Malda news:আত্মকেন্দ্রিক সমাজে স্বামীহারা এক বয়স্ক ভদ্রমহিলার নিঃস্বার্থ পশু এবং পরিবেশ প্রেম

Newsbazar24:- একদিকে যখন বর্তমান সমাজে মানুষ দিনে দিনে প্রচন্ড আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছে। অন্যদিকে ঠিক সেই সময় স্বামীহারা এক বয়স্ক ভদ্রমহিলার নিঃস্বার্থ পশু এবং পরিবেশ প্রেম সমাজে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে।
পশু,পাখি ও পরিবেশ প্রেমের এক মূর্ত প্রতীক এই ভদ্রমহিলা। তার নাম বানী রায়। নিজে রান্না যা খান তাই নিজের হাতে খাইয়ে দেন তাদের। পশু-পাখিদের ভিড়ে বাড়ি কার্যত ছোট্ট চিড়িয়াখানায় পরিনত হয়েছে। নিজের হাতে তাদের সেবা সেবা শুশ্রূষাও করেন। স্বামীও ছিলেন পশুপ্রেমী। স্বামীর মৃত্যুর পরেও বানী দেবী নিয়মিত পশু পাখিদের খাওয়াচ্ছেন। পশু, পাখিরাও দিব্যি তার হাতে খাচ্ছে। মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের বাসিন্দা এই বাণী রায়।স্বামী মনি মোহন রায় মারা গেছেন। হরিশ্চন্দ্রপুর হাসপাতালের ক্লার্ক ছিলেন। দুই মেয়ে এক জন বিবাহিত এবং অন্যজন কলকাতায় পড়ে। স্বামী স্ত্রী দুজনেই ছিলেন পশুপ্রেমী। স্বামীর মৃত্যুর পরেও অক্ষত স্ত্রীর পশুপ্রেম।
বাণী রায়ের বাবা কোচবিহারের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ রায় ১৯৭৭ সালে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার ওসি থাকার সূত্রে উনি হরিশচন্দ্রপুরেই বড়ো হয়েছেন। হরিশ্চন্দ্রপুর কিরণবালা বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। পশু পাখিদের খাওয়ানোর জন্য প্রত্যেক দিন তিনি নিজের হাতে রান্না করেন এবং নিজের হাতে খাইয়ে দেন। পাড়ার কুকুর বিড়াল থেকে শুরু করে কাক শালিক প্রত্যেকই এখন বাণী দেবীর সঙ্গী। তাদের জন্য প্রত্যেক দিন মাছ-মাংস রান্না হয়। তাদের ভিড়ে বাড়ি যেন ছোট্ট খাটো চিড়িয়াখানা। একটি ওষুধের দোকান রয়েছে বাণী দেবীর। একা হাতে সব কাজ সামলেও সময় মতো পশু পাখিদের খাওয়ান।কুকুর বিড়ালদের অসুখ হলে সেবা শুশ্রূষাও করেন বাণী দেবী। এই পশু পাখিদের নিয়েই অতিবাহিত হচ্ছে বাণী দেবীর জীবন। তিনি শুধু পশুপ্রেমী নন পরিবেশ প্রেমীও বটে। তাই তিনি পাড়ায় বৃক্ষরোপন করেন এবং সেইসব বৃক্ষ পরিচর্যাও করেন। অনেকেই অকারণে পাড়ার কুকুর বিড়ালদের উপর অনেকে অত্যাচার করে বলে তার অভিযোগ করেন বাণী দেবী। অবলা জীবদের প্রতি অত্যাচার হোক বা গাছ কেটে নেওয়া তিনি একদম সহ্য করতে পারেন না।
এ বিষয়ে পশুপ্রেমী বাণী রায় বলেন, আমার স্বামীও খুব পশু প্রেমী ছিলেন। আমার তো ওদের নিয়েই দিন কাটে। ওদের জন্য রান্না করি এবং নিজের হাতে খাইয়ে দি। ওদের অসুখ করলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করি। কিন্তু পাড়ার মানুষজন অকারণে অত্যাচার করে কুকুরদের উপর। আমার সেটা খুব রাগ হয় এবং একদম সহ্য করতে পারি না।