মা ‘বাংলাদেশি’, ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরি করছেন ! SDO কে অভিযোগ সৎ ছেলের 

মা ‘বাংলাদেশি’, ভুয়ো সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরি করছেন ! SDO কে অভিযোগ সৎ ছেলের

news bazar24: ‘মা’ বাংলাদেশি নাগরিক হয়েও জাল শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট তৈরি করে সরকারি চাকরি করছেন। এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ সৎ ছেলে উত্তম দাসের। সোমবার উত্তম ইসলামপুরের মহকুমা প্রশাসকের অফিসে এই বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত অনিতারাণী দাস ইসলামপুর (ইসলামপুর) পশ্চাদপদ স্কুল পরিদর্শকের অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী। শুধু তাই নয়, উত্তমের বাবা শঙ্কর চন্দ্র দাসও সেচ বিভাগের কর্মচারী।

উত্তম দাবি করেছেন যে তার সৎ মা অনিতা একজন বাংলাদেশি নাগরিক। তিনি অষ্টম শ্রেণির শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে ল্যান্ড লুজার ক্যাটিগোরিতে চাকরি করছেন।
যদিও অনিতা দাবি করেছেন যে তিনি উত্তম দাস নামে কাউকে চেনেন না। তিনি জানেন না যে তার স্বামী আগে বিবাহিত ছিলেন বা তার পক্ষ থেকে তার কোনও সন্তান আছে। তবে, বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ার প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর না দিয়েই অনিতা মোবাইল ফোনটি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

ফসলের দাম নেই। তাই হরিহরপাড়া-বহরমপুর রাজ্য সড়কে পটল-শশা-লাফা ছড়িয়ে দিয়ে বিক্ষোভ চাষিদের

অভিযোগকারীর বাবা শঙ্কর শঙ্কর চন্দ্র দাস অবশ্য স্বীকার করেছেন যে উত্তম তার প্রথমজাত সন্তান। তার মন্তব্য , ‘যদি পরিবারের কোনও সদস্য পরিবারকে হয়রানি করতে চায়, তাহলে তা দুর্ভাগ্যজনক। পারিবারিক বিষয়গুলি পরিবারের মধ্যেই থাকা উচিত।’ অনিতার বাংলাদেশি নাগরিকত্ব এবং চাকরির প্রশ্নে শঙ্করের যুক্তি ছিল, ‘সরকার যখন কাউকে চাকরি দেয়, তখন সবকিছুই পরীক্ষা করে। তাছাড়া অন্য কোনও দেশ থেকে কাউকে বিয়ে করে নিয়ে এলে সে তো আমার পরিচয়েই চলে এল।

উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিদর্শক শুভঙ্কর নন্দী বলেন, ‘আমি সরকারি চাকরির বাইরে আছি। আমি বিষয়টি সম্পর্কে শুনেছি। উচ্চতর কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পাওয়ার পর যথাযথ তদন্ত করা হবে।’ মহকুমা প্রশাসক প্রিয়া যাদব উত্তমের দায়ের করা অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলা হবে।

ইকোকার্ডিওগ্রাফি রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগে চিকিৎসকরা, শীর্ণকায় অবস্থায়  এখন সাংসদ অভিজিত

আপনি কেন আপনার সৎ মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলেন? এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তম উত্তর দেন, ‘অনিতা দেবীর বাবা-মা সবাই বাংলাদেশি নাগরিক। আমার মায়ের মৃত্যুর পর, আমার বাবা বাংলাদেশে গিয়ে তাকে বিয়ে করেন। তারপর তিনি রামগঞ্জের শাস্ত্রীনগর গ্রামে আসেন। তিনি আমাকে এবং আমার বোনকে নির্যাতন শুরু করেন। আমি রায়গঞ্জের একটি অনাথ আশ্রমে বড় হয়েছি। আর দিদিকে নাবালিকা অবস্থাতেই ইসলামপুরে বিয়ে দেওয়া হয়েছিল।’

রামগঞ্জের শাস্ত্রীনগরের শঙ্কর চন্দ্র দাসের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শঙ্কর ওরফে চান্দুর দ্বিতীয় স্ত্রী অনিতা। তিনি তাকে বাংলাদেশ থেকে বিয়ে করে এনেছিলেন। ফলস্বরূপ, অনিতা কীভাবে পড়াশোনা করতে ভারতে এসেছিলেন এবং কাজ করছেন তা নিয়ে এলাকায় গুজবের শেষ নেই।

উলক্ষণীয় যে, চান্দুর আগের বিবাহ থেকে একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে ছিল। চান্দুর দ্বিতীয় স্ত্রী ছেলেকে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিলেন। তাছাড়া, অনিতাকে কখনও স্কুলে যেতে দেখা যায়নি। ফলস্বরূপ, এলাকার বাসিন্দারা অনিতা কীভাবে রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সার্টিফিকেট পেল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন।

অনিতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে, তিনি প্রথমে বলেন, ‘আমি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাই না।’ পরে, যখন তাকে একের পর এক প্রশ্ন করা হয়, তখন তিনি মন্তব্য করেন, ‘এগুলি সব ভিত্তিহীন অভিযোগ। আমি নবম শ্রেণী পর্যন্ত রামগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছি। আমি আমার স্বামীর সাথে কথা বলব।’

তিনি কি বিয়ের আগে বা পরে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন? এই প্রশ্ন শুনে অনিতা ফোন কেটে দেন।

মহকুমা প্রশাসক বলেন, “অভিযোগকারী লিখিত অভিযোগের সাথে কোনও সহায়ক নথিপত্র সরবরাহ করেননি। তবে, বিষয়টি তদন্তের জন্য অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে।”