Saturday , 9 October 2021 |
  1. Delete-31-10-24
  2. উপাসনা এবং ধর্ম
  3. কলকাতা
  4. কৃষি ও ফুল বাগান
  5. খেলা
  6. গ্রহ শান্তি
  7. চলো যাই
  8. জানা অজানা
  9. দেশ
  10. পড়াশোনা
  11. পথ চলতি
  12. পেশা প্রস্তুতি
  13. প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান
  14. ফ্যাশান
  15. বিজ্ঞাপন

ফিজির মাটিতে সপ্তমী থেকে বিজয়া দশমী

প্রতিবেদক
Sankar Chakraboty,Admin
October 9, 2021 12:56 pm

শারদোৎসব ফিজির মাটিতে 

                                  ঋতুপর্ণা সাহা

 সালটা ১৪১৪ বঙ্গাব্দের ২ কার্তিক  ইংরেজি এর ২০ অক্টোবর ২০০৭ দিনটি ছিল শনিবার ফিজির মাটিতে প্রথম দুর্গাপুজো সুত্রপাত হয়েছিল । এ বার এই পুজো চোদ্দ বছরে পদার্পণ করছে।

শ্রীরামচন্দ্র আশ্বিন মাসেই মায়ের অকাল বোধন করেন, মায়ের অকাল বোধনের গল্পটি হয়ত অনেকের ই জানা। সীতাকে উদ্ধার করা ও রাবণকে বধ করতে যাওয়ার আগে মা দুর্গার শারনাপন্ন হন । সেই থেকেই এই শরতকালের আশ্বিনে দুর্গাপুজোর প্রচলন।

কী ভাবে ফিজির পুজো শুরু হল? ………… চলুন জেনে নি পুরো গল্পটি

সময়টা ছিল ২০০৭-এর জুন-জুলাই। সাপ্তাহিক পত্রিকাতে নাকি বেরিয়েছে, ‘‘ফিজিতে কুমোরটুলির দুর্গা প্রতিমা রওনা দিল’’। আমি তো ভাবলাম যত সব ভুল্ভাল খবর বের করে খালি লোকজনকে বিভ্রান্তিতে ফেলা ।  তাপর  হঠাত্ই পাঁচ সপ্তাহ পরেই  ভারত সেবাশ্রমের স্বামীজির ফোন এল আমার পাড়ার  পরিচিত এক দাদার কাছে তাঁর নির্দেশ, ‘‘জরুরি কথা আছে জানিয়ে সন্ধ্যায় আশ্রমে ডেকে নেন তাকে’’ ।

অসম্ভব চমক গেলেন সেই সন্ধেতে আশ্রমে গিয়ে দেখতে পেলেন দুর্গা প্রতিমা এক চালচিত্রের ভিতরেই তাঁর চার পুত্র-কন্যাকে নিয়ে হাজির।, আনন্দে গর্বে বুক টা যেন ভরে উঠেথেছিল। এক চালচিত্রের মধ্যে তার চার পুত্রকন্যা-সহ এই সুন্দর দুর্গা প্রতিমার স্রষ্টা ছিলেন কুমোরটুলির শিল্পী শ্রী অমরকুমার ঘোষ মহাশয়।অসাধারণ ওনার কর্মসূচী । সেই সময় আশ্রমে স্বামীজি বেশ কিছু গুজরাতি পরিবারকে নিয়ে আলোচনা করছিলেন নবরাত্রির পুজো ও অনুষ্ঠান নিয়ে । উনি অর্থাৎ রমেন বাবু গিয়ে বসতেই তিনি সকলের অনুমতি নিয়ে  দুর্গাপুজোর ভার দিয়ে দিলেন তাকেই।রমেন বাবু   এই প্রস্তাবে যতটা খুশি তার চেয়ে অনেক বেশি চিন্তিত, কারণ ?, স্বামীজির উপস্থিতিতে  পুজো করতে হবে তাকে ! ভুল ভ্রান্তি নিয়ে তায় উনি একটু নার্ভাস হয়েছিলেন বৈকি । আর আমাদের দায়িত্ব দিলেন ফিজির যেখানে যত বাঙালি ও অবাঙালি আছেন তাঁদের পুজোর নিমন্ত্রণ জানাতে, তবে উনি নিজে ভারতীয় হাইকমিশনারকে নিমন্ত্রণের ভার নিলেন।  এমনকি মায়ের ভোগের ব্যাপারটা আমাদের উপরই ছেড়ে দিলেন।

সেই সময় লাউতোকায় (ফিজির একটি শহর) আমরা দু’টি বাঙালি পরিবার ছিলাম। আর ও একটি পরিবার যেখানে সদস্য বলতে সঞ্জয়, বেবি ও তাদের পুত্র অনুভব। আমরা দুই পরিবার মিলে খুব উত্সাহের সঙ্গে কাজ শুরু করে দিলাম।  নিমন্ত্রণ করা থেকে শুরু করে, তালিকা বানিয়ে পুজোর বাজার করা সবটা । এত বড় আয়োজন সময় টা তো বেশি লাগবেই  তার মধ্যে আবার আমাদের অফিস দিনেরবেলায়। ওই বিকেলের ফ্রি সময় টা তায় এই কাজের জন্য বরাদ্দ করেছিলাম ।সে সময়  ফিজির রাজধানী সুভা-তে     মোটে চার-পাঁচটি বাঙালি পরিবার ছিল। এ ছাড়া অন্যান্য শহর থেকেও কিছু অবাঙালিকে নিমন্ত্রণ করা হল। সামিল হয়েছিলেন আশ্রমের বেশ কিছু গুজরাতি পরিবার ও।

অমাবস্যার পরের দিন প্রতিপদ থেকে নবরাত্রি শুরু হয় । ষষ্ঠতম দিন থেকে শুরু হয় মা দুর্গার বোধন। এই আশ্রমে যে হেতু নবরাত্রির অনুষ্ঠান চলছে তাই পাঁচ দিন ধরে পুজো সম্ভব নয়, স্বামীজির পরামর্শে স্থির হল নবমী ও দশমীর দিন (শনি-রবি) পুজো হবে। এ ছাড়াও অন্য অসুবিধে ছিল, দূর দূর থেকে যাঁরা আসবেন তাঁরা অফিসের দিনে তো আসতে পারবেন না। তাই সপ্তাহান্তেই পুজোর অনুষ্ঠান স্থির হল।

স্বামীজি আমাদের সঙ্গে  নিয়ে দুর্গা প্রতিমাকে মা অম্বার সঙ্গে একই আসনে প্রতিষ্ঠিত করলেন।আমরা হয়ত জানি   দুর্গার-আর এক রূপ অম্বা মা । সত্যি এ এক বড় আনন্দের কথা আমাদের জন্য সৌমেন অফিস থেকে ফেরার পর রোজই একবার করে মাকে দর্শনের লোভে আশ্রম ঘুরে আসছে। পুজোর সময় দেশে না থাকার আক্ষেপ আর রইল না। এমনিতেও তখন আশ্রমে মা অম্বার পুজো, আরতির পর গর্বা করার নিয়ম । গরবা এর তালে তালে সবাই মত্ত আর তার মাঝেই আমাদের পুজার সব আলচনা কাজ ভাগাভাগি করে সেরে ফেল্লাম । রান্না করতে  ভালইবাসি , কিন্তু একসঙ্গে ১০০-১৫০ জনের ভোগ রান্না কি মুখের কথা! তাই বেশ টেনশন এই ছিলাম। তবে দায়িত্ব যখন পড়েছে সবটা তো করতেই হবে । আমি আর একজন বন্ধু নিলা একসাথে রান্নার দায়িত্ব টা নিলাম । আমাদের সাহায্য করল নিলার কিছু অবাঙালি বন্ধুও ।এমনকী আশ্রমের গুজরাতি মহিলারাও রান্না ও অন্যান্য কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন।আন্তরিকতায় মুগ্ধ হয়েছিলাম । এত কিছুর পরেও নিজের উপর যেন আস্থা রাখতে পারছি না। সব সময় মনে হচ্ছে সবকিছু ঠিক মতো গুছিয়ে করতে পারব তো! মনে মনে মা কে ডেকেই চলেছি। যদিও রান্নার সব বাবস্থায় আশ্রমে ছিল । সব কেনাকাটা, বাজার করতে শুরু করে দিলাম। আর সন্ধেবেলা এসে প্রতিমা সাজানো, আলোর ব্যবস্থা করতে লাগলাম ,মণ্ডপ সজ্জায় লেগে পড়লাম। স্বামীজি ও স্বয়ং হাসিমুখে সমস্ত কাজে হাত লাগাতেন। ভোগের মেনু ঠিক হল স্বামীজির পরামর্শে । তাতে ছিল লুচি, লম্বা বেগুনভাজা (স্বামীজির আবদারে), আলুরদম, খিচুড়ি, লাবড়া, চাটনি, পায়েস, গোলাপজাম ও নারকেল নাড়ু।

প্রত্যেকটা কাজে আমরা  সাহায্য পেয়েছি  সুভা থেকে আসা পরিবারেরও । অ্যামব্যাসির প্রথম সেক্রেটারি ও তার স্ত্রী, ব্যাঙ্ক অফ বরোদার চিফ বা টোটাল কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রত্যেকেইএগিয়ে এসেছিলেন সামিল হতে এই নতুন উদ্যোগে ।  পুজোর সময় স্থির হল নবমীর দিন সন্ধে ছ’টার মধ্যে। কারণ এর আগে মা অম্বার পুজো, ওই পুজো শেষ হলেই আমাদের পুজো শুরু করা যাবে। তবে স্বামীজির নির্দেশে সে দিনের গর্বা ও ডাণ্ডিয়া নাচ বন্ধ রাখা হল। সুভা থেকে যাঁরা এসেছিলেন তাঁরা সঙ্গে করে ২৫০-৩০০ টি নারকেল নাড়ু তৈরি করে নিয়ে এসেছিলেন। উফ ভাবাই যায় না।

এ দিকে রমেন বাবু সময় মতো পুজো শুরু করে ্দিলেন। মন্ত্রধনিতে মন টা কেমন যেন আকুল হয়ে ওঠে। সমস্ত জোগাড় সম্পূর্ণ করে পুজার সাজে নিজেকে সাজিয়ে তুললাম । নিষ্ঠা ভরে পুজা করছেন রমেনবাবু । তবে মাইকে তো কোনওদিন তাঁর আওয়াজ শুনিনি। ভেতরে গিয়ে দেখি তিল ধারণের জায়গা নেই। দূর দূরান্ত থেকে দুর্গাপুজোর খবর পেয়ে স্থানীয় ভারতীয়রাও এসেছে মায়ের পুজো দেখতে।সবাই অনেক খুশি এবং খানিকটা অবাক ও বটে ফিজির মাটিতে শারদতসব এ সামিল হতে পেরে । এত মানুষের ভিড় অথচ একটুও আওয়াজ নেই শুধু রমেনবাবুর মন্ত্রোচ্চারণ ছাড়া। পুজো শেষে শুরু হল অঞ্জলি, বেবি ও অন্য মহিলারা ফুল দেওয়ার কাজে সাহায্য করল। অতি নিপুন হাতে এই পুজোর মালাও গেঁথেছিল অবাঙালি মহিলারা । পুজো দেখতে হাইকমিশনার মহাশয় সুভা থেকে এসেছিলেন। উপস্থিত ছিলেন নান্দি থেকে  রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামীজিও এই পুজোতে। এমনকি স্বামীজির অনুরোধে ফিজির সেই সময়কার প্রেসিডেন্টও কিছুক্ষণের জন্যে এসেছিলেন। 

মা দুর্গার কবে থেকে আরাধনা হয়ে আসছে তার ইতিহাস এবং পৌরাণিক নানা কাহিনী নিয়ে স্বামীজী বক্তব্য রাখলেন ।তার পর রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামীজি ও পরে হাইকমিশনার মহাশয় তাদের নিজ নিজ বক্তব্য রাখলেন। কিছু অনুষ্ঠান বাচ্চাদের জন্য ও রাখা হয়েছিল ।

অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয়ে যাই ভোগ খাওয়ার পালা । খুব কম সময়ের মধ্যেই প্রায় ১৫০ জনের উপর অতিথিকে তিনটি ‘ব্যাচে’ বসে খাওয়ানো হয়ে যায়।রান্নাও হয়েছিল অসাধারন । এমনকি হাইকমিশনার মহাশয় বাঙালি খিচুড়ি ও লাবড়া এত আনন্দ করে খেলেন, যে বলার নয়।

সকল দর্শনার্থী দের কাছে পুজার তুলনায় যেন ভোগ ই বেশি আকর্ষণীয় ছিল ।সত্যি সকলের এত ভালবাসা দেখে মন টা সত্যি ভরেগেছিল ।  এই ধরনের উপাদেয় ভোগ মনে হয় শুধু বাঙালিদের পুজোতেই হয়। স্বামীজি ও অসম্ভব খুশি আমাদের নিষ্ঠা ভরে কাজ দেখে । তবে একটা বিশেষ কথা বলা ভাল  স্বামীজির পরামর্শে একদিনেই সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পুজো শেষ করেন। স্বামীজি পরের দিন বিজয়া দশমীতে সকলের কে  আমন্ত্রণ জানান। সে দিন ছিল গুজরাতিদের কুমারীপুজো, এই পুজো আমাদের দেশে অষ্টমীর দিন হয় । সে দিন ভারতীয় হাইকমিশনার ও  উপস্থিত ছিলেন । সব শেষে যজ্ঞ এর আয়োজন করা হয়েছিল  স্বামীজি নিজে তার আয়োজন করেন। এর পর মায়ের বিসর্জন পুজো। তার পরে দুপুরের খাওয়া। সেই দিনের রান্নার ভার নিয়েছিলেন গুজরাতি মহিলারা। এর পর সন্ধেবেলায় আমরা ভারতীয় মহিলারা স্বামীজির কাছে বরণ ও সিদুঁর খেলার অনুমতি চাইলাম। স্বামীজি আমাদের বারণ করলেন, কেন না এই মায়ের মূর্তি তো আমরা ফেলতে পারব না। পরের বছরে এই প্রতিমাতেই পুজো হবে। যাই হোক, রাত্রের আরতির পর মা কে ও তার চার পুত্রকন্যাকে প্রণাম করে শুরু হল কোলাকুলি। ছোটরা বড়দের প্রণাম করল আর বড়রা ছোটদের মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদ করলেন। এর পর স্বামীজি, সৌমেন, সঞ্জয় ও আরও কিছু ভদ্রলোকের সাহায্যে মা ও তার চার পুত্রকন্যাকে বাক্সবন্দি করা হল।

সুভা থেকে যাঁরা এসেছিলেন তারা দিনের বেলায়  রওনা দিলেন, কারণ অনেকটা রাস্তা, তার পর পরের দিন সকলের অফিস, বাচ্চাদের স্কুল ইত্যাদি। 

যারা লাউতোকা শহরের তারা স্থির করেছিল প্রত্যেকে একটি দু’টি করে পদ বানিয়ে আমাদের আর এক বন্ধুর বাড়িতে স্বামিজীকে নিয়ে বিজয়া পালন করবে। সেই মতো আমরা ৪-৫ টি পরিবার মিলে স্বামীজিকে নিয়ে আনন্দের সঙ্গে বিজয়া সম্পন্ন করলাম। সমারোহে পালিত হল বিজয়া ।

এই ভাবেই আজ ও পুজা হয়ে আসছে । বছর বছর দুর্গাপুজো এই ভারত সেবাশ্রমেই হয়ে আসছে। এর মধ্যে অনেকেই দেশে ফিরে গেছেন বা বিদেশের অন্য কোথাও বদলি হয়েছেন।

এই ক’বছরের পুজোর সমস্ত কিছু এত সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে হওয়ার একমাত্র কারণ স্বামী সংযুক্তানন্দের অক্লান্ত পরিশ্রম। তিনি নিজে এই পুজো ও নবরাত্রির সমস্ত কিছু পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। আমরা তো ছিলামই, কিন্তু প্রয়োজনে তিনি নিজে পুজোর কাজে হাত লাগিয়েছেন হাসিমুখে। নবরাত্রি এর সাথে শারদতসব এইভাবে পালিত হতে পারে সত্যি ই ভাবা যায়না ।  

ফিজির ইতিহাসে এই দুর্গাপুজো একটি বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করল।

WhatsApp channel Join Now
Telegram channel Join Now

সর্বশেষ - মালদা

আপনার জন্য নির্বাচিত

মনের আনন্দে নৃত্যে সামিল দিব্যাঙ্গরা

জম্মু ও কাশ্মীরে ফের গুলির লড়াই, শহীদ একজন ক্যাপ্টেন সহ ৪ জওয়ান

প্রায় ১৫ ফুট গভীর নালায় পড়ে গেল একটি যাত্রীবোঝাই বাস : মৃত 35

মালদহ জেলায় সর্বপ্রথম শুরু হল দুষ্প্রাপ্য সামগ্রির প্রদর্শনী

কেন শুরু হয়েছিল রামনবমীর পুজো? জেনে নিন, পুজোর নানা গুরুত্ব

সল্টলেকে পি কে ব্যানার্জীর বাড়িতে নৃশংস খুন

Malda news: विभिन्न ट्रक चालकों और राहगीरों से अवैध वसूली करते 9 महिलाएं गिरफ्तार

প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন কারামন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী শোক প্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর, অর্ধদিবস ছুটি সরকারি অফিস

Malda news:ছয় মাথার কার্তিক পূজিত হলেন মালদহের ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে

পরিত্যক্ত দুটি পার্সেল ব্যাগ দিয়ে বোমাতঙ্ক, আতঙ্কে এলাকার মানুষ।।