Saturday , 17 August 2019 |
  1. Delete-31-10-24
  2. উপাসনা এবং ধর্ম
  3. কলকাতা
  4. কৃষি ও ফুল বাগান
  5. খেলা
  6. গ্রহ শান্তি
  7. চলো যাই
  8. জানা অজানা
  9. দেশ
  10. পড়াশোনা
  11. পথ চলতি
  12. পেশা প্রস্তুতি
  13. প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান
  14. ফ্যাশান
  15. বিজ্ঞাপন

চাঁদ সউদাগর নয় । মহাভারতের যুগেও প্রচলন ছিল মনসা পুজার, জানুন বিস্তারিত

প্রতিবেদক
Sankar Chakraboty,Admin
August 17, 2019 7:24 pm

              চাঁদ সউদাগর নয় । মহাভারতের যুগেও প্রচলন ছিল মনসা পুজার, জানুন বিস্তারিত

                                                   – নারায়ণ মুখারজী

ভারতবর্ষে সর্প পূজা একটি প্রাচীন অনুষ্ঠান। মনসা সাপের দেবী। তিনি মূলত লৌকিক দেবী। পরবর্তীকালে পৌরাণিক দেবী রূপে স্বীকৃত হন। শ্রাবণ মাসের শেষ দিনে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের প্রতিটি ঘরে ঘরে মনসা দেবীর পূজা অনুষ্ঠিত হয়।

চৈতন্যদেবের সময় বাংলাদেশে মাটির প্রতিমা গড়ে ঘটা করে মনসা পূজা হতো। মনসা পূজা দুভাবে হয়ে থাকে- কোনও কোনও পূজায় পাঠা বলি দিয়ে হয়। আবার পাঁঠাবলি ছাড়াও পূজা হয়। আইনি জটিলতার কারণে এখন আর বলি প্রথার চল বিশেষ নেই।
মনসা পূজার প্রতিমাতেও পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। কেউ কেউ মনসা প্রতিমা বানিয়ে পূজা করে থাকে। আবার কেউ কেউ পঞ্চ সর্পের ফণা যুক্ত প্রতিমার পূজা করে। গোত্র ও অঞ্চল ভেদে প্রথার ওপর ভিত্তি করে মনসা দেবী বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন রূপে তার ভক্তদের দ্বারা পূজিত হয়ে থাকেন।
মনসশব্দের উত্তর স্ত্রীলিঙ্গের আপ প্রত্যয় করে মনসাশব্দের উৎপত্তি। ব্যুৎপত্তিগত অর্থে মনসা মনের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা। দেবী ভাগবত ও ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে সর্পভয় থেকে মনুষ্যগণকে পরিত্রাণের জন্য ব্রহ্মা কশ্যপ মুনিকে মন্ত্র বা বিদ্যা বিশেষ আবিষ্কারের জন্য আদেশ করেন। ব্রহ্মার আদেশে কশ্যপ যখন মনে মনে এ বিষয়ে চিন্তা করছিলেন তখন তাঁর মনন ক্রিয়ার সাকার রূপ পরিগ্রহ করে এক মহাদেবী দীপ্যমান হন। তিনটি কারণে এই মহাদেবীর নাম হয় মনসা। প্রথমত তিনি কশ্যপ মুনির মানস কন্যা, দ্বিতীয়ত মনুষ্যগণের মনই তাঁর ক্রীড়া ক্ষেত্র, তৃতীয়ত তিনি নিজেও মনে মনে বা যোগবলে পরমাত্মার ধ্যান করেন। মনসার দ্বাদশটি নাম আছে। জরৎকারু, জগদ্গৌরি, মনসা, সিদ্ধ যোগিনী, বৈষ্ণবী,নাগ ভগিনী, শৈবী, নাগেশ্বরী, জরৎকারু-প্রিয়া, আস্তিক-মাতা, বিষহরী, মহাজ্ঞানযুতা।

মনসা শব্দটির বিশ্লেষণ করলে অর্থ দাঁড়ায় মনে চিন্তন। কিন্তু দেবী রূপে মনসা কি চিন্তনের কোন বিষয়? মনের মধ্যে বিষ থাকতে পারে, সেই বিষ অবশ্যই মনকে বিষাক্ত করে এবং চিন্তার খোরাক যোগায়, মনন কে সুখশ্রাবী করার জন্য মন্ত্রের উদ্ভব। মন্ত্রই মনকে ঊর্ধ্বগামী করে। সেই মন যদি বিষক্রিয়ায় জর্জরিত হয় তবে তো সমগ্র দেহই বিষাক্ত হয়ে যাবে। তাই মনসার উৎপত্তি যেমন আর্যঋষি গণ দেখিয়েছেন বিষহরী দেবীরুপে সেরূপ বিষহরণ করে মনকে বিষযুক্ত করারও ব্যবস্থা তার হাতে। সাপের দাঁতে বিষ আছে কিন্তু নিজে যখন খায় তাতে বিষ লাগে না। কিন্তু হিংসায় বা আত্মরক্ষায় যখন দংশন করে তখন দংশিত স্থানে বিষ ছড়ায়। তাই মনে বিষ হলো হিংসা ক্রোধ, লোভ এগুলো দূর করার দেবী মনসা। চিন্তা থেকে আমাদের মুক্তি নেই তবু চিন্তা যাতে যুক্ত হতে পারে, চিন্তা যাতে রিপুর বশ না হয় তার চেষ্টাই আমাদের করতে হবে-এই শিক্ষাই দিয়েছেন দেবী মনসা।

দেবীর বাহন
সরস্বতীর মতো দেবী মনসার বাহন হংস। বাহনকে দেখেই আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে মনসাও জ্ঞানযুতা, জ্ঞানলক্ষণা। দেবী মনসার জ্ঞানশক্তি মনোময়। শুদ্ধযোগ ও আধ্যত্ম জ্ঞানের সাধন সিদ্ধি দেবী মনসার দান।

মূর্তিতত্ত্ব

মনসা সর্বাঙ্গে সর্পাভরণভূষিতা এবং পদ্ম অথবা নাগপৃষ্ঠে আসীনা। তাঁর মাথার উপর সপ্তফণাযুক্ত নাগছত্র দেখা যায়। কখনো কখনো তাঁর কোলে একটি শিশুকেও দেখা যায়। মনে করা হয় এটি তাঁর পুত্র আস্তিক। মনসাকে একচক্ষু কানা” (চাঁদ সদাগরের বিখ্যাত উক্তি অনুযায়ী, “চেঙমুড়ী কানী”) দেবীও বলা হয়। কারণ তাঁর একটি চোখ সৎ-মা চণ্ডী কর্তৃক দগ্ধ হয়েছিল।

কিংবদন্তি

মহাভারত

মহাভারতে মনসার বিবাহের কাহিনিটি রয়েছে। ঋষি জগৎকারু এক প্রচণ্ড তপস্যায় রত ছিলেন। তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে বিবাহ করবেন না। একদা তিনি দেখতে পান যে একদল লোককে গাছে উলটো করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এঁরা ছিলেন তাঁরই পূর্বপুরুষ। তাঁদের সন্তানেরা তাঁদের শ্রাদ্ধাদি সম্পূর্ণ না করায় তাঁদের এই দুঃখজনক অবস্থা হয়েছিল। তাঁরা জগৎকারুকে বিবাহ করার উপদেশ দিয়ে বলেন যে তাঁর পুত্রই শ্রাদ্ধাদি সম্পূর্ণ করে তাঁদের দুঃখ থেকে মুক্তি দিতে পারবে। বাসুকী জগৎকারুর সঙ্গে নিজ ভগিনী মনসার বিবাহ দেন। আস্তিক নামে তাঁদের একটি পুত্রসন্তান হয়। আস্তিক তাঁর পূর্বপুরুষদের মুক্তি দেন। রাজা জনমেজয় সর্পজাতির বিনাশার্থে সর্পনিধন যজ্ঞ শুরু করলে আস্তিকই নাগদের রক্ষা করেন।

পুরাণ

মনসার জন্মকাহিনি প্রথম উল্লিখিত হয়েছে পুরাণগ্রন্থেই। মঙ্গলকাব্যে তাঁকে শিবের কন্যা বলা হলেও, পুরাণ অনুসারে তিনি ঋষি কশ্যপের কন্যা। একদা সর্প ও সরীসৃপগণ পৃথিবীতে কলহ শুরু করলে কশ্যপ তাঁর মন থেকে মনসার জন্ম দেন। ব্রহ্মা তাঁকে সর্প ও সরীসৃপদের দেবী করে দেন। মনসা মন্ত্রবলে বিশ্বের উপর নিজ কর্তৃত্ব স্থাপন করেন। এরপর মনসা শিবের সঙ্গে সন্ধিস্থাপন করেন। শিব তাঁকে কৃষ্ণ-আরাধনার উপদেশ দেন। মনসা কৃষ্ণের আরাধনা করলে কৃষ্ণ তুষ্ট হয়ে তাঁকে সিদ্ধি প্রদান করেন এবং প্রথামতে তাঁর পূজা করে মর্ত্যলোকে তাঁর দেবীত্ব প্রতিষ্ঠা করেন।

কশ্যপ জরুৎকারুর সঙ্গে মনসার বিবাহ দেন। মনসা তাঁর অবাধ্যতা করলে, তিনি মনসাকে ত্যাগ করবেন এই শর্তে জরুৎকারু মনসাকে বিবাহ করেন। একদা মনসা দেরি করে তাঁর নিদ্রাভঙ্গ করলে তাঁর পূজায় বিঘ্ন ঘটে। এই অপরাধে জরুৎকারু মনসাকে ত্যাগ করেন। পরে দেবতাদের অনুরোধে তিনি মনসার কাছে ফিরে আসেন এবং আস্তিক নামে তাঁদের একটি পুত্রসন্তান জন্মায়।

মঙ্গলকাব্য

মঙ্গলকাব্য হল খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে বাংলায় রচিত মনসা ও অন্যান্য স্থানীয় দেবদেবীর মাহাত্ম্যসূচক গাথাকাব্য। বিজয়গুপ্তের মনসামঙ্গল ও বিপ্রদাস পিপলাইয়ের মনসাবিজয় কাব্যে মনসার জন্ম ও অন্যান্য উপাখ্যানগুলি সম্পূর্ণ বর্ণিত হয়েছে।

মনসাবিজয় কাব্য থেকে জানা যায়, বাসুকীর মা একটি ছোটো মেয়ের মূর্তি নির্মাণ করেছিলেন। শিবের বীর্য এই মূর্তি স্পর্শ করলে মনসার জন্ম হয়। বাসুকী তাঁকে নিজ ভগিনীরূপে গ্রহণ করেন। রাজা পৃথু পৃথিবীকে গাভীর ন্যায় দোহন করলে উদগত বিষের দায়িত্বও বাসুকী মনসাকে দেন। শিব মনসাকে দেখে কামার্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু মনসা প্রমাণ করতে সক্ষম হন যে তিনি শিবেরই কন্যা। শিব তখন মনসাকে স্বগৃহে আনয়ন করেন। শিবের পত্নী চণ্ডী মনসাকে শিবের উপপত্নী মনে করেন। তিনি মনসাকে অপমান করেন এবং ক্রোধবশত তাঁর একটি চোখ দগ্ধ করেন। পরে শিব একদা বিষের জ্বালায় কাতর হলে মনসা তাঁকে রক্ষা করেন। একবার চণ্ডী তাঁকে পদাঘাত করলে তিনি তাঁর বিষদৃষ্টি হেনে চণ্ডীকে অজ্ঞান করে দেন। শেষে মনসা ও চণ্ডীর কলহে হতাশ হয়ে শিব মনসাকে পরিত্যাগ করেন। দুঃখে শিবের চোখ থেকে যে জল পড়ে সেই জলে জন্ম হয় মনসার সহচরী নেতার।

পরে জরৎকারুর সঙ্গে মনসার বিবাহ হয়। কিন্তু চণ্ডী মনসার ফুলশয্যার রাতটিকে ব্যর্থ করে দেন। তিনি মনসাকে উপদেশ দিয়েছিলেন সাপের অলঙ্কার পরতে আর বাসরঘরে ব্যাঙ ছেড়ে রাখতে যাতে সাপেরা আকর্ষিত হয়ে তাঁর বাসরঘরে উপস্থিত হয়। এর ফলে, ভয় পেয়ে জরৎকারু পালিয়ে যান। পরে তিনি ফিরে আসেন এবং তাঁদের পুত্র আস্তিকের জন্ম হয়।

এরপর মনসা তাঁর সহচরী নেতার সঙ্গে পৃথিবীতে অবতীর্ণ হন মানব ভক্ত সংগ্রহ করার উদ্দেশ্যে। প্রথম দিকে লোকেরা তাঁকে ব্যঙ্গ করে। কিন্তু যারা তাকে পূজা করতে অস্বীকার করে, তাদের চরম দুরবস্থা সৃষ্টি করে তাদের পূজা আদায় করেন মনসা। তিনি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের পূজা লাভে সক্ষম হন। এমনকি মুসলমান শাসক হাসানও তাঁর পূজা করেন। কিন্তু শিব ও চণ্ডীর পরমভক্ত চাঁদ সদাগর তাঁর পূজা করতে অস্বীকার করেন। চাঁদের পূজা আদায়ের জন্য মনসা চাঁদের ছয় পুত্রকে হত্যা করেন এবং তাঁকে নিঃস্ব করে দেন। পরে তিনি চাঁদের কনিষ্ঠ পুত্র লখিন্দরকে হত্যা করলে, তাঁর বিধবা পুত্রবধূ বেহুলা চাঁদকে মনসা পূজায় রাজি করাতে সক্ষম হন। চাঁদ মনসার দিকে না তাকিয়ে বাম হাতে তাঁকে ফুল ছুঁড়ে দেন। মনসা তাতেই খুশি হয়ে চাঁদের ছয় পুত্রকে জীবিত করেন এবং তাঁর সকল সম্পত্তি ফিরিয়ে দেন। এরপরই মনসা পূজা ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

মনসামঙ্গলে বলা হয়েছে, পূর্বজন্মে চাঁদকে মনসা একটি অভিশাপ দিয়েছিলেন। তার পাল্টা অভিশাপে মনসার ভক্ত সংগ্রহে অসুবিধা হতে থাকে। কারণ এই শাপে বলা হয়েছিল, চাঁদ মনসার পূজা না করলে মর্ত্যে মনসার পূজা প্রচলন লাভ করবে না।

 

WhatsApp channel Join Now
Telegram channel Join Now

সর্বশেষ - কলকাতা

আপনার জন্য নির্বাচিত

Malda:শান্তিনিকেতনের আদলে রাজ্যের হস্ত শিল্পীদের আয়ের লক্ষ্যে সোনাঝুরি হাটের আয়োজন

সকাল সকাল ইডি দপ্তরে হাজির কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা

স্যানিটাইজারের বোতল মেলেনি, তাই প্রাথমিক স্কুল গুলিতে বন্ধ রাখা হলো চাল,আলু বিলি

কলেজে ভর্তির সমস্যা দূর করার দাবি নিয়ে পাকুয়াহাট কলেজের অধ্যাপককে স্মারকপত্র TMCP এর

জেলায় করোনাকে দূরে সরিয়ে রেখে মহানবমীর সন্ধ্যায় মণ্ডপে মণ্ডপে মানুষের ঢল

বড়দিনে সকাল ! সংসদ ভবনের সামনে আত্মহত্যার  চেষ্টা করলো এক যুবক

প্রাকৃতিক দুর্যোগ খাতে বাংলা পেল ৪৭৫.৪ কোটি টাকা কেন্দ্রীয় সাহায্য।

বরিশালে মুক্তিযুদ্ধের স্মারক প্রদর্শনী

শীতে খান মালদহের বিখ্যাত কলাই রুটি, সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণে ভরপুর

Malda: ঈদের নামাজ পাঠে পুরুষ ও মহিলারা পাশাপাশি