শঙ্কর চক্রবর্তী ও কনিকা বিশ্বাস, ( news bazar24) : বহু বছর আগের কথা ভারতে প্রথম শুরু করেছিলেন বিহারের হিন্দি ভাষী মানুষেরা। ছট মানে ‘ছট মাইয়া। তবে সূর্য দেব পুরুষ হওয়া সত্বেও কেন তাঁকে মাইয়া বা মা’ বলে সম্বোধন করা হয় সেই নিয়ে অনেক মতান্তর আছে। অনেকে সূর্যের ছটা বা রশ্মি কে ছট বলা হয়ে থাকে। তবে মুলত সূর্যকেই পুজো করা হয় ছট পুজোয়। কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার পর ষষ্ঠীতে এই পুজো হয় বলে ষষ্ঠ থেকে ষট ,তারপর ভাষার পরিবর্তন হয়ে ছট হিসেবে প্রচলিত হয়ে উঠেছে।
কি আছে এই পুজার নিয়ম বিঁধি ?
পুজোর নিয়ম মেনে প্রথম দিন মহিলারা একবার কুমড়োর সবজি দিয়ে ভাত খেয়ে ১২ ঘণ্টা উপবাসে থাকবে। তারপর খাবার খেয়ে ২৪ ঘণ্টা উপবাসে থাকবে, তারপর আবার খাবার খেয়ে ৩৬ ঘণ্টা উপবাসে থেকে জলাশয় অথবা নদীতে গিয়ে আবক্ষ জলে দাঁড়িয়ে সূর্য দেবতার কাছে নিজের মনের চাহিদা জানাতে হবে। ছট পুজোর কোনও মন্ত্র নেই। যার যে ভাষায় সূর্যের কাছে মনবাসনা জানানোর ইচ্ছে, তিনি সে ভাষাতেই বলবেন মনে মনে।
শ্রীরামচন্দ্র ছট পুজো কেন করতেন ?
রামায়ণ এবং মহাভারত দুয়েতেই ছট পুজোর উল্লেখ রয়েছে। সূর্য বংশের সন্তান হওয়ার কারণে শ্রীরামচন্দ্র নিয়মিত ছট পুজো করতেন। বনবাস কাটিয়ে অযোধ্যা ফেরার সময় রাম ও সীতা সূর্য দেবের উদ্দেশ্যে পুজো ও উপবাস করেন। সেই থেকেই ছট পুজোর সূচনা বলে মনে করা হয়।
দ্রৌপদীও কেন ছট পূজা করে সূর্য দেবকে তুষ্ট করতে চেয়েছিলেন ?
আবার মহাভারত অনুযায়ী সূর্যদেব ও কুন্তীর পুত্র কর্ণ। কথিত, কর্ণ এই সময় সূর্যের আলোয় আবক্ষ জলে দাঁড়িয়ে দরিদ্রদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করেছিলেন। আবার নিজেদের রাজ্য ফিরে পাওয়ার জন্য দ্রৌপদী ও পাণ্ডবরাও এই পুজো করেছিলেন বলেও কথিত রয়েছে।
কলি যুগে ভারতের মাটিতে এই পুজার পুনঃ প্রচলন যে বিহার থেকেই শুরু হয়েছিলো তা বিভিন্ন তথ্য থেকে উঠে এসেছে। কালক্রমে এখন কিন্তু ছট পুজো উদযাপন শুধু বিহারি সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সারা দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং ধর্মের মানুষ এখন এই উৎসবকে আপন করে নিয়েছেন। বিশেষ করে প্রচুর বাঙ্গালীরাও এখন ছটের পূজা নিষ্ঠার সাথে ফি বছর পালন করে চলেছে ।
পুরোহিত ছাড়াই ছট পুজো ! উদিত সূর্য ও অস্তমিত সূর্যের কাছে কেন করা হয় প্রার্থনা