না ফেরার দেশে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দজি মহারাজ

Newsbazar24 না ফেরার দেশে চলে গেলেন রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজ। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্য জনিত রোগভোগের পর রামকৃষ্ণ মিশনেরই সেবা প্রতিষ্ঠানে মঙ্গলবার রাত ৮-১৪ মিনিটে জীবনদ্বীপ নির্বাপিত হল। রামকৃষ্ণ মিশনের পক্ষ থেকে স্বামী সুবীরানন্দ মহারাজের প্রয়ানের খবর জানিয়েছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের ষোড়শ অধ্যক্ষ স্বামী স্মরণানন্দ।
১৯২৯-এ তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর জেলার আন্দামি গ্রামে জন্ম হয় স্বামী স্মরণানন্দের। খুব অল্প বয়সে মাকে হারানোর পর নাসিক থেকে বাণিজ্য বিভাগে ডিপ্লোমা করেন। ১৯৪৯ সালে মুম্বইতে গিয়ে শ্রী রামকৃষ্ণ ও বিবেকানন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মিশনের কাজে যোগ দেন। ১৯৫২ সালে ২২ বছর বয়সে স্বামী শংকরানন্দের কাছে দীক্ষা নেন। ১৯৯৭ সালে তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন।
২০০৭ সালে তিনি রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সহ অধ্যক্ষ নির্বাচিত হন। দশ বছর পর স্বামী আত্মস্থানন্দের জীবনাবসানের পরে ২০১৭ সালের ১৭ জুলাই প্রেসিডেন্ট হিসাবে তিনি দায়িত্ব নেন। ২০২২ সালের মার্চ মাসেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন রামকৃষ্ণ মঠের প্রেসিডেন্ট স্বামী স্মরণানন্দ। সে সময় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল তাঁকে। তখন সুস্থ হয়ে ফেরেন মহারাজ। অসুস্থ অবস্থায় থাকাকালীন তাঁকে দেখতে হাসপাতালে গেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁকে দেখতে যান।
স্বামী স্মরণানন্দ মহারাজের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও শোকপ্রকাশ করে এক্স এন্ডেলে লেখেন, ‘শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দ জি মহারাজ, রামকৃষ্ণ মঠ এবং রামকৃষ্ণ মিশনের শ্রদ্ধেয় সভাপতি আধ্যাত্মিকতা এবং মানবসেবায় তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। অগণিত হৃদয় ও মননে অমলিন ছাপ রেখে গেছেন। তাঁর সহানুভূতি ও প্রজ্ঞা প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। কয়েক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে আমার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। আমি ২০২০ সালে বেলুড় মঠে আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কয়েক সপ্তাহ আগে কলকাতায় আমি হাসপাতালে গিয়ে তার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিয়েছিলাম।আমার ভাবনা বেলুড় মঠের অগণিত ভক্তদের সঙ্গে। ওম শান্তি।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, ‘রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের শ্রদ্ধেয় সভাপতি শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজি মহারাজের মৃত্যুসংবাদে আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই মহান সন্ন্যাসী তাঁর জীবদ্দশায় রামকৃষ্ণদেবের দর্শনকে প্রচার করেছেন, আধ্যাত্মিক নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমি তাঁর সমস্ত সহযাত্রী সন্ন্যাসী, অনুগামী ও ভক্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’
আমরা নিউজ বাজার ২৪ পরিবারের পক্ষ থেকে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের শ্রদ্ধেয় সভাপতি তথা মানব সেবায় উৎসর্গকৃত শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজি মহারাজের প্রয়াণে গভীর শ্রদ্ধা জানাই।