Malda: মালদা জেলা পরিষদে মহিলা সভাধিপতি তৃণমূলের লিপিকা বর্মন ঘোষ নির্বাচিত

Newsbazar 24: মহিলা সভাধিপতি নির্বাচিত হলেন মালদা জেলা পরিষদে। ইংলিশ বাজার থেকে থেকে নির্বাচিত তৃণমূলের লিপিকা বর্মন ঘোষ হলেন এবারের জেলা পরিষদের সভাধিপতি।
তিনি গত পাঁচ বছর ধরে ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন। সহকারি সভাধিপতি পদে নির্বাচিত হলেন এটিএম রফিকুল হোসেন। তিনি ছিলেন মালদা জেলা পরিষদের বিদায় সভাধিপতি। তিনি এবারেও চাচোল থেকে নির্বাচিত হন।
প্রসঙ্গত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে মালদা জেলা পরিষদ দখলে রাখে তৃণমূল। মালদা জেলা পরিষদের ৪৩টি আসনের মধ্যে তৃণমূলের ঝুলিতে গিয়েছে ৩৪ আসন।পাঁচটি আসন পেয়েছে কংগ্রেস এবং বিজেপি পেয়েছে ৪টি আসন।
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার থাকলেও তৃণমূল জেলা কমিটি জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি নির্বাচনে কোন ঝুঁকি নিতে চাননি। কারণ মালদা জেলায় দেখা গেছে কয়েকটি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনে তৃণমূলের
অফিসিয়াল প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়ে জয়ী হন বিক্ষুব্ধ তৃণমূলরা। যদিও এবার মালদহ জেলা পরিষদের সভাধিপতি আসনটি ছিল তপশিলি জাতির মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। সভাধিপতি পদে তৃণমূলের অন্দরে চারটি নাম ঘোরাফেরা করছিল। এরা হলেন ইংলিশ বাজার ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তথা ইংলিশ বাজার থেকে তৃণমূলের টিকিটে মালদা জেলা পরিষদের জয়ী লিপিকা বর্মন ঘোষ, মানিকচক ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি কবিতা মন্ডল, গাজলের সাগরিকা সরকার, রতুয়ার মঙ্গলি চৌধুরী। ভাগ্যের শিখা ছিড়ল লিপিকা বর্মন ঘোষের। এদিন তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী, জেলার মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন সহ প্রথম সারির নেতারা দলের জয়ী সদস্যদের সঙ্গে করে জেলা পরিষদে পৌঁছন।সভাধিপতি নির্বাচনের জন্য দলের মধ্যেই হুইপ জারি করা হয়। এদিন
মালদা জেলা পরিষদের সভাকক্ষে সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভোটাভুটির মাধ্যমে নির্বাচিত হয় সভাধিপতি ও সহকারী সভাধিপতি । উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) জামিল ফতেমা জেবা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে সভাধিপতি পদে লিপিকা বর্মনের নাম প্রস্তাব করা হয়। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আব্দুল হান্নান এবং বিজেপি শ্যামলী রজকের নাম সভাধিপতি পদে প্রস্তাব করে। সভাধিপতি পদে ভোটাভুটিতে ৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন তৃণমূলের লিপিকা বর্মন। অন্যদিকে কংগ্রেস ৫টি ও বিজেপি ৪টি করে ভোট পায়।
সভাধিপতি নির্বাচনের পর সহকারী সভাধিপতি নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি বিজেপি। সভাধিপতি নির্বাচনের পরেই বিজেপির সদস্যরা সভাকক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। সহকারি সভাধিপতি পদে তৃণমূলের পক্ষে এটিএম রফিকুল হোসেন এবং কংগ্রেসের পক্ষে মামনি মন্ডলের নাম প্রস্তাব করা হয়। এক্ষেত্রে ৩৪-৫ ভোটের ব্যবধানে সহকারী সভাধিপতি হন রফিকুল হোসেন।
এদিন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি গঠনকে কেন্দ্র করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দায়িত্ব সামলে এবার সভাধিপতির দায়িত্ব পেয়ে খুশি নবনির্বাচিত সভাধিপতি লিপিকা বর্মন ঘোষ। সকলকে একসাথে করে নিয়ে জেলার মূল সমস্যাগুলো দূর করাই একমাত্র লক্ষ্য থাকবে বলেই দাবি করেন তিনি।

সভাধিপতি হওয়ার পর লিপিকা বর্মন ঘোষ বলেন , আমাকে সভাধিপতি নির্বাচিত করার জন্য আমাদের জনদরদী মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী এবং দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ জেলার দুই মন্ত্রী ও বিধায়কদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন মানুষের মূল চাহিদা জল রাস্তাঘাট ও বিদ্যুৎ এই ক্ষেত্রে তিনি সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করবেন পাশাপাশি জেলার একটি জ্বলন্ত সমস্যা গঙ্গা ভাঙ্গন। এর প্রতিরোধে তিনি সকলকে একসাথে নিয়ে কাজ করবেন বলে জানান। কেন্দ্রের ১০০ দিনের টাকা ফিরিয়ে নিয়ে আসা বড় চ্যালেঞ্জ। প্রয়োজনে এনিয়ে সকলকে একসাথে করে আন্দোলন করবেন। দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন দুর্নীতি হয়েছে কি হয়নি সেটা উপরমহলে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হলেই জানা যাবে।
নতুন সভাধিপতি এবং সহকারী সভাধিপতি সভাকক্ষ থেকে বের হতেই তাদের নিয়ে উচ্ছাসে মাতেন তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা।
*****উত্তম বিশ্বাস ও কার্তিক পালের সাথে ক্যামেরায় সন্তোষ কর্মকার****