কৃষিতে হাজার হাজার মহিলাদের স্বনির্ভরতার দিশা দেখাচ্ছেন সামান্য এক গৃহবধূ,রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পাচ্ছেন সেই গৃহবধূ, কে তিনি?

Newsbazar24:সামান্য এক গৃহবধূ। কৃষির মাধ্যমে মহিলাদের স্বনির্ভর হওয়ার দিশা দেখালেন এই গৃহবধূ। সারাদেশের ১০ জন মহিলা এবারের উদ্যোগী কৃষক হিসাবে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের সম্মানিত হতে চলেছেন। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র বর্ণালী।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির প্রত্যন্ত অশ্বত্থতলা গ্রামের বাসিন্দা এই বর্ণালী। আগামী ২৬ জানুয়ারি দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাত থেকে পুরস্কার নেবেন।
ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি ভবনের চিঠি এসে পৌঁছেছে বর্ণালীর বাড়িতে। তাঁর কাজের ক্ষেত্র মূলত সুন্দরবন।
২০১৭ সাল নাগাদ সার-কীটনাশক বিক্রির প্রশিক্ষণ নেন বর্ণালী জয়নগরের নিমপীঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে। এই কেন্দ্র থেকেই প্রশিক্ষণ নিয়েই বর্ণালী শুরু করেছিলেন চাষবাস।
বর্ণালীর চাষবাসের প্রতি আগ্রহ ছোট থেকে কাকদ্বীপে তার পৈতৃক বাড়ি। বাবা, মা দুজনেই শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। পরিবারে গরুপালন, ধান চাষ ও সবজির বাগান ছিল। ছোট থেকে আগ্রহ ছিল চাষবাসের। পরবর্তীসময় কুলপিতে বিয়ে হয় তাঁর। স্বামী পেশায় স্কুল শিক্ষক। পাশাপাশি সার, বীজের দোকান ছিল। মহিলাদের নিয়ে একটা স্বনির্ভর গোষ্ঠীও শুরু করেন তিনি। নানা কাজের মাধ্যমে তাঁদের আয়ের ব্যবস্থা করেন। আস্তে আস্তে মহিলাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তাঁদের নিয়ে তৈরি করেন অশ্বত্থতলা মহিলা জনকল্যাণ সমিতি।
নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে ২০১৭ সালে প্রশিক্ষণ শেষে গ্রামে গড়ে তোলেন ‘এফপিসি’ বা ‘ফার্মাস প্রডিউসার কোম্পানি’ ও ‘এফআইজি’ বা ‘ফার্মাস ইন্টারেস্ট গ্রুপ’।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কৃষি বিষয়ক একাধিক প্রকল্পের কথা জানতে পারেন। জনকল্যাণ সমিতির সদস্যদের কে নিয়ে শুরু হয় সরকারি প্রকল্প কাজে লাগিয়ে চাষবাস, হাঁস, মুরগি, ছাগল, গরু পালন। বর্তমানে ২ হাজারের বেশি মহিলা তাঁর সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। সকলেই স্বনির্ভর হচ্ছেন। বীজ, জৈব সার, সেচ ব্যবস্থা নিয়ে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ পাচ্ছেন পুরুষ ও মহিলারা। কৃষি ও হাতের কাজকে সম্বল করে স্বনির্ভর হচ্ছেন।
বর্ণালী বলেন, গৃহবধূ থেকেও ঘটনাচক্রে চাষের কাজে যুক্ত হয়ে পড়ি। কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রে এসে বুঝতে পারি এই কাজেও প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এলাকার মহিলাদের এই কাজে যুক্ত করি। আমার আশা ছিল মহিলারা ঘরের কাজের পাশাপাশি নিজেরা রোজগার করুক। আমার কাজের রাষ্ট্রপতির স্বীকৃতি মিলবে বলে কখনো ভাবি নি। শুনে আমার খুব গর্ববোধ হচ্ছে।