মালদা:তৃণমূলের অঞ্চল চেয়ারম্যানের মৃত্য ঘিরে রহস্য । দলের বৈঠক থেকে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। পরে জানা যায় দুর্ঘটনা হয়েছে তাঁর। পরিকল্পনা করে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেছে মৃত তৃণমূল নেতার পরিবার। মৃত নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। পুলিশ কিছুই করেনি বলে পরিবারের অভিযোগ।
অবশেষে ১১ দিনের লড়াইয়ের পর কলকাতার একটি হাসপাতালে বুধবার মৃত্যু হয় মালদা জেলার হবিবপুর ব্লকের ঋষিপুরের অঞ্চল তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারম্যান শিবানন্দ শর্মার। আজ বৃহস্পতিবার তাঁর নিথর দেহ গ্রামে ফিরতেই গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নামে। এরই সঙ্গে বিক্ষোভে উত্তাল ওঠে গ্রাম।অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা।
প্রসঙ্গত, দিনকয়েক আগে দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন কালীতলা এলাকার বাসিন্দা, তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল চেয়ারম্যান শিবানন্দ শর্মা। তবে ওইদিনই তৃণমূল নেতার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পনা করে খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল তাকে। গুরুতর আহত অবস্থায় শিবানন্দকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় কলকাতার হাসপাতালে পাঠানো হয় তাঁকে। সেখানেই মৃত্যু হয় এই তৃণমূল নেতার। যদিও এই খবর এর আগে আমাদের এই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল।
বুধবার ময়নাতদন্তের পর বৃহস্পতিবার তৃণমূল নেতার দেহ গ্রামে ফিরতেই উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন গ্রামবাসীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। পৌঁছান জেলা তৃণমূল সভাপতি রহিম বক্সিও। মৃত শিবানন্দের ভাই রমানন্দ শর্মা বলেন, ‘আমার দাদা পুরোহিত ছিলেন। গোটা গ্রাম তাঁর যজমান। পুলিশ খতিয়ে দেখুক কী করে মারা গেলেন তিনি। দাদার দুই নাবালক সন্তান। তাঁদের এখন কী হবে? বৌদিকেই বা কে দেখবে! দল তাঁদের দায়িত্ব নিক।’
মৃত শিবানন্দের স্ত্রী এদিন দাবি করেন, ‘ওইদিন দলের মিটিং আছে বলে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। অনেক রাত হয়ে যাওয়ার পরেও বাড়ি না ফেরায় আমি বারবার ফোন করছিলাম। উনি একবারও ফোন ধরেননি। ফোন ধরছিলেন অন্য নেতারা। পরে জানতে পারি ওঁর দুর্ঘটনা হয়েছে। ওকে পরিকল্পনা করে মেরে ফেলা হয়েছে।’
তৃণমূলের জেলা সভাপতি রহিম বক্সি বলেন, ‘গ্রামের মানুষের খুবই কাছের মানুষ ছিলেন শিবানন্দ। তাঁর এভাবে চলে যাওয়া কেউ মেনে নিতে পারছেন না। ওঁর দুটি নাবালক সন্তান রয়েছে। স্ত্রী রয়েছে। কীভাবে তাঁদের দেখভাল করা যায় আমরা নিশ্চই দেখব। পুলিশও তদন্ত করছে। নিছক দুর্ঘটনা, নাকি খুন নিশ্চই সামনে আসবে।’ জেলা সভাপতির আশ্বাসের পর তাঁর দেহ অন্ত্যেষ্টির জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।