Malda:প্রায় ৪৫ বছর পর মালদহে বিরল প্রজাতির অস্ট্রেলিয়ান গ্রাস আউল,দেখতে কেমন এই ঘাস পেঁচা?

Newsbazar24:: মালদহে অস্ট্রেলিয়ান গ্রাস আউল। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি। বাংলায় যাকে বলা হয়, ঘাস পেঁচা। সাধারণ মানুষের হয়তো এর সাথে পরিচিতি নেই। কিন্তু পক্ষী বিশারদরা এই নামের সাথে পরিচিত। প্রায় ৪৫ বছর পর এ রাজ্যের মালদহ জেলার গঙ্গার নদীর চরে দেখা পাওয়া গেল এই বিরল প্রজাতির প্যাঁচার।মালদহ জেলা বনদপ্তরের পক্ষ থেকে পাখি সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে মালদহের গঙ্গার চরে।গত ৯ই মার্চ বন দপ্তরের কর্মীদের সহায়তায় পাখি পর্যবেক্ষকদের একটি দলের ক্যামেরায় ধরা পড়েছে এই অস্ট্রেলিয়ান বিরল প্রজাতির পেঁচা।

মালদা বন বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত চার মাসব্যাপী পাখি সমীক্ষার ফলে এটি আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে। মালদা বন বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত জরিপের সময়, মালদা গ্রিন পিপলস ইন্ডিয়া এবং কলকাতার বার্ডওয়াচার্স সোসাইটির সহযোগিতায়, সন্দীপ দাস, স্বরূপ সরকার এবং সৈকত দাসের সাথে ৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে পক্ষী প্রেমী সন্দীপ দাস প্রথম এই প্রজাতির প্যাঁচার ছবি রেকর্ড করেছেন।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গেছে বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় এই অস্ট্রেলিয়ান গ্রাস আউল সাধারণত এশিয়া মহাদেশে দেখা যায়। ভারতবর্ষের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে বর্তমানে এই পাখি দেখা গেলেও পশ্চিমবঙ্গে তেমনভাবে এই পাখির খোঁজ মেলেনি এতদিন। বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮০ সালে পশ্চিমবঙ্গের শান্তিনিকেতনে শেষবার এই পাখি দেখা গিয়েছিল। এছাড়াও এর আগে ১৯২০ সালে জলপাইগুড়ি জেলায় এই পাখি দেখা গিয়েছিল। তবে সেই সময়কার কোন ছবি কোথাও বর্তমানে নেই।
প্রতিবছর বন দপ্তর পরিযায়ী পাখির সমীক্ষা করে থাকে গঙ্গা তীরবর্তী অঞ্চলে। এই বছর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে এই সমীক্ষা চালাচ্ছিল মালদা বন দপ্তর। ৯ মার্চ প্রথম এই পেঁচার ছবি ধরা পড়ে। ১১ মার্চ পুনরায় সেই এলাকায় গিয়ে আরো দুইটি ঘাস পেঁচার ছবি তুলতে সক্ষম হন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা। সমীক্ষার দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা তথা পক্ষী বিশেষজ্ঞ শুভাশিস সেনগুপ্ত বলেন, ৪৫ বছর পর এই পাখি দেখা গেল। বন দপ্তর জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমরা কথা বলে এই পাখিটি যেন সংরক্ষণ করে রাখা যায় সেই ব্যবস্থা করার আবেদন জানাবো।
জেলা বনদপ্তরের আধিকারিক (ডিএফও)জিজু জেসফার জানান, পরিযায়ী পাখিদের সমীক্ষা চলাকালীন ৯ থেকে ১১ মার্চ বন বিভাগ ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার একটি যৌথ দল বিভিন্ন প্রজাতির পাখিদের অবস্থান এবং উপস্থিতি পুনঃনিশ্চিত করার জন্য গঙ্গার চর পরিদর্শন করেন। সেখানেই এই ধরনের বিলুপ্ত প্রজাতির পাখি দেখা মিলেছে। বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এই পাখির সুরক্ষা এবং সংরক্ষণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।