Newsbazar 24:সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণার সোদপুরের নাটাগড়, মহেন্দ্রনগরের বাসিন্দা ভাস্কর পাল গানিতিক সংখ্যাগুলিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন যুগের ১০০ টি ভিন্ন লিপিতে লিখে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। তিনি ১ ঘন্টা ৯ মিনিট ২৮ সেকেন্ডে ১০০ টি ভিন্ন স্ক্রিপ্টে গাণিতিক সংখ্যা লিখে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড বুক অফ রেকর্ডস তাঁর এই কৃতিত্বকে বিশ্বরেকর্ড হিসেবে নথিভুক্ত করে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। ভাস্কর পাল সুন্দরবনের সন্দেশখালির সুকদোয়ানী গাববেড়িয়া দয়ালচাঁদ বিদ্যাপীঠের গনিত শিক্ষক। গনিত বিষয়ে বিশ্বখ্যাতি অর্জনের লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন যুগের গাণিতিক লিপি সংগ্রহ করে, সেগুলি লেখার বিষয়ে দক্ষতা তৈরি করেন। একনিষ্ঠ শ্রম, অধ্যবসায়, একাগ্রতা ও ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘদিনের অনুশীলনের মাধ্যমে তিনি এই কৃতিত্ব অর্জন করেন। প্রাচীন গ্রীস, রোম, পারস্য, মিশর, চীন, ব্যাবিলন, সুমেরীয়, মায়া সভ্যতা থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের তামিল, তেলেগু, কানাড়া, মালয়ালম, ওড়িয়া, গুজরাতি, পাঞ্জাবী, মণিপুরী, লেপচাসহ ১০০ টি ভিন্ন লিপিতে গানিতিক সংখ্যাগুলিকে তিনি অনায়াসে লিখতে পারেন। গনিতচর্চার ইতিহাসে এমন কৃতিত্ব বিশ্বে এই প্রথম।সর্বাধিক সংখ্যক লিপিতে গাণিতিক সংখ্যা লেখার জন্য ভাস্কর পালের বিশ্ব রেকর্ডটি তার জ্ঞান, দক্ষতা এবং আবেগের একটি বিস্ময়কর প্রমাণ। অল্প সময়ের মধ্যে ১০০ টি ভিন্ন স্ক্রিপ্টে প্রদর্শন করার ক্ষমতা গণিত এবং ভাষাবিজ্ঞান উভয় ক্ষেত্রেই তার ব্যতিক্রমী দক্ষতা প্রমাণ করে। ভাস্কর পলের এই কৃতিত্ব মানুষের বুদ্ধিমত্তার শক্তি এবং আমরা যখন বৈচিত্র্যকে আলিঙ্গন করি এবং প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করি তখন যে সীমাহীন সম্ভাবনার উদ্ভব হয় তার একটি অনুস্মারক হিসাবে কাজ করে। ভাস্কর বাবু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত গনিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে শিক্ষকতার পেশায় যোগদান করেন।
এ বিষয়ে ভাস্কর পাল জানান,”নিজের বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের গনিত বিষয়ে আরও উৎসাহিত করতে আমি এই উদ্যোগ গ্রহণ করি। পাশাপাশি বিশ্বের দরবারে ভারতবর্ষের সম্মান বৃদ্ধির বিষয়টি আমার মাথায় ছিল। ছাত্রজীবন থেকেই ভারতীয় গনিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনকে নিজের গুরু বলে মানতাম। তাঁর আদর্শেই এগিয়ে চলেছি। লিপি হল যেকোনো দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ঐতিহাসিক উপাদান। আমার এই কাজ বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে ঐক্যের সন্ধান করতে সমর্থ হয়েছে, বিশ্ব সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটাতেও ভীষণভাবে সফল হয়েছে।” তাঁর এই সাফল্যে পাড়ার প্রতিবেশী থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সকলেই গর্ববোধ করছেন।