আমাদের মৃত্যু পরোয়ানা লিখে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী’ চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের দাবি, পুনরায় পরীক্ষা দেওয়ার প্রশ্নে

Newsbazar24:সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন করে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে ৩১শে মের মধ্যে। মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে নিজেদের মৃত্যু পরোয়ানা বলে দাবি চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকরা।
চাকরিহারাদের প্রশ্ন, “আদালত তো অযোগ্যদের টার্মিনেট করার কথাও বলেছিল। তাহলে সেক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ মানা হল না কেন? এটা কি আদালত অবমাননা নয়? নাকি অযোগ্যদের বাঁচাতেই সরকার যোগ্য তালিকা প্রকাশ করছে না?”
মুখ্যমন্ত্রী এদিন আরোও জানান, ৩০ মে বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। অনলাইনে আবেদনের সময়সীমা ১৬ জুন পর্যন্ত। প্যানেল প্রকাশ ১৫ নভেম্বর। কাউন্সেলিং ২০ নভেম্বর। লিখিত পরীক্ষা, স্কুটিনি, প্য়ানেল, মেধাতালিকা প্রকাশ,ইন্টারভিউ, সবই আমরা করে নেব। ২৪,২০৩টি শূন্যপদের জন্য নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্টে নির্দেশে যে পদগুলি খালি হয়ে আছে। এছাড়াও নবম-দশম শ্রেণিতে আরও ১১, ৫১৭ শূন্যপদ আমরা তৈরি করেছি। এবং ৬,৯১২ দ্বাদশ ও একাদশ শ্রেণিতে বাড়তি পদও করা হয়েছে। ৬৭১ গ্রুপ সি এবং ১ হাজার গ্রুপ ডি-র জন্য করা হয়েছে। সবমিলিয়ে শূন্যপদ ৪৪, ২০৩’।
প্রথম থেকেই চাকরিহারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকশিক্ষিকাদের দাবি ছিল, তাঁরা আর পরীক্ষায় বসবেন না! পরীক্ষা না-দিয়ে কী ভাবে তাঁদের চাকরি বহাল থাকে তা দেখুক সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর তাদের বক্তব্য, ”আশঙ্কা যা করেছিলাম, সেটাই সত্যি হল। আমরা চাইনি সরকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করুক। কিন্তু আজ যে ভাবে বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তির কথা জানানো হল, তা দেখে মনে হচ্ছে সরকারের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে।” তার মতে, ‘বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না-করে পুনর্বিবেচনা আবেদনের দিকে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারত সরকার।’
যদিও মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন,’সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে আমরা সবটাই রেডি করে রাখছি। যদি রিভিউয়ে বলে যে পরীক্ষা দিতে হবে না, লিস্ট বাতিল করা হল না, তখন সুপ্রিম কোর্টের কথা শুনব।” তবে যদি পুনর্বিবেচনার আবেদনে ‘ইতিবাচক’ নির্দেশ না-আসে, তা হলে পরীক্ষা দিয়ে চাকরিতে পুনর্বহাল হওয়ার রাস্তা খোলা রাখতেই বিজ্ঞপ্তি জারি করছে সরকার।
মুখ্যমন্ত্রীর মঙ্গলবারের ঘোষণা ২০১৬ সালের এসএসসি পরীক্ষায় চাকরি পাওয়া এবং পরবর্তীতে চাকরি হারানোদের জন্য আরও বড় জটিলতার সৃষ্টি করবে বলে মনে করছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর কথায়, ”উনি এই ঘোষণা করে আরও বড় জটিলতার মধ্যে ফেললেন। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, অযোগ্যদের চাকরি বাতিল করে তাঁদের থেকে টাকা ফেরত নিতে হবে। নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সেটাও সমান্তরাল ভাবে করার কথা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সে ব্যাপারে কিছু বলেননি। পাশাপাশি তিনি শূন্যপদে নিয়োগের কথা বলেছেন। এর ফলে ২০১৬ সালের চাকরিপ্রাপকেরা আরও বড় আইনি জটিলতায় পড়বেন বলেই আমার অভিমত।”

‘