আরজি করে দুষ্কৃতী হামলার নেপথ্যে কারা, উদ্দেশ্যে কি, প্রমাণ লোপাট কি? উঠছে প্রশ্ন

Newsbazar24:আর জি করে উদীয়মান তরুণী চিকিৎসকের উপর পাশবিক অত্যাচার এবং খুনের প্রতিবাদে যখন সারা রাজ্য জুড়ে বিচারের দাবিতে স্বাধীনতার মধ্যরাতে শিলিগুড়ি থেকে সুন্দরবন, বাঁকুড়া পুরুলিয়া পর্যন্ত রাস্তায় লাখো লাখো মানুষের ঢল। আর সেই মিছিল চলাকালীন হাসপাতাল চত্তর রণক্ষেত্রে পরিণত হল বেশ কিছু দুষ্কৃতীদের হাতে। পুলিশের সামনেই ব্যারিকেড ভেঙে ভাঙচুর চালানো হল হাসপাতালের ইমারজেন্সি ওয়ার্ল্ডসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে। পুলিশ অসহায় নীরব দর্শকের ভূমিকায় বাদ গেল না সংবাদ মাধ্যমেও। আমজনতার প্রশ্ন স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদের দিক থেকে নজর ঘোরাতেই কি দুষ্কৃতীদের অবধি ভাঙচুর করতে দেওয়া হল। পুলিশ পালিয়ে চলে গেল। পুলিশের ভূমিকা এবং পুলিশের গবিভাগের ব্যর্থতার দিকেই আঙুল উঠল। হামলাকারীদের হাত থেকে রেহাই পাননি, ধরনায় বসা জুনিয়র চিকিৎসকেরা তাদের মঞ্চ ভেঙে দেওয়া হলো এমনকি বেশ কিছু ডাক্তার কেউ মারধর পর্যন্ত করা হল।
যদিও আর জি করে এই হামলার ঘটনায় ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলায় আহত হয়েছেন ডিসি নর্থ। ঘটনায় বেশ পুলিশকর্মী অল্পবিস্তর আহত হয়েছ।
এই হামলাকারীদের উদ্দেশ্য কি ছিল? শুধুমাত্র এই ডাক্তারদের ভয় দেখানোর জন্য হামলা না কি অন্য কিছু উঠছে প্রশ্ন?
আর জি করের আবাসিক পড়ুয়া এক চিকিৎসক জানান, হাতে লাঠি,রড নিয়ে ব্যারিকেড ভেঙে তাঁদের উপর চড়াও হয় ভাঙ্গা হয় ইমারজেন্সি ওয়ার্ড। প্রমান লোপাটের উদ্দেশ্যে এক মব হামলা করে বলে দাবি তাদের। এরা শাসকদলের আশ্রিত গুন্ডা বলে তার অনুমান। পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় ছিল এমনকি নিজেরা নিজেদের লুকোতে ব্যস্ত ছিলেন বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের। তারা তাদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়নের দাবি জানিয়েছেন।
হাসপাতালের এক কর্মী বলেন, প্রায় এক থেকে দেড়শ লোক লাঠি লোহার রড নিয়ে ভিতরে ঢুকে হামলা চালায়। আমরা ভয়ে পালিয়ে যাই। হাতুড়ি, লোহার রড নিয়ে হামলা চালায়। তার পর সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে যাই। আমাদেরও আগে পুলিশ পালিয়ে যায়। হামলার সময় ৫-৬ জন পুলিশ ছিলেন। তাঁরাও বাঁচতে পালিয়ে যান।
বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে পৌঁছে দেখা যায়, এমার্জেন্সি ওয়ার্ডের প্রবেশ পথে দু’টি কোলাপসিবল গেট ভেঙে ফেলা হয়েছে। হামলাকারীরা দানবীয় আক্রমণে গেট বেঙে দেন বলে জানা গিয়েছে। এমার্জেন্সি ওয়ার্ডের শুরুতেই HDU ওয়ার্ড রয়েছে। পর পর শয্যা রয়েছে সেখানে। জীবনদায়ী বিভিন্ন যন্ত্রপাতি রয়েছে, যার উপর তাণ্ডব চালানো হয়। HDU ওয়ার্ডের দেওয়ালে যে ঘড়ি রয়েছে, ১২-৩৭ মিনিটে সেই ঘড়িকে থেমে থাকতে দেখা যায়। অর্থাৎ অর্থাৎ ওই সময়ই হামলা ঘটে।
বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায় ছবিতে দেখা যায়, রাস্তার ধারে গাড়ি-স্কুটার পর্যন্ত উল্টে পড়ে আছে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রায় ৪০/৫০ জন হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে প্রথমে চিকিৎসকদের আন্দোলন মঞ্চ ভাঙছে। মারধর করা হচ্ছে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের। তার পর ভিতরে ঢুকে চলে ভাঙচুর।
এমার্জেন্সি ওয়ার্ডের শুরুতেই এইচডিইউ ওয়ার্ডের শয্যা জীবনদায়ী বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ভাঙচুর করা হয়। তছনছ অবস্থা আর জি কর হাসপাতালের। ট্রলি, শয্যা, টেবিল, চেয়ার, কিছুই প্রায় আস্ত নেই। তথ্য প্রমাণ নষ্ট করতেই পরিকল্পিত ভাবে এই হামলা চালানো হয় কি না, উঠছে প্রশ্ন।