হাসপাতালে মৃত্যু ১০ মাসের শিশুর, কারণ জানতে ময়না তদন্ত

news bazar24:
টিকা নেওয়ার পরবর্তীকালেই একটি ১০ মাসের শিশুর জ্বর হয়, কিন্তু সেই জ্বর ক্রমাগতই বাড়তে থাকে। অবশেষে শুরু হয় শ্বাসকষ্ট, এরপর তাড়াতাড়ি করে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। রাখা হয় ক্রিটিকাল কেয়ারের ভেন্টিলেশনে কিন্তু তা সত্ত্বেও মধ্যে সেই দশ মাসের শিশুটির মৃত্যু হয়।

এইরকম মৃত্যুর সঙ্গে টিকার আদেও কোন সম্পর্ক রয়েছে কিনা সে বিষয়ে এখনো পর্যন্ত চিকিৎসকেরা নিশ্চিত হননি । ইতিমধ্যেই ওই শিশুটির মৃত্যুর কারণ খুঁজতে ময়নাতদন্তের সম্মতি জানিয়েছেন শিশুটির পরিবার।

ঘোলাবাজার এলাকার বাসিন্দা সম্পা দে এবং বিশ্বজিৎ দে র একমাত্র সন্তান আবির। ১২ ই জুন সেই শিশুটিকে পানিহাটি স্টেট জেনারেল হাসপাতালে হাম রুবেলা এবং জাপানি এনসেফেলাইটিস এবং ইনজেক্ট টেবল পোলিও টিকা দেওয়া হয়। এই বিষয়ে সেই শিশুটির কাকা প্রসেনজিৎ জানিয়েছেন, ঐদিন রাতে হালকা করে জ্বর আসে কিন্তু সবাই ধরে নিয়েছিল যে টিকা নেয়ার পরে এটা স্বাভাবিকভাবেই হয়।

কিন্তু মঙ্গলবার সেই জ্বর ক্রমাগত এই বাড়তে থাকে। রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপরে আটটা নাগাদ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সাগর দত্তে। সেখানে দেখা যায় বাচ্চাটির অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে ,সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় আইসিইউতে। কিন্তু ওরকম ভাবে যে সবকিছু শেষ হয়ে যাবেন প্রসেনজিৎ বাবু ভাবতে পারেননি। হঠাৎ করে এই ধরনের অবস্থা হল কেন সেটাই জানার জন্য ময়নাতদন্তে রাজি হয়েছে আবিরের পরিবার।

ওই শিশুটির দেহের ময়নাতদন্ত হয় বুধবার কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজে। শিশুটির দেহ থেকে প্রায় ৩৭ টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এই বিষয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গেছে যে, রিপোর্ট পর্যালোচনা করার জন্য নিযুক্ত রয়েছেন জেলা স্তরের কমিটির সদস্যরা। তারা এই টিকার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় কিনা সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছেন।

এরপরেই সেই তথ্য পাঠানো হবে রাজ্য স্তরে কমিটির কাছে। এই বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তা জানিয়েছেন, কেন শিশুটি মারা গেল সে কথা জানার জন্যই ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, যদি টিকার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে এরকম কিছু ঘটে থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা করতে হবে।

এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ জানিয়েছেন, একটি বাচ্চার শরীরে তিন থেকে চারটি টিকা নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু এখনই সম্ভব নয় বলা যে ওই টিকার কারণে ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে কিনা। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে যেন কোন শিশুর টিকা বন্ধ করা না হয়। হতেও পারে অন্য কোন কারণে শিশুটির জ্বর এসেছিল। তবে জ্বর বা ও কোন শরীর অসুস্থ থাকলে সে সময় টিকা না নেওয়াই উচিত।