Friday , 21 February 2025 |
  1. Delete-31-10-24
  2. উপাসনা এবং ধর্ম
  3. কলকাতা
  4. কৃষি ও ফুল বাগান
  5. খেলা
  6. গ্রহ শান্তি
  7. চলো যাই
  8. জানা অজানা
  9. দেশ
  10. পড়াশোনা
  11. পথ চলতি
  12. পেশা প্রস্তুতি
  13. প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান
  14. ফ্যাশান
  15. বিজ্ঞাপন

হে বঙ্গ ভাষী, তুমি ইংরেজি শেখো, কিন্ত বাংলা ভুলোনা’: প্রবীণ সাংবাদিক ও জীবনবাদী লেখক পার্থ চট্টোপাধ্যায়

প্রতিবেদক
kartik pal
February 21, 2025 1:06 pm

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস উপলক্ষে প্রবীণ সাংবাদিক ও জীবনবাদী লেখক ডঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মূল্যায়ন:
আজ ২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক ভাষা দিবসে কটি কথা মনে এল। আমি একটু অন্য সুরে কথা বলি বলে আমার পাঠক খুবই কম। তবু নিজেকে শোনাবার জন্যই আজ কথা গুলো না লিখে পারলাম না।
ঔপনিবেশিকরা কবে উপনিবেশ ছেড়ে চলে গেছে, কিন্ত যাবার সময় কলোনীগুলির ওপর পরিয়ে দিয়ে গেছে ভাষার দাসত্ব শৃঙ্খল। স্থানীয় মানুষেরা মাতৃভাষার প্রতি উদাসীন থেকেছে। পুষ্টির অভাবে ভাষা জননী শীর্ণাক্ষয় রোগিনীর মতো মৃত্যু পথ যাত্রী।

ভাষা সাম্রাজ্যবাদের প্রথম সারিতে এখন ইংরেজি। ভারতে এখন হাতে গোনা কিছু ইংরেজ আর এংলোইন্ডিয়ান বাস করেন। কিন্তু ভারতে স্কুলে প্রথম ভাষা ইংরেজি নেওয়ার সংখ্যা কয়েক বছরের মধ্যে ৫ কোটিতে এসে পৌঁছেছে। আগামী দশ বছরের মধ্যে শুদ্ধ ঝর ঝরে ভাষায় বাংলা লিখতে পড়তে জানা লোক খুব বেশি থাকবেনা। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার বাংলা পঠন পাঠনের উন্নতি না ঘটিয়ে লোক ভয়ে রাতারাতি বাংলা স্কুলগুলিকে ইংরাজি মাধ্যম স্কুলে পরিণত করলেন। বাংলা ভাষায় ভাব প্রকাশের ক্ষমতা যেটুকু স্কুলে অর্জিত হত সেটুকুও চলে গেল। বামেরা যেমন ইংরেজি বর্জিত শ্রেণীহীন সমাজ গড়তে চেয়েছিলো এখন উদভ্রান্ত সরকার বাংলাটা ভুলিয়ে দিতে চাইছে আর ভুল ভাল ইংরেজির পিটুলি গোলাকে হরিণঘাটার খাঁটি দুধ বলে চালাতে চাইছে।
এই সংকট শুধু ভারতের নয় গোটা আফ্রিকা আর দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার প্রাক্তন কলোনিগুলির অবস্থা। এই শতকের গোড়ায় আমি দক্ষিণ পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশগুলি ঘুরি। শ্রীলংকা থেকে তাইল্যান্ড, লাওস হয়ে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, চীন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ইন্দোনেশিয়া। একমাত্র চীন ও জাপান ছাড়া সব দেশেই মাতৃভাষা বিপন্ন।ইন্দোনেশিয়া তো কয়েকশো দ্বীপ নিয়ে তৈরি। প্রত্যেক দ্বীপের নিজস্ব ভাষা আছে। তাছাড়া গোটা দেশের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা ভাষা- ইন্দোনেশিয়া কিন্ত সেখানে সরকারি ভাষা ইংরাজি। মাতৃভাষা হারিয়ে ইংরেজি মাথা চারা দিয়ে উঠছে। ফিলিপিনস তো খ্রিস্টান দেশ। সর্বত্র ইংরেজি। স্থানীয় ভাষা ত্যাগলোক বা সেবুয়ানোর নাম পর্যটকরা জানেনা।
মেক্সিকোর নিজের ভাষা যে নাহুয়াতি বা মায়াল তা মেক্সিকর মানুষই ভুলে গেছে। মেক্সিকো বলতেই স্প্যানিশ ভাষা, স্প্যানিশ সংস্কৃতি লোকের মনে ভাসে।
পেরুতেই সেই বিদেশী ভাষা স্প্যানিশের আধিপত্য। পেরুর নিজস্ব ভাষা “কোয়ে চুয়া” ও “আই মারায়” এখনো কিছু লোক কথা বলে। কিন্ত আগামী প্রজন্মে আর বলবেনা।
বিদেশী ভাষার আধিপত্যবাদ সবচেয়ে ক্ষতি করেছে আফ্রিকার। সেখানে অধিকাংশ দেশে শিশুরাও মাতৃভাষা বলেনা। স্কুলের ভাষা ইংরেজি না হয় ফরাসি বলে।

পৃথিবীতে প্রায় দেড় বিলিয়ন মানুষ ইংরেজিতে কথা বলে। তাঁদের মধ্যে মাত্র ৪১০ মিলিয়ন বা ৪০ কোটির কিছু বেশি মানুষের মাতৃভাষা ইংরেজি। কিন্ত কোটি কোটি মানুষ স্বেচ্ছায় তাদের মাতৃভাষা আতুড় ঘরেই বিসর্জন দিয়ে ইংরেজিকে গ্রহণ করেছে। আপনি কী দেখেছেন মা আর শিশু ইংরেজিতে গল্প করছে। স্পোকেন ইংলিশ নাকি মায়েদের বাচ্চাদের ঘুম পাড়াতে পাড়াতে শেখাতে হয়। এবার একজন সাহেব একসপার্ট কলকাতার মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অফিসে বসে আমাকে বলেছিলেন ক্লাস ফাইভের আগেই বিদেশী ভাষা শিক্ষা নৈব নৈব চ। এই ইস্যুতে তো পশ্চিমবঙ্গে গভর্মেন্ট পড়ে গেল।

আমি ভেবেই পাইনা পৃথিবীতে এক হাজার কোটির বেশি মানুষ কী করে মাতৃভাষা ছেড়ে ইংরাজিতেই সারাক্ষন কথা বলে যায়। আমি যতবার বিদেশে বেশি সময় বাস করেছি হোম সিক হয়ে পড়েছি। আমার কোন sweet home ছিলো না। আমি যার অভাব বোধ করতাম তা হল মাতৃভাষায় কথা বলার।

আমেরিকায় দেখতাম শুক্রবার হলেই সব বাঙালি শীতের রাতে ছেলেমেয়ে বউ নিয়ে ৬০/৭০ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে আর এক বঙ্গ সন্তানের বাড়ি আড্ডা দিতে যাচ্ছে। হুইস্কির আকর্ষণে নয়, বাংলায় আড্ডা দেবার আকর্ষণে। ভাষার আকর্ষণেই মানুষ ghetto করে গাদাগদি হয়ে বাসে করে। ধর্ম নয়, ভাষাই শ্রেষ্ঠ মানব বন্ধন।

ভারতের দশ ভাগ মানুষ এখন সব সময় ইংরেজি ভাষী। এদের বাবা মা মাসি মেসো কেউ ইংরেজি ভাষী নয়। এরা সবাই কুলীন ভারত সন্তান। ইংরেজিকে স্বেচ্ছায় বেছে নিয়েছে যেভাবে ভারতীয়রা স্বেচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়েছিল ঠিক সেই সব কারণে।

পৃথিবীতে সাম্প্রতিক কালে ৫৫৯ টি ভাষা স্রেফ অবহেলায় লুপ্ত হয়ে গেছে। এখনো ৭১৩৯ টি ভাষা জীবিত। মানে সে সব ভাষায় লোকে এখনো কথা বলছে। ইউনেস্কো বলছেন এই শতাব্দীর শেষে এর অর্ধেক ভাষা লুপ্ত হয়ে যাবে। আমি উদ্বিগ্ন এর মধ্যে প্রায় ৩০ কোটি মানুষের ভাষা বাংলা বিপন্ন ভাষার মধ্যে পড়বে কী?

বাংলা ন্যাশনাল থিয়েটারের জন্য শিশিরবাবু প্রানপাত করেছিলেন। আজও হয়নি। আজও বাংলা ভাষা নিয়ে কোন উচ্চশ্রেণীর গবেষণা প্রতিষ্ঠান হয়নি। মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় আছে, নারী বিশ্ববিদ্যালয় আছে, বিজ্ঞানের উচ্চ গবেষণা প্রতিষ্ঠান আছে। কিন্ত বাংলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সমতুল একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান কী হতে পারতো না? করা যেত না বিভিন্ন রাজ্যে রবীন্দ্র বাংলাচৰ্চা কেন্দ্র? বাংলার ঐতিহ্য মন্ডিত গ্রন্থাগার গুলিকে কী বাঁচানোর যেতোনা? আরে কিছু নয় একটি আইন কী করা যেতো না যাতে পশ্চিমবঙ্গে বাস করতে গেলে যে মাধ্যম হোক না কেন HS পর্যন্ত বাংলা পড়তেই হবে।

কোন বিদেশী কলকাতায় ঢুকে কী অনুভব করেন তিনি বাংলা ভাষী কোন দেশে এসেছেন? কোনো সাইন বোর্ডে, কোন বাসের নম্বর কি বাংলায় লেখা? কেন আইন করা হবে না পাঁচতারা হোটেলের নামও ইংরেজির সঙ্গে বাংলায় লিখতে হবে? এটি ভাষা জননীর মর্যাদা।

ভাষাকে যারা মায়ের আসনে বসাতে পেরেছিল তাঁরাই ভাষা শহীদ হয়েছেন। কিন্ত হে বঙ্গ ভাষী, তুমি জেনো তোমার ভাষায় ৩০ কোটি লোক কথা মারাঠি গুজরাটির চেয়েও বেশি। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে তোমার ভাষার কেউ দাম দেয়না। কিন্তু অস্ত্রেলিয়াতে ইস্কুলে বাংলা একটি subject। সারা পৃথিবীতে বহু মানুষ অন্তত ৩৯ লক্ষ বাঙালি বাংলা শিখতে চায়। তাঁদের কথা কী সরকার ভেবেছেন? ভাষা কী এমনি এমনি বাঁচে? তাঁকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়।
হে বঙ্গ ভাষী, তুমি ইংরেজি শেখো। কিন্ত বাংলা ভুলোনা। তুমি শহরে বউ ছেলে মেয়ে নিয়ে সুখে থাকো। তোমার জনম দুঃখিনী মা দেশের বাড়িতে একা। সে তোমার কাছে কিছুই চায়না। শুধু দিনের শেষে একবার টেলিফোনে মা ডাক টুকু শুনতে চায় । জন্মের পর চেতনার প্রথম প্রভাতেই যেমন করে ডেকেছিলে ঠিক এমন করে মাকে ডাকো। ওতেই হবে।

ডঃ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, লেখক
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

WhatsApp channel Join Now
Telegram channel Join Now

সর্বশেষ - কৃষি ও ফুল বাগান

আপনার জন্য নির্বাচিত

আবারও মালদহের বামনগোলা ব্লকের এক পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্বে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Railway News:রেলওয়ে স্টেশনগুলিতে যাত্রী সাচ্ছন্দ্য বাড়াবার লক্ষ্যে নিউ ফারাক্কা স্টেশনে স্বয়ংক্রিয় লিফট চালু

মালদায় লোকসংস্কৃতির মাধ্যমে দুয়ারে সরকারের প্রচার শুরু করলো জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর

বোলপুরে বহুতলে আগুন – মৃত দুই

ভারতের গণতান্ত্রিক যুব ফেডারেশানের উদ্যোগে স্বেচ্ছায় রক্তদান শিবির

Malda news:বর্ষায় জল যন্ত্রণার হাত থেকে শহরবাসীকে মুক্তি দিতে ইংলিশ বাজার পৌরসভার বিশেষ উদ্যোগ

ওষুধ ছাড়াই হাঁটুর ব্যথা কমানো যায়

নির্বাচনী কাজে কর্তব্যরত অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ উচ্চপদস্থ সরকারি আধিকারিক।।

ইংরেজবাজার পৌরসভায় পঞ্চম বারের জন্য চেয়ারম্যান হিসেবে শপথ নিলেন কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী।

Kolkata news:টেটের উত্তরপত্র নষ্টের অভিযোগে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্ট