পরিবার ও নিজের স্বপ্ন সফল করতে টোটো চালাতে শুরু করলেন কলেজ ছাত্রী তমা দত্ত

  news bazar24 :   চোখ ভরা স্বপ্ন সফল করতে কেও পেছন থেকে ধাক্কা মারলে সহজেই সফল হওয়া যায়। কিন্ত পেছন থেকে ধাক্কা মারার কেও না থাকলে সেই স্বপ্নকে সার্থক করতে লড়াই করে যেতে হয় অনেকটাই বেশী। আর এই লড়াই  একেকজনের জন্য  একেকরকম। উদাহরণ দিতেই পারি, চাঁপদানির তমা দত্তের। পড়াশোনা করে ভাল একটা চাকরি করার খুব ইচ্ছে  এই তরুণী। সেই তাগিদে  ভর্তি হন শ্রীরামপুর কলেজে (Sreerampur College)। কিন্তু উচ্চশিক্ষায় পড়াশোনার জন্য  যে খরচ অনেক ! বয়স্ক বাবার তেমন সামর্থও নেই।

আর সেই কারনেই  প্রতিকূলতাকে  চ্যালেঞ্জ জানিয়ে টোটো চালাতে বাধ্য হয়েছেন তমা দত্ত । পড়াশোনা তো চলবেই, বাকি যে টাকা  থাকবে তাতে সংসার খরচও হবে। আবার পড়াশোনার খরচও চালানো যাবে। তমার ইচ্ছে  আত্মীয় বন্ধুদের কাছে হাত পেতে নয়, সংসারের জোয়াল কাঁধে তুলে নিয়ে একইসঙ্গে নিজের স্বপ্নকেও পুরন করতে টোটোকেই বন্ধু হিসেবে ধরে রাখতে।

হুগলী শ্রীরামপুর কলেজের বাংলা অনার্সের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তমা  । তমাদের পুরনো একটি টোটো ছিল। বাবা এক সময় চালাত। পুরনো টোটো হওয়ায় প্রায় প্রায়ই বিকল হয়ে পড়ে। ফলে খরচ লেগেই থাকত তার পিছনে। এরপরই তমা ঠিক করেন, নতুন টোটো কিনবেন। সংসারের হাল ধরতে হবে, পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে।

 নিজের বিয়ের জন্য বাবার জমানো পয়সা দিয়ে শনিবারই চুঁচুড়া থেকে নতুন একটি টোটো কেনেন তমা। তমার এই যুদ্ধের  কথা শুনে টোটোয় বেশ কিছুটা ছাড়ও দিয়েছেন দোকানের মালিক। তমা বলেন, টোটো না চালালে  সংসারের সঙ্গে সঙ্গে আমার পড়াশোনাটাও তো বন্ধ হয়ে যাবে। তাই টোটো কিনলাম। বাবার বয়স হয়েছে।  কিছু উপার্জন হলে সংসারটাও নিরাপদ থাকবে, পড়তেও পারব, ভাই বোনের পড়ার খরচ টাও চালিয়ে যাবো।  

এদিকে তমার এই সংগ্রামে গর্বিত ও আশাবাদী তমার মা অঞ্জলি দত্ত। তাঁর কথায়, তমার ছোটো ভাই একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। বোন মাধ্যমিক দেবে। ওদেরও পড়াশোনার খরচ রয়েছে। তমার মা অঞ্জলি দত্ত আক্ষেপ করে বলেন  লড়াই করে যাচ্ছে মেয়েটা আমাদের জন্য। আমি জানি ও একদিন পড়াশোনা করে ঠিক নিজের পায়ে দাঁড়াবে। ওর স্বপ্নটা পূরণ হবে।ঈশ্বর যেন ও চেষ্টার মর্যাদা দেন।