Newsbazar24: মা কালী কে কাঁধে নিয়ে দৌড়। একটি বা দুটি নয় একসাথে আটটি কালি নিয়ে দৌড়।
রাজার প্রচলিত রীতি মেনে মালদার চাঁচলের মালতীপুরে আয়োজিত হয় ঐতিহ্যবাহী কালী দৌড় প্রতিযোগিতা। মালাতিপুর এলাকার আটটি কালী প্রতিমাকে কাঁধে নিয়ে ছোটেন এলাকাবাসী।রাজ আমলের ঐতিহ্য মেনে সোমবার সন্ধ্যায় ৩০০ বছরেরও বেশি প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী কালী দৌড় অনুষ্ঠিত হল মালদহের চাঁচোলের মালতীপুরে।
জানা যায়,আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে, মালদার চাঁচলের তৎকালীন রাজা শরৎচন্দ্র রায় চৌধুরী চালু করেছিলেন এই কালী দৌড় প্রতিযোগিতা।
দীপান্বিতা অমাবস্যায় অথাৎ কালী পূজোর পরের দিন কালী দৌড় প্রচলিত প্রথা মালতীপুরে। কিন্তু,কেন এই অভিনব কালী দৌড় প্রতিযোগিতা। মালদহের মালতিপুরে অনুষ্ঠিত আটটি কালীপুজো অংশ নেয় এই কালী দৌড়ে। কোন পুজোর উদ্যোক্তারা নিজেদের কালী নিয়ে কত দ্রুত ছুটে যেতে পারছেন, দৌড় চলার সময় কোন কালী প্রতিমা একেবারে অক্ষত থাকছে
কিন্তু কেন এই কালী দৌড়? কালী দৌড়কে ঘিরে রয়েছে এক আশ্চর্য কাহিনী। জানা যায়, সেই সময় মালদার মালতীপুর এলাকায় পুকুরের সংখ্যা ছিল একটিমাত্র। মালতিপুর কালীবাড়ী লাগোয়া পুকুরে বিসর্জন দেওয়া হত একাধিক কালী প্রতিমাকে। সে সময় চাঁচলের রাজা শরৎচন্দ্র রায় বাহাদুর সুষ্ঠুভাবে প্রতিমা নিরঞ্জন প্রক্রিয়া করার জন্য শুরু করেছিলেন এক প্রতিযোগিতা। দীপান্বিতা অমাবস্যা অর্থাৎ কালীপুজোর পরের দিন সন্ধ্যার সময় মালতিপুর বাজারে একটি কালী দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন তিনি। এই প্রতিযোগিতার নিয়ম ছিল এই কালী দৌড়ে যার কালী প্রতিমা অক্ষুন্ন থাকবে, সেই প্রতিমাকেই প্রথম বিসর্জন দেওয়া হবে কালী দিঘিতে। সেই দৌড়ের রীতি চলে আসছে।
বর্তমানে রাজা নেই কিন্তু রাজার প্রচলিত রীতিনীতি আজও অব্যাহত মালতিপুরে। সোমবার সন্ধ্যায় মালতীপুরে আয়োজিত হল এই ঐতিহ্যবাহী কালী দৌড় প্রতিযোগিতা। মালতিপুর এলাকার মোট আটটি কালী এই দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। এদের মধ্যে ছিলেন বুড়ি কালী, চুনকা কালী, বাজারপাড়া কালী, আম কালী, হ্যান্টা কালী, হাট কালী ও শ্যামা কালী। মালতীপুরের দুর্গা মন্দির প্রাঙ্গনে বিশাল মাঠে বেশি রাত পর্যন্ত চলে এই কালী দৌড় । দীর্ঘক্ষণ কালী দৌড়ের আনন্দ উপভোগ করতে দূর দূরান্ত এলাকা থেকে হিন্দু মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ সমবেত হন। এরপর অনুষ্ঠিত হয় স্থানীয় পুকুরে বিসর্জন পর্ব । এই কালী দৌড় প্রতিযোগিতা ঘিরে তৈরি হয় সম্প্রীতির আবহ।