তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় সাংসদদের কোন্দল সামাল দিতে আসরে নামলেন তৃণমূল সুপ্রিমো

Newsbazar24: তৃণমূলের অন্তরে দলীয় কোন্দল প্রকাশ্যে। এবার সাংসদের ঝগড়া প্রকাশ্যে এল। প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যিনি কুকথার ফুলঝুড়ির
জন্য বিখ্যাত তিনি এবার দলীয় এক মহিলা সাংসদ সহ দলের দুই সাংসদ সৌগত রায় ও কীর্তি আজাদকে রীতিমতো ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন সাংবাদিক সম্মেলন করে। অবশ্য এর পাল্টাও সৌগত রায় কড়া বিবৃতি দিয়েছেন। প্রকাশ্যে এভাবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গে দলের অস্বস্তি চরমে । এই বাকবিতণ্ডাকে থামাতে অবশেষে দলনেত্রীকে আসরে নামতে হলো। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশ, “আর জলঘোলা নয়,” বলে সাংসদদের শান্ত থাকতে এবং গণমাধ্যমে মুখ না খুলতে বলেছেন তিনি।
প্রসঙ্গত বিজেপি নেতা অমিত মালব্য গত সপ্তাহে এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূল সাংসদদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ফাঁস করে দাবি করেন, ৪ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে কল্যাণ ও কীর্তি আজাদের মধ্যে তর্ক বাধে। এরপর মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে কল্যাণ বিস্ফোরক মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “সংসদে মিষ্টির দোকান খোলার প্রস্তাব নিয়ে কীর্তি আমার সঙ্গে তর্ক করেন। এক মহিলা সাংসদ আমাকে কটূক্তি করে সিআইএসএফ দিয়ে গ্রেফতার করানোর চেষ্টা করেন।”
নাম না করে তিনি ওই মহিলা সাংসদকে আক্রমণ করে বলেন,”তুমি শিল্পপতির হয়ে কথা বলো। মোদী,আদানির বিরুদ্ধে বলো, কিন্তু অমিত শাহের বিরুদ্ধে কেন নয়? সুন্দরী বলে আর ইংরেজি ফটফট করলেই পুরুষকে অপমান করা যায় না।” কল্যাণ সৌগত রায়কে ‘নারদ চোর’ ও কীর্তি আজাদকে ‘অন্য দল থেকে তাড়িয়ে আসা’ বলেও কটাক্ষ করেন
স্বাভাবিকভাবেই দলীয় সাংসদদের এই কোন্দলে মমতা বেজায় ক্ষুব্ধ। তিনি সাংসদদের মধ্যে বাদানুবাদ বন্ধ করতে এবং গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য না করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এক সূত্র জানায়, “দলনেত্রী বলেছেন, ‘এই ইস্যুতে আর জলঘোলা করা যাবে না।’ নেতাকর্মীদেরও শান্ত থাকতে বলা হয়েছে।” মমতার এই পদক্ষেপকে দলের শৃঙ্খলা ফেরানোর চেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কল্যাণ জানান, তাঁর সঙ্গে এই সংঘাতের সূত্রপাত সংসদে কীর্তির প্রস্তাবিত মিষ্টির দোকান নিয়ে। তিনি বলেন, “আমি সাধারণ মানুষের কথা বলি। কিন্তু ওই মহিলা সাংসদ আমাকে জেলে পাঠানোর হুমকি দেন।” তাঁর নাম না করলেও এই মন্তব্যে অনেকে মহুয়া মৈত্রের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে,এই কোন্দল তৃণমূলের ঐক্যের ওপর বড় আঘাত। বিজেপি এটিকে হাতিয়ার করে প্রচার চালাচ্ছে। কল্যাণের মন্তব্য ব্যক্তিগত ক্ষোভ হলেও, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে।মমতার নির্দেশ সাময়িক শান্তি আনতে পারে, কিন্তু অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব দূর না হলে বিধানসভা নির্বাচনে প্রভাব পড়বে।”
ইতিমধ্যে সৌগত রায় তাঁকে পদ থেকে সরানোর দাবি জানিয়েছেন।
এই ঘটনা ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ঝড় তুলেছে।
মমতার নির্দেশ কতটা কার্যকর হবে এবং সাংসদদের মধ্যে শান্তি ফেরে কিনা, তা আগামী দিনে দেখার