খুন হল রাতে,এফআইআর দায়ের বেলা পৌনে ১২ টায় মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে,অধ্যক্ষ কি করছিলেন? বিস্মিত প্রধান বিচারপতি!

Newsbazar24:আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা নৃশংসতার সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ এই ঘটনায় রাজ্য সরকার এবং রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ঘটনার ভয়াবহতার কথা জানাতে গিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ শীর্ষ আদালত। আর এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে আর জি কর হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হল কেন্দ্রীয় বাহিনীকে।
এছাড়াও এদিন প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ যেভাবে নির্যাতিতার নাম, ছবি-সহ পরিচয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে তা উদ্বেগজনক।
এদিন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় প্রশ্ন করেন, মহিলারা নিরাপদে কাজ করতে না পারেন তাহলে, সমাজে সবার অধিকার থাকবে কী ভাবে? সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন কেন রাত পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কেউ এফআইআর দায়ের করেনি। রাত্রে নির্যাতিতা খুন হন সকালে জানাজানি হওয়া সত্ত্বেও বেলা ১১.৪৫ মিনিটে মৃতার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ কী করছিল? পাশাপাশি রাজ্যের ভূমিকাই বা কি?
পুলিশ এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা নিয়েও কড়া প্রশ্ন শীর্ষ আদালতের। ‘তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ। অধ্যক্ষ এই খুনের ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালাতে চেয়েছিলেন। এমনকী পরিবারকেও মৃতদেহ দেখতে দেওয়া হয়নি। তড়িঘড়ি মৃতদেহ দাহ করা হয়েছে। রাজ্যের তরফে আইনজীবী জানান, এই অভিযোগগুলি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে খুন করা হয়েছে। প্রথম এফআইআরে কি সেটা উল্লেখ ছিল, অধ্যক্ষ কী করেছেন?’
আরজি কর হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রথমে সঠিকভাবে এফআইআর করা হয়নি। পুলিশ কী করছিল! একটা হাসপাতালের মধ্যে এত বড় ঘটনা ঘটে গেল. পুলিশ হাসপাতাল ভাঙচুর করার অনুমতি দিচ্ছিল?’সুপ্রিম কোর্ট সন্দীপ ঘোষের ইস্তফা দেওয়ার পর অন্য মেডিক্যাল কলেজে তাঁর পুনর্বাসন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এই মামলায় সিবিআইকে স্টেটাস রিপোর্ট দিতে হবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এটা নির্দিষ্ট কোনও ঘটনা নয়। আমরা দেশ জুড়ে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা বিষয়টি নিয়ে একদিন জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । চিকিৎসকরা যাতে নিরাপদে কাজ করতে পারেন সেই দিকটি নিশ্চিত করা দরকার। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখবে সেই টাস্ক ফোর্স।
সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, এই ঘটনায় রাজ্যজুড়ে আইনশৃঙ্খলার সম্পূর্ণ ব্যর্থতা রাজ্য সরকারের। এটিকে রাজনৈতিক ইস্যু না করে এই ঘটনার মোর অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবার প্রবণতাকে বন্ধ করার আবেদন জানাচ্ছি।সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের উপর যেন বল প্রয়োগ না করা হয।

‘