news bazar24 : শারদীয় দুর্গাপূজার পর পূর্ণিমার দিনে যে লক্ষ্মী পূজা উদযাপন করা হয় তাকে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা বলা হয়ে থাকে ।
কিন্তু এই লক্ষ্মী পূজাকে কেন কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা বলা হয়?
শাস্ত্রবিদদের মতে কোজাগরী শব্দের উৎপত্তি ‘কো জগতি’ থেকে। এর আক্ষরিক অর্থ ‘কে জেগে আছে?’ কথিত আছে, কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার দিনে সম্পদের দেবী লক্ষ্মী স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে নেমে আসেন এবং সকলের আশীর্বাদ করতে ঘরে ঘরে যান। কিন্তু যার ঘরে দরজা বন্ধ থাকে , লক্ষ্মী সেই ঘরে প্রবেশ করেন না এবং দরজা থেকে ফিরে যান। তাই লক্ষ্মী পুজোর দিন রাতে জেগে থাকার প্রথা রয়েছে। এই পুজোর বিশেষত্ব হল সারা রাত লক্ষ্মীর আরাধনা করা। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, যে এই পূর্ণিমার রাতে জেগে অক্ষক্রীড়া অর্থাৎ পাশা খেলে তাকে লক্ষ্মীদেবী ধন দান করেন। অনেকে আবার কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার দিনে অন্যের বাগান থেকে ফল বা শস্য চুরি করে। ফলে লক্ষ্মী তাদের আশীর্বাদ করেন ,এমনই ধারনা আছে ।
“নিশীথে বরদা লক্ষ্মীঃ জাগরত্তীতিভাষিণী।
তস্মৈ বিত্তং প্রযচ্ছামি অক্ষৈঃ ক্রীড়াং করোতি যঃ।।”
লক্ষ্মী বিভিন্ন রূপে:
লক্ষ্মীর মূর্তির পূজা ছাড়াও এই দিনে লক্ষ্মীকে নানাভাবে কল্পনা করে পূজা করা হয়। যেমন
আদি লক্ষ্মী। এক্ষেত্রে ধান ভর্তি ঝুড়িতে লাল কাপড়ে দুটি লম্বা কাঠের লাঠি মুড়ে লক্ষ্মীর রূপ দেওয়া হয়।
আবার কলা পাতা দিয়ে তৈরি নৌকা লক্ষ্মী পূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এগুলোকে সপ্তাত্রী বলা হয়। বাণিজ্যিক নৌকার প্রতীক এই সপ্তরী। পুজোর সময় অনেকেই এই সপ্তরীতে টাকা, শস্য, হরিতকি, তরকারি, হলুদ রাখেন।
আবার লক্ষ্মীপূজা হয় সরাই পাতাচিত্রের সাহায্যে। যেমন ঢাকাই সারা, ফরিদপুরী সারা, সুরেশ্বরী সারা এবং শান্তিপুরী সারা।
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় লক্ষ্মীর ছবি আঁকা হয়। অঞ্চল ভেদে এই সরাইখানায় তিন, পাঁচ, সাতটি পুতুল আঁকা হয়। এতে লক্ষ্মী, জয়া এবং বিজয়ার সাথে লক্ষ্মী, রাধাকৃষ্ণ, দুর্গা পরিবার ইত্যাদি রয়েছে।
সুরেশ্বরী সরাইতে মহিষাসুরমর্দিনী আঁকা হয়েছে এবং সাবাহন লক্ষ্মী এই সরাইয়ের নীচে বাস করেন। আবার কলা পাতা ও লক্ষ্মীর মুখমন্ডল সম্বলিত পোড়া মাটির হাঁড়িতেও লক্ষ্মী রূপে পূজা করা হয়।
এটি চাল বা জল দিয়ে ভরা এবং লক্ষ্মী রূপে পূজা করার মাধ্যমে এটি ঘটে।