বাজেটে শূন্য কার্বন নিঃসরণের লক্ষ্যমাত্রা, বড় ঘোষণা হতে পারে জ্বালানি খাতে

news bazar24 : বিশ্ব পরিবেশ নিরাপত্তা বিষয়ক COP-26 বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আগামী পাঁচ দশকের জন্য ভারতের শক্তির অগ্রাধিকারের এজেন্ডা নির্ধারণ করেছেন। মুক্ত কার্বন শক্তির লক্ষ্যমাত্রার এখনও 48 বছর বাকি আছে, এমনটা  মনে হতে পারে, কিন্তু দেশ কে শক্তি শালি করতে  এখন থেকে এই অগ্রাধিকার অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে দেশের সমগ্র জ্বালানি চাহিদা, সরবরাহের দৃশ্যপট পরিবর্তন করে। বিশেষ করে যখন ভারতের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য শক্তির প্রয়োজন শুধুমাত্র দ্রুত প্রবৃদ্ধির হারের জন্যই নয়, প্রতিটি মানুষকে পর্যাপ্ত এবং কম হারে বিদ্যুৎ দেওয়ার কাজও করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে গ্লাসগোতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর ঘোষণা অনুসারে এবারের বাজেটে এখনই  এজেন্ডার খসড়া উপস্থাপনের প্রস্তুতি চলছে। আগামী বাজেটে সৌরশক্তি খাতে জ্বালানি খাত নিয়ে আরেকটি বড় ঘোষণা আশা করা যাচ্ছে । এটি নেট জিরো-2070 লক্ষ্য অনুসারেও হবে এবং সৌর শক্তি সেক্টরে দেশকে স্বনির্ভর করতে দুই বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকার যে প্রচার শুরু করেছিল তাও এগিয়ে নিয়ে যাবে।

2030 সালের মধ্যে $500 বিলিয়ন বিনিয়োগ প্রয়োজন

2021-22 সাল থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য 1.97 লক্ষ কোটি টাকার সাহায্যে প্রোগ্রামটি শুরু করার ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রণোদনার পরিপ্রেক্ষিতে, কিছু সংস্থা ভারতে সোলার প্যানেল ইত্যাদি তৈরি করা শুরু করেছে, তবে এখন ভারত সৌর শক্তির ক্ষেত্রে বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সক্ষমতা পাঁচ লাখ মেগাওয়াটে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। তদনুসারে, ভারতকে স্বনির্ভর করতে, সৌর খাতের জন্য আরও বড় পরিসরে সরঞ্জাম তৈরি করতে হবে। একটি অনুমান অনুসারে, নবায়নযোগ্য খাতে প্রয়োজনীয় ক্ষমতা অর্জনের জন্য 2030 সালের মধ্যে ভারতের 500 বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। প্ল্যান্ট থেকে ট্রান্সমিশন পর্যন্ত এলাকায় এই বিনিয়োগ প্রয়োজন।

হাইড্রোজেন ক্ষেত্রেও বড় ধরনের ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে

গত দুই মাস ধরে, ভবিষ্যতের ঘোষণার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রক, নীতি আয়োগ, অপ্রচলিত শক্তি উত্স মন্ত্রক, বিদ্যুৎ মন্ত্রক, শিল্প মন্ত্রকের মধ্যে আলোচনা চলছে। শক্তির ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা হাইড্রোজেন ক্ষেত্রে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত সাধারণ বাজেটে, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন হাইড্রোজেন মিশন 2021-22 চালু করার ঘোষণা করেছিলেন। সম্প্রতি, বিদ্যুৎমন্ত্রী আর কে সিং ভবিষ্যত হাইড্রোজেন নীতি নিয়ে সরকারের মহড়া প্রকাশ করেছিলেন। উদ্দেশ্য হল যাত্রীবাহী গাড়িতে হাইড্রোজেন জ্বালানীর ব্যবহার বিমান এবং ভারী ট্রাকেও প্রচার করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করা।

হাইড্রোজেনের সাথে সার যুক্ত করার প্রস্তুতিও

জ্বালানিমন্ত্রীর মতে, কয়লার প্রয়োজন এমন প্রতিটি খাতে পরিবর্তনের ভিত্তি তৈরি করা হচ্ছে। এমনকি কম্পোস্ট উত্পাদনকে হাইড্রোজেনের সাথে যুক্ত করতে হবে। কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অনেক গবেষণা ও গবেষণার প্রয়োজন হবে। এর জন্য অর্থমন্ত্রী কতটা তহবিল দেন সেটাই দেখতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন থেকে হাইড্রোজেন মিশনকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়ার জন্য সরকার ও বেসরকারি খাতের মধ্যে পর্যাপ্ত তহবিল এবং বড় আকারের সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভারতের উদ্দেশ্য শুধু হাইড্রোজেন জ্বালানির ভোক্তা হওয়া নয়, রপ্তানিকারক হওয়াও। এটি ঘটলে, এটি ভারতের শক্তি সুরক্ষা ফ্রন্টে চ্যালেঞ্জগুলিকে অনেকাংশে হ্রাস করবে।

ডিসকমের অবস্থার উন্নতির জন্য আরেকটি প্রচেষ্টা করা যেতে পারে

জ্বালানি খাত নিয়ে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণার দিকেও নজর থাকবে দেশের বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোর (ডিসকম) অবস্থার দিকে। করোনার দুই বছরে সরকার দুবার এই ডিসকমগুলোর অবস্থা সংশোধনের চেষ্টা করেছে, কিন্তু কোনো ইতিবাচক ফল পায়নি। গত বছরের বাজেটেও, ডিসকমগুলির জন্য 3 লক্ষ কোটি টাকার একটি প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছিল। এর প্রভাব পড়তে সময় লাগতে পারে। এখনো এসব কোম্পানির কাছে দেড় লাখ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে এবং এর সুষ্ঠু সমাধান না হলে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে পর্যাপ্ত ও সাশ্রয়ী বিদ্যুতের স্বপ্ন ভেস্তে যেতে পারে। হাউসে বাজেট পেশ করার আগে, আশা করা হচ্ছে যে সরকার নতুন বিদ্যুৎ (সংশোধনী) বিল, 2021ও পেশ করবে। এই বিলে এমন কিছু বিধান রয়েছে যা এগিয়ে নিতে আর্থিক সহায়তা প্রয়োজন। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কী করেন সেটাই দেখতে হবে।