Newsbazar 24:অর্থের অভাবে অগ্নিদগ্ধ মেয়েকে নিয়ে যেতে পারেননি হাসপাতালে৷ মেয়ের যন্ত্রনা দেখেও তার কিছু করার সামর্থ নেই তার মায়ের । আগুন লাগার দু’দিন পর অবশেষে চাঁদা তুলে দগ্ধ মেয়েকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় প্রতিবেশীরা৷ বর্তমানে বালুরঘাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ওই যুবতী চিকিৎসাধীন রয়েছে। এবং সুস্থ রয়েছেন। এদিকে বিষয়টি জানতে পেরেই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে ওই যুবতীর বিশেষভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং তার মা’র চিকিৎসা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্থানিয় সূত্রে জানা যায় , বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ কুয়ারণ এলাকার বাসিন্দা অ্যানে গুড়িয়া। বয়স আনুমানিক ৭০৷ স্বামীর দীর্ঘদিন আগে গত হয়েছেন। তখন একমাত্র মেয়ে রেনুকা কাউয়া(২০) অনেক ছোট। এদিকে জীর্ণ শরীরে সেভাবে কাজ করতে পারতেন না অ্যানে গুড়িয়া। কোনওরকমে শাক-পাতা খেয়েই জীবন অতিবাহিত হত মা ও মেয়ের। কয়েক বছর আগে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হবার পর ওই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিল অনেকে৷ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘর দেওয়া হয়। এছাড়াও রেশন থেকে যাতে বিনামূল্যে চাল অন্যান্য সামগ্রী পান তারও ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে কোনওভাবেই কাজ করতে না পারায় অর্থের সংকট চিরসঙ্গী তাদের৷
এদিকে গত সোমবার অর্থাৎ ৩০ নভেম্বর সকালে চা তৈরি করার সময় অগ্নিদগ্ধ হয় রেনুকা কাউয়া। বিষয়টি জানতে পেরেই স্থানীয়রা আগুন নেভায়। এদিকে যতক্ষণে আগুন নেভায় ততক্ষণে রেনুকার কোমরের নিম্নভাগের একাংশ পুড়ে যায়। তবে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার টোটো ভাড়া না থাকায় অ্যানে গুড়িয়া মেয়েকে ভর্তি করতে বা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেনি। এদিকে দীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টা ধরে বাড়িতে পড়ে থেকে কাতর যন্ত্রণায় ছটফট করছিল রেনুকা। ঘটনার দু’দিন পর এবিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবেশীরা চাঁদা তুলে এবং স্বেচ্ছাসেবী তাপস চক্রবর্তীর উদ্যোগে ওই যুবতীকে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় গত বুধবার। বর্তমানে বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে রেনুকা। আগের থেকে অবস্থা অনেকটাই ভাল রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এদিকে শুক্রবার জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক বিষয়টি জানতে পেরে রেনুকার বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি অ্যানে গুড়িয়ারও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা. সুকুমার দে জানিয়েছেন।
এবিষয়ে অ্যানে গুড়িয়া জানান, গত সোমবার চা করার সময় তার মেয়ে অগ্নিদগ্ধ হয়। টাকা না থাকায় মেয়েকে চিকিৎসা করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি। দু’দিন পরে গ্রামের কিছু লোক তার মেয়েকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। বর্তমানে মেয়ে অনেকটা সুস্থ রয়েছে।
এবিষয়ে স্থানীয়দের প্রতিবেশী আদাম ভেংরা জানান, গত সোমবার চা করার সময় অগ্নিদগ্ধ হয়। ওদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেনি তার মা। অবশেষে তারা জানতে পেরে দু’দিন পর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় ওই যুবতীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
Post your comments about this news