ক্লাবের পেছনে খরচ ২৪০ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার টাকা ! মামলা আইনজীবী কাউন্সিলের

news bazar24:   দুর্গা পুজোতে ক্লাব গুলিকে অনুদান কেন ?এত টাকা কোন স্বার্থে ক্লাব গুলিকে দেওয়া হচ্ছে ? গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর থেকেই তীব্র কটাক্ষ করে চলেছিলেন বিরোধীরা। এবার রাজ্যের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে দায়ের হল মামলা।  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কমিটিগুলিকে অনুদান ঘোষণার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে  জাতীয়তাবাদী আইনজীবী কাউন্সিল।

 জাতীয়তাবাদী আইনজীবী কাউন্সিলরের দাবি, গত বছরও ক্লাবগুলিকে পুজোতে অনুদান দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।বলেছিলেন কোভিড প্রোটকল মেনে অনুদান দেওয়া হয়েছে। ক্লাবগুলি মাস্ক,স্যানিটাইজার বিভিন্ন খাতে খরচ করবে। সেই জন্য  প্রতিটি ক্লাবকে দেওয়া হয়েছিল ৫০ হাজার টাকা। কিন্ত এবার কিসের জন্য অনুদান ? এবার আবার অনুদানের পরিমাণ আরও বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

উল্লেখ্য,  গত সোমবার বিকেলে পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন রাজ্যের ৪০ হাজার পুজো কমিটিকে এবার রাজ্য সরকারের তরফে ৬০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলেও ৬০ শতাংশ পর্যন্ত  দেওয়া হবে ছাড়। যা নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করছেন বিরোধী দল গুলি ।  
এদিকে গত ২২ অগাস্ট এই অনুদান ঘোষণার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন   জাতীয়তাবাদী আইনজীবী কাউন্সিল। আদালতে এই বিষয়ে  জনস্বার্থ মামলা দায়েরের অনুমতিও চাওয়া হয়েছিল। ইতিমধ্যেই মামলায় দায়েরের অনুমতি দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। সব ঠিক থাকলে  শুক্রবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।
খবরে প্রকাশ, গত  বছরের পুজা কমিটির পরি সংখ্যান অনুযায়ী মোট ৪০ হাজার ৯২ টি ক্লাবকে  এবার অনুদান দেওয়া হয়। হিসেব মতো, এই সব ক্লাবগুলিকে অনুদান দিতে গেলে মোট যা খরচ পড়বে, তা হল ২৪০ কোটি ৫৫ লাখ ২০ হাজার টাকা। গত বছর অনেক নতুন পুজা পারমিট পেয়েছে।এই বছরেও অনেক পুজো বাড়বে।তাই টাকার সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।পরিসংখ্যান বলছে, যে পরিমাণ টাকা পুজোয়  অনুদান হিসেবে খরচ করছে রাজ্য সরকার, তা ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে রাজ্য সরকারের বাজেট বিবৃতিতে একাধিক ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত আর্থিক বরাদ্দের তুলনায় অনেকটা বেশি। রাজ্য সরকারের এমন বেহাল আর্থিক অবস্থার মধ্যেও এত টাকার অনুদান নিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছে বিরোধী নেতারা।

    বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলছেন, এই অনুদান দেবার কারণ যাতে পুজো-পুজো রব তুলে দিয়ে চোর-চোর রবটা পিছনে চলে যায়। অনুদান দিচ্ছেন ভাল কথা। কিন্তু তার সঙ্গে সরকারি কর্মীদের পাওনাটাও দিন।

রাজ্য সরকারের কিছু আনপ্ল্যানড খরচ থাকে। রাজ্য সরকার যদি সেই খরচ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে দিতে পারে, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু যেগুলি প্ল্যানড, যেগুলির মাধ্যমে কর্মসংস্থান হতে পারে, রাজ্যের জিডিপি বাড়তে পারে, সেই ধরনের পদক্ষেপও মুখ্যমন্ত্রীর করা উচিত।

বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষও বলতে ছাড়েন নি। দিলীপবাবুর বক্তব্য, “এই গরু চুরির টাকায় পুজোর অনুদান দেওয়া হচ্ছে।

সমালোচনার সুর  সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও । রাজ্যের শাসক দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “পুজোর জন্য ৫০ হাজার ছিল, এবার বাড়িয়ে ৬০ হাজার করল। বিদ্যুতে, দমকলেও সব ছাড় । সব মিলিয়ে হাজার কোটি খরচ।  এদিকে  বাঁধের মেরামতির কাজ হচ্ছে না। রাস্তার মেরামতির কাজ হচ্ছে না। বিদ্যুতের মেরামতির কাজ হচ্ছে না। মানুষ মারা যাচ্ছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে। ডিএ পাওয়া যাচ্ছে না, নিয়োগ হচ্ছে না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর মন এতটা উদার যে উনি যেখানে সেখানে,যত খুশি দিতে পারবেন।