন-
.
“১.যিনি পশুবধ করতে অনুমতি দেন,
২.যিনি অস্ত্রাদির দ্বারা পশুর অঙ্গপতঙ্গ খন্ড খন্ড করেন,
৩.যিনি পশু বধ করেন,
৪.যিনি সেই প্রাণীর মাংস ক্রয় করেন,
৫.যিনি তা বিক্রয় করেন,
৬.যিনি মাংস পাক করেন,
৭.যিনি পরিবেশন করেন এবং
৮.যিনি মাংস ভক্ষণ করেন-
তাহারা সকলেই সেই পশুর ঘাতক রূপে অভিহিত হন।” 
মনুঃ ৫/৫১.
.
“যে লোক পিতৃলোক ও দেব লোকের অর্চনা না করে অন্য প্রাণীর মাংসের দ্বারা নিজ দেহের মাংস বৃদ্ধি করতে ইচ্ছা করে, জগতে তার তুলনায় অপূণ্যকারী আর কেউ নেই।”
মনুঃ ৫/৫২.
.
“যে লোক একশত বৎসরকাল প্রত্যেক বৎসরে অশ্বমেধ যজ্ঞ করে এবং যে লোক যাবজ্জীবন মাংস ভক্ষণ করে না, তাদের দুজনেরই স্বর্গাদি পূণ্যফল(সুখের ফল) সমান হয়।” 
মনুঃ ৫/৫৩.
.
“আমরা  ইহলোকে যার মাংস ভোজন করছি, পরলোকে ‘ মাং অর্থাৎ আমাকে, সঃ অর্থাৎ সে ভক্ষণ করবে ‘ । মনীষিগণ মাংস শব্দের অর্থ এই রকম প্রতিপন্ন করেছেন।”
মনুঃ ৫/৫৪.

সুতরাং আমরা বলতে পারি শাস্ত্রমতে, আমাদের সনাতন ধর্ম মতে প্রাণী হত্যা এবং প্রাণীর মাংস ভক্ষণ করতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু ক্ষতিকর প্রাণী যা আমাদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াই সেই সব প্রাণীকে হত্যা করা যাবে কিন্তু সেই প্রাণীর মাংস খাওয়া যাবে না।

WhatsApp channel Join Now
Telegram channel Join Now

সর্বশেষ - মালদা