Malda news:বালি, কয়লা, পাথর খাদানের সিন্ডিকেট গ্রুপ এক কোটি টাকা তোলা কালীঘাটে পাঠাতেন, শাসকদলকে তোপ সেলিমের

Newsbazar 24:সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মোহম্মদ সেলিম সোমবার দুপুরে মালদহে দলীয় কর্মসূচিতে এসে সিপিএমের জেলা পার্টি অফিস মিহির দাস ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সঙ্গে ছিলেন জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র সহ অন্যান্য সিপিএম নেতৃত্ব। তিনি এদিন বিভিন্ন ইস্যুতে
বিজেপি ও তৃণমূলকে চাচা ছোলা ভাষায় আক্রমণ
করেন ৷এদিন তিনি আজ রাজ্য ও কেন্দ্রের শাসকদলের উদ্দেশ্যে একের পর এক তোপ দাগেন৷ বালি, কয়লা, পাথর খাদানের একটা সিন্ডিকেট গ্রুপ বেসরকারিভাবে তোলা আদায় করে আসতো। আর তার থেকে এক কোটি টাকা কালীঘাটে যেত। এর পিছনে প্রত্যক্ষ কিছু আমলাদের মদত রয়েছে। শুধু শাসক দল তৃণমূলই নয়, বিজেপি এবং আরএসএসের বিরুদ্ধেও একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে মহম্মদ সেলিম বলেন, সিপিএম দুর্নীতি এবং দুষ্কৃতির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে আসছে। যার ফলস্বরূপ এখন নিয়োগ দুর্নীতি থেকে শুরু করে নানান কেচ্ছা কেলেঙ্কারি সামনে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। চিটফান্ডের মতোই ওদের নেটওয়ার্কটা কাজ করছে। পার্থবাবু ধরা পড়েছিলেন, ওটা তো প্রথমেই বলেছিলাম হিমশিলার চূড়া মাত্র । আরো অনেক কিছু বাকি আছে। আর মানুষ এখন সেই বাকি অংশগুলো দেখতে পাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মানুষের টাকা রাজ্যের তৃণমূল সরকার অপব্যবহার করছে। দুই মাস ধরে কার্নিভাল চললো সরকারি টাকা খরচ করে। খেলা হবে বলে মানুষের নজর ঘুড়িয়ে দেওয়া হলো। কোটি কোটি টাকা তুলে তা নয় ছয় হচ্ছে। যার একটা ভাগ কালীঘাটে যাচ্ছে । পঞ্চায়েত থেকে রাজ্য পর্যন্ত দুর্নীতিতে ভরে গেছে। তাই এখন সিপিএম দুর্নীতি এবং দুষ্কৃতির বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন শুরু করেছে।
মহম্মদ সেলিম আরো বলেন, আমাদের নীতি হল পার্টিকে একমুখী করা। পঞ্চায়েত নির্বাচন আসন্ন। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হতে চলেছে বলে আমরা মিটিং মিছিলের দিকে না গিয়ে, বিভিন্ন বুথ কমিটি গুলিকে ছোট ছোট সভা করার জন্য জেলা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আমাদের কিছু রাজ্য নেতৃত্ব বিভিন্ন জেলা ঘুরছেন এবং দলীয় নেতানেত্রী, কর্মীদের সঙ্গেও পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রসঙ্গে করছেন বৈঠক করছেন। সাগরদিঘির উপনির্বাচনে মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছে এভাবেই সুফল মিলবে।
এদিন কাশ্মীর ফাইলস প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিম বলেন, পশ্চিমবঙ্গে নাকি ৩০০টা কাশ্মীর আছে বলে এই ছবির প্রযোজক মন্তব্য করেছেন। অথচ বসন্ত উৎসবে এসে যেভাবে মেলবন্ধন নিয়ে চলার কথা সেখানে তা না করে আরএসএসের প্ররোচনায়  বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করা হলো। আমরা বলতে চাই সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে মানুষের মন পাওয়া যায় না। তবে এই দলটা এখন দুর্নীতিতে ভরে গেছে। একদিকে রাজ্যের শাসক দল দুর্নীতি ও দুষ্কৃতীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। অপরদিকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কোন ডকুমেন্টারি তৈরি করতে গেলেই তাকে আইনের জালে ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এভাবে একটা সরকার চলতে পারে না।
কটাক্ষ করেন মমতা-শুভেন্দু আঁতাত নিয়ে৷ আজ তাঁর আক্রমণ থেকে রেহাই পাননি বিধানসভা ও লোকসভার স্পিকার থেকে শুরু করে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও৷
তিনি আরও বলেন, মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজ চালাচ্ছি৷ তাতে ফলও মিলেছে৷ ভয় আর সন্ত্রাসের পরিধি থেকে বেরিয়ে এসে মানুষ এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে৷ এভাবে কাকদ্বীপ থেকে কোচবিহার পর্যন্ত মানুষকে একজোট করতে পারলেই আমরা রাজ্য থেকে চোরদের তাড়াতে পারব৷
সেলিম বলেন, ‘আজ যারা বিজেপির নেতা, তারা একসময় তৃণমূলে ছিল৷ গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তারা মমতার কথায় ভোট লুট করেছে৷ মালদা, মুর্শিদাবাদ, দিনাজপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তো টিকিট বিলিতেও বাক্স ভরতি টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন৷
তিনি আরও বলেন, বিধানসভা কিংবা লোকসভায় এখন দলত্যাগ বিরোধী আইন লাগু হয় না৷ দুই স্পিকারই চুপ করে থাকেন৷ বিধানসভার স্পিকার বর্তমানে সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসকে শপথ গ্রহণ করানো নিয়ে গরিমসি করে চলেছেন। এই চেয়ারে বসে তিনি তৃণমূলে চামচাগিরি না করে সংবিধান মেনে বিধানসভা পরিচালনা করুন এটাই আমাদের দাবি।