রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রমের বিরুদ্ধে সরাসরি রাজনীতির অভিযোগ মমতার, প্রতিবাদ সাধু-সন্তদের

নির্বাচনী রাজনীতির অঙ্গনে ভারত সেবাশ্রম সংঘ ও রামকৃষ্ণ মিশনকে টেনে নিয়ে আসলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সাধুসন্তদের নিয়ে তার মন্তব্যে অসন্তুষ্ট তারা। রাজ্যের বিদ্বজনদের একাংশ তার এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
আরামবাগের গোঘাটে এক নির্বাচনী জনসভা থেকে ভারত সেবাশ্রম সংঘ ও রামকৃষ্ণ মিশনের একাংশ মহারাজের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে মমতা অভিযোগ করেন ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশনের একাংশ মহারাজ ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করে দেশের সর্বনাশ করছেন। তার কথায়, “সব সজ্জন সমান হয় না।
সাধুর বেশ ধরেও ভারত সেবা সংঘ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অনেক মহারাজ সরাসরি রাজনীতি করছেন।
শনিবারের সভা থেকে সরাসরি ভারত সেবাশ্রম সংঘের মহারাজকে তীব্র আক্রমণের পাশাপাশি আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধেও ক্ষোভপ্রকাশ করেন মমতা। বলেন, “সব সাধু তো সমান হয় না। সব স্বজন সমান হয় না। আমাদের মধ্যেও কি আমরা সবাই সমান? না। এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেকদিন ধরে – কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবা সংঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার একটা শ্রদ্ধার তালিকায় তারা দীর্ঘদিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে যে আমি তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্টকে বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু মনে করি না। তার কারণ তিনি ডিরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করছেন।”
। আসানসোলের রামকৃষ্ণ মিশনের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে গিয়ে তিনি কি করেছেন তার ফিরিস্তি দেন, রামকৃষ্ণ মিশনকে কত সাহায্য করেছে। সিপিআইএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল, আপনাদের অস্তিত্ব এবং স্বাধিকার নিয়ে আমি পুরো সমর্থন করেছিলাম। মা-বোনেরা আসত। তরকারি কেটে দিত। সিপিএম কিন্তু আপনাদের কাজ পর্যন্ত করতে দিত না। কিন্তু আমি জানি কয়েকজন, সবাই তো নয়।
মমতার আরও অভিযোগ, “দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে। বলে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য বল। কেন করবেন সাধু-সন্তরা এ কাজ? রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই শ্রদ্ধা করে, সম্মান করে। ওদের কাছে একটা হোয়্যাটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। ওদের যাঁরা সদস্য হন, যাঁরা দীক্ষা নেন, তাঁদেরকে আমি ভালবাসতে পারি, আমি দীক্ষা নিতে পারি। কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশন কোনওদিন ভোট দেয় না, এটা আমি জানি। তাহলে কেন আমি অন্যকে ভোট দিতে বলব? তার এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের স্বামীজি কার্তিক মহারাজ। তিনি বলেছেন এটা সমগ্র সাধু-সন্তদের সরাসরি অপমান। আমরা এর বিরুদ্ধে শীঘ্রই রাস্তায় নামাব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রামকৃষ্ণ মিশনের এক স্বামীজি জানান, আমরা দেশ-বিদেশ থেকে বহু সাহায্য পাই। কেউ কিন্তু বড়াই করে বলেন না আমরা মিশনকে সাহায্য করেছি। আমাদের বিপদের সময় উনি সাহায্য করেছেন ওনার কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু তাই বলে এইভাবে নির্বাচনী জনসভায় সাধু সন্তদের অপমানজনক কথাবার্তা ঠিক নয়।