মালদহে রেফার করা রোগীদের ভুল বুঝিয়ে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ, প্রতারণা চক্র অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের

Newsbazar24 :মালদহে শহরের বুকে লাইসেন্স ছাড়াই চলছিল একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এমনকি প্রশিক্ষিত কর্মী ছাড়াই রক্ত পরীক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ করানো হচ্ছিল। এই গুরুতর অভিযোগের পর অবশেষে জেলা নজরদারি দল তথা ডিস্ট্রিক্ট সার্ভেইল্যান্স টিম ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিল করে দিয়েছে। পাশাপাশি রোগীদের ভুল বুঝিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি করানোর একটি চক্রের সন্ধান পেয়েছে প্রশাসন।
এই চক্রের সঙ্গে জড়িত কিছু অ্যাম্বুলেন্স চালক ও নার্সিংহোমের মালিকদের যোগশাজসের ঘটনা প্রশাসনের নজরে এসেছে।
মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা রোগীকে ভুল বুঝিয়ে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার নিয়ে গিয়ে তুলছে বেসরকারি নার্সিংহোমে। এমন অভিযোগ তুলেছেন একাধিক রোগীর পরিবারের সদস্যরা। চিকিৎসার নামে দিনের পর দিন নার্সিংহোমে রেখে ধরানো হচ্ছে মোটা অংকের বিল। অথচ নার্সিংহোমে নেই উপযুক্ত পরিকাঠামো। এরপর নার্সিংহোম থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন পাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার। মূলত প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা পিছিয়ে পড়া পরিবারগুলিকে এই দালাল চক্র টার্গেট করে।

অভিযোগ পেয়ে ঠিক সেই রকমই একটি চক্রের হদিশ বের করে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করল জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। মালদা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় গাজোল থানার আলাল পাহাড়ি ভিটা এলাকার বাসিন্দা কুমার কোরা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে চলতি মাসের ১৭ তারিখ গাজোল হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর তাকে সেখান থেকে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। অভিযোগ যে অ্যাম্বুলেন্স করে ওই রোগীকে নিয়ে আসা হচ্ছিল সেই চালক পরিবারের সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার লোভ দেখিয়ে মালদা শহরের আম বাজার এলাকায় অবস্থিত একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যায়। অভিযোগ এরপর সেখানে কার্যত ওই রোগীকে আটকে রেখে তেমন কোন চিকিৎসা না করেই প্রায় এক লক্ষ টাকার ওপর বিল করা হয়। টাকা দিতে না পারায় নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ রোগীকে আটকে রাখে। পরে ডিস্ট্রিক্ট
সার্ভেইল্যান্স টিম অভিযান চালিয়ে রোগীকে উদ্ধার করে মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করায়।
মালদা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক শেখ আনসার আহমেদ জানিয়েছেন, “কিছুদিন ধরে আমরা এই ধরনের অভিযোগ পাচ্ছিলাম। সেই মতো একটি নার্সিংহোমে অভিযান চালানো হয়। সেখানে গাজোলের এক রোগী ভর্তি ছিলেন, কিন্তু তাঁর কোনও চিকিৎসা করা হয়নি। তবু ১ লক্ষ টাকার বিল তৈরি করা হয়েছিল। জানা গেছে, রোগীকে মালদা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করার কথা ছিল, কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স চালক নার্সিংহোমে নিয়ে যায়। আমরা রোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। অ্যাম্বুল্যান্স চালকের খোঁজ চলছে। নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে।” সিল করা ডায়াগনস্টিক
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে।
এদিকে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সংশ্লিষ্ট নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ নিজেদের ভুল স্বীকার করেছেন।