মালদহে নির্যাতিতা দুই মহিলার বাড়িতে জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধি দল, পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ

Newsbazar 24: রাজ্যজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মালদার পাকুয়াহাটে দুই মহিলাকে প্রকাশ্যে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনায় মঙ্গলবার নির্যাতিতাদের বাড়ি যান জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা সহ তিনজনের প্রতিনিধি দল।
দুই নির্যাতিতা মহিলার সাথে দেখা করতে মঙ্গলবার মালদায় এলেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপারসন রেখা শর্মা সহ তিনজনের প্রতিনিধি দল। বন্দে ভারত ট্রেনে করে আজ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ মালদায় এসে পৌঁছান জাতীয় মহিলা কমিশনের তিনজনের প্রতিনিধি দল। এরপর তারা সোজা চলে আসেন মালদা সার্কিট হাউসে। সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার পর মানিকচকের উদ্দেশ্যে রওনা হন তারা। মালদার মানিকচকের দুই নির্যাতিতার সাথে দেখা করেন তারা। তাদের সাথে গিয়েছিলেন মালদা জেলা পুলিশের ডি এস পি আইনশৃঙ্খলা আজহারউদ্দিন খান। তাকেও জাতীয় মহিলা কমিশনের ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়।
কিছুক্ষণ পরে সেখানে উপস্থিত হয় রাজ্য মহিলা কমিশনের একটি প্রতিনিধি দলও । এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি জাতীয় মহিলা কমিশন ।
রেখা শর্মা বলেন, দুই নির্যাতিত মহিলাকে বিবস্ত্র অবস্থায় থানায় বসিয়ে রাখা হল। এমনকি তাদেরকে কোন ওষুধপত্র দেওয়া হয়নি। উল্টে তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় ছ’দিন সংশোধনাগারে রাখা হল। এর জবাব পুলিশ প্রশাসনের কাছে চাইব। যাঁদের বিবস্ত্র করে মারধর করা হল, তাঁদের অপরাধটা কি? কেন তাদের জেলে পাঠানো হল সেটাও জানা দরকার ।এটা নির্যাতিতাদের নিপীড়ন(victimization of the victim)
উল্লেখ্য, নির্যাতিতাদের বিরুদ্ধে ফাঁড়ি ভাঙচুরের মামলা দায়ের করায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জেলা আদালতের বিচারক সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। পরবর্তীকালে আদালতের নির্দেশে সংশোধনাগার থেকে মুক্তি পেয়ে নির্যাতিতারা অভিযোগ করেছিলেন, ঘটনার দিন পুলিশ বিবস্ত্র অবস্থাতেই দু’ঘণ্টা তাঁদের পাকুয়াহাট ফাঁড়িতে বসিয়ে রাখে । তাঁদের চিকিত্‍সার ব্যবস্থাটুকুও করেননি পুলিশকর্মীরা ।
এই ঘটনা নিয়ে দিল্লিতে গান্ধিমূর্তির সামনে বিক্ষোভ দেখান রাজ্যের বিজেপি সাংসদরা। এবং লোকসভায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু। এই নিয়ে চাপে পড়ে বামনগোলা থানার আইসি-সহ চার পুলিশকর্মীকে ক্লোজ করেন মালদার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব । যদিও রেখা শর্মা দোষী পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেছেন।

তিনি আরো জানান এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে রিপোর্ট তলব করেছিলেন তারা। পুলিশ সুপার একশান টোকেন রিপোর্ট পাঠিয়েছেন। সেই রিপোর্ট নিয়েও আমাদের অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তিনি আরও জানান, পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায়’চারজন পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে । অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে । কতদিনে সেই তদন্ত শেষ হয়, দোষী পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সেটা নিয়ে তাঁরা নজর রাখছেন । এই ঘটনায় তিনি রাজ্য সরকারের কাছেও জবাব চাইবেন। এই ঘটনা নিয়ে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ।