Malda news:দুয়ারে সরকার শিবিরে মালদহ জেলা প্রশাসন মানবতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করল

Newsbazar 24: মালদহ জেলা প্রশাসন এবার এই দুয়ারে সরকার শিবিরে মানবতার এক উল্লেখযোগ্য নজীর তৈরি করল। দুয়ারে সরকারের মোবাইল ক্যাম্প নিয়ে প্রত্যন্ত গ্রামে পৌঁছল জেলা প্রশাসন। তড়িঘড়ি এক দৃষ্টি হীন পরিবারের বাড়ি গিয়ে সদস্যদের সাথে কথা বলে সমস্ত রকম সরকারি পরিষেবা প্রদান করল জেলা প্রশাসনের কর্তারা।জেলাশাসক সহ প্রশাসনিক কর্তারা এই গ্রামের মানুষের নানান সমস্যা অভিযোগ খতিয়ে দেখলেন। দ্রুততার সাথে সেই সমস্যার সমাধানে তৎক্ষণাৎ উদ্যোগ গ্রহণ করলেন জেলাশাসক। সোমবার মালদার রতুয়া ২ ব্লকের সম্বলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ইসলামপুর গ্রামে পৌঁছয় একঝাঁক জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া, অতিরিক্ত জেলাশাসক বৈভব চৌধুরী, রতুয়া দুই ব্লকের বিডিও নিশিত কুমার মাহাতো, পুখুড়িয়া থানার ওসি গৌতম চৌধুরী সহ সরকারি আধিকারিকরা। রাজ্য সরকারের সার্বিক উন্নয়ন পৌঁছে দিতে প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে চলছে দুয়ারে সরকার। এই দুয়ারে সরকারের একটি অন্যতম অংশ মোবাইল ক্যাম্প। যার মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে পরিষেবা প্রদান করছে প্রশাসনের আধিকারিকরা। ইসলামপুর গ্রামে বাবলু হকের পরিবারের পাঁচজন সদস্যই শারীরিক ভাবে দৃষ্টিহীন।চোখে দেখতে না পাওয়ায় তাঁরা কোনও কাজও করতে পারেন না। ভিক্ষাবৃত্তি করেই পেট চলে। বিষয়টি জানতে পেরেই ব্যবস্থা নেন জেলা শাসক। এদিন পরিবারটির কাছে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে জেলাশাসক নীতীন সিংহানিয়া সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা পৌঁছে যান তার বাড়িতে। এপ্রসঙ্গে জেলাশাসক জানান, দৃষ্টিহীন এই পরিবারের অর্জনের মধ্যে দুইজনের মানবিক ভাতা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ছিল না। আজই তাদের সেই প্রকল্প যুক্ত করা হল। অনেক কিছু প্রকল্পের পরিষেবা তারা পাচ্ছেন। যে সমস্ত পরিষেবা গুলি তারা পাচ্ছেন না সেগুলিতে যুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ির যে ইলেকট্রিকের সমস্যা তা দূর করতেও প্রশাসনিকভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের চোখের আলো প্রকল্পের অধীনে এই দৃষ্টিহীন পরিবারের সমস্ত সদস্যের পর্যাপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই পরিবারের বাসস্থান এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রামের মানুষের পানীয় জল ও রাস্তার যা সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে বলে জানালেন জেলা শাসক।
পাশাপাশি বাবলু হক জানান, আমার বাড়ির সবাই দৃষ্টিহীন। গ্রাম ঘুরে ভিক্ষা করি। আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। শুধু এই বাড়িটাই আছে। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সাহায্যে পেয়ে সত্যিই উপকৃত হলাম। জেলা প্রশাসন সহ রাজ্য সরকারকে তিনি ধন্যবাদ জানান সেখান থেকে ফিরে সোমবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনিক ভবনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান,মালদা জেলায় ষষ্ঠ দফার দুয়ারে সরকার কর্মসূচির সোমবার ১০ এপ্রিল পর্যন্ত পর্যন্ত ২ লক্ষ ৩২ হাজার ৫৮০ উপভোক্তা বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে হাজির হয়েছিলেন। মোট ৩ হাজার ৩ শত ৩ টি শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছিল জেলার ১৫ টি ব্লকে। । বিগত ১লা এপ্রিল থেকে এই দুয়ারে সরকার ক্যাম্প চলছে। শনি রবিবার ছুটির দিন থাকা সত্ত্বেও বেশ কিছু ব্লকে বিডিওরা নিজেদের উদ্যোগে এই ক্যাম্প চালু রেখেছিলেন।
তিনি আরো জানান দুয়ারে সরকার ষষ্ঠ দফার বুয়ারে সরকার শিবিরে ৩৩ টি প্রকল্পের সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে তার মধ্যে এবার চারটি নতুন স্কিম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে মেধাশ্রী প্রকল্প, ভবিষ্যৎ ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প, বিধবা ভাতা প্রকল্প,ও ড্রিপ এবং স্প্রিংকলার সেচ প্রকল্প। ইতিমধ্যে উপভোক্তাদের পরিষেবা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে এবং চলবে আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত।
এই শিবির গুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে চলে তার জন্য একটি জেলাগত টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে এবং রাজ্য থেকে দুজন অবজারভার নিযুক্ত করা হয়েছে এই শিবিরগুলোকে মনিটরিং করার জন্য। জেলার বিভিন্ন ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকরা একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে বয়স্ক মানুষদের জন্য, বাচ্চা সহ মায়েদের জন্য আলাদা কাউন্টার খুলেছেন।
এই সিনিয়র সিটিজেন ক্যাম্পে ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার অপেক্ষায় বসে না থেকে ইতিমধ্যে বিভিন্ন ব্লকের আধিকারিকরা বেশ কিছু সমস্যার সমাধান করে দিয়েছেন। এতে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ খুবই খুশি এবং রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে তারা সাধুবাদ জানিয়েছেন।