newsbazar 24::জননেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নারীদের সামাজিক উন্নয়নে একাধিক জনহিতকর প্রকল্প শুরু করেছেন । বিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় থেকেই “কন্যাশ্রী” থেকে শুরু করে “সবুজ সাথী”-র মতো প্রকল্পের সুবিধে পাচ্ছে ছাত্রীরা। কন্যাশ্রী প্রকল্প ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি লাভ করেছে।
অথচ তার এই উদ্যোগের সম্পূর্ণ বিপরীত পথে তারই দলের একশ্রেণীর কর্মীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে নাবালিকা বিয়ের চক্র চালানোর অভিযোগ উঠেছে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভাঙড় থানা এলাকার রাজাপুর গ্রামে। অভিযুক্ত তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী সাদ্দাম মোল্লা এবং মোসলেম মোল্লা। দুজনেই ভাঙড়ের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আরাবুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ। ২ বছর ধরে সাদ্দাম এবং মোসলেম মোল্লা নামে এই যুবক এই নাবালিকা বিয়ের চক্র চালাচ্ছে বলে অভিযোগ।
এই পুরো ঘটনার রহস্য ফাঁস করেছেন দিল্লীর এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ সাথী ট্রাস্ট ‘ । ট্রাস্টের সদস্যা রিয়া খান সরাসরি লিখিত অভিযোগ করেছেন,দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ভাঙ্গর থানা ও জেলা শাসককে। তার আরও অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে টাকার বিনিময়ে গ্রামের কিছু দালাল চক্রের সহযোগিতায় নাবালিকাদের রাতের অন্ধকারে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্কুল যেতে বাধা দেওয়া হচ্ছে । স্বাভাবিকভাবে অনেক মেয়েরা অল্প বয়সে গর্ভবতী হয়ে যাচ্ছে। বহুবার ১০৯৮ ও শিশু সুরক্ষা দফতরে অভিযোগ করেও কোন সুরাহা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই পুলিশের কাছে এফ. আই. আর এর করা হয়েছে । কারণ পুলিশ যখন আসছে তখন অভিযুক্তরা লুকিয়ে পড়ছে, ইতিমধ্যে দু’জনের নাম উল্লেখ করে ভাঙড় থানাকে জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি তিনি আরো জানান অন্ধকারে পিকনিক এর মত বিয়ের আয়োজন করে সেখানে পাত্র পাত্রী কে নিয়ে এসে বিয়ে দেওয়া হয়েছে বহু ক্ষেত্রে। যাতে মেয়ে গুলো ফের স্কুল যেতে পারে সেই ব্যবস্থা নিতে হবে প্রশাসনকে । এই প্রসংগে গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য রেজাউল মোল্লা ঘটনার কথা স্বীকার করে জানান,” এই কাজ বহুদিন ধরে হচ্ছে, আমরা বন্ধ করতে পারছি না,। এই প্রসঙ্গে অভিযুক্ত সাদ্দাম মোল্লা বলেন,” আমরা জুতোর কারখানায় সারাদিন কাজ করি রাত 10 টা তে ফিরি, আমাদের নাম দিয়ে কেউ চক্রান্ত করছে, আমরা এর সাথে যুক্ত নই।
এই প্রসঙ্গে ভাঙ্গর থানার আই সি রেজাউল করিম জানান, ঘটনা জানার সাথে সাথে আমাদের দুটি টিম গ্রামে গিয়ে তদন্ত করেছে, সেই পাত্র পাত্রী পরিবারের সাথে কথা বলে থানায় ডাকা হয়েছে, অভিযুক্তদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না”. এই বিষয় রাজ্য শিশু সুরক্ষা দফতরের এক আধিকারিক জানান, “আমরা ইতিমধ্যেই প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট চেয়েছি, পরবর্তীতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে “. ঘটনায় এলাকার বিধায়ক নৌসদ সিদ্দিকী বলেন,” বিষয়টা আমরা শুনেছি, খুব শিগগির এই বিষয় আমরা সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে অভিযোগ করতে চলেছি”.
যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নারী সুরক্ষা, নারী উন্নয়ন এর বিষয় একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন, সেখানে কলকাতার খুব কাছে ভাঙ্গর থানার রাজাপুর গ্রামে কি করে, নাবালিকাদের রাতের অন্ধকারে বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বেশ কয়েক বছর ধরে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
ছবিতে অভিযুক্ত দুই যুবক সাদ্দাম মোল্লা এবং মোসলেম মোল্লা।