Share on whatsapp
Share on twitter
Share on facebook
Share on email
Share on telegram
Share on linkedin

যে ভূতের গ্রাম খুঁজতে গিয়ে মৃত্যু বরণ করেছে বহু মানুষ…………

Share on whatsapp
Share on facebook
Share on twitter
Share on email
Share on telegram
Share on linkedin

news bazar24 : বিশ্বের কোনো মানচিত্র নাম নেই, প্রবেশ বা বের হওয়ার কোনো উপায়ও নেই! আর এই ‘ভূতের গ্রাম’ খুঁজতে গিয়ে মৃত্যু বরণ করে বহু মানুষ !
সেই গ্রামের হাওয়ায় নাকি ভাসছে সারাক্ষণ কারো কান্না। ভুলবশত কেউ ওই গ্রামে ঢুকে পড়লে তার বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। খবরের কাগজে প্রায়ই সেই গ্রাম নিয়ে লেখালেখি হয়। কিন্তু, সেই গ্রাম খুঁজে পাওয়া কঠিন ব্যাপার । কারণ সেই গ্রাম দেশের মানচিত্রে কোথাও দেখা যায় না। জাপানের ইনুনাকি নামের গ্রামটিকে অনেকেই ‘ভূতের গ্রাম’ বলে ডাকেন। কিন্তু আতিপ্রাকৃতিক ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গ্রামটি নিজেই একটি ভূত। সে নিজেই একজন ‘ভূতের’ মতো।

জাপানের মানচিত্রে আজ পর্যন্ত খোঁজ পাওয়া যায়নি, তবে রীতিমত এই গ্রামের ‘বসবাস’ প্রথাগত। এটি লোক ঐতিহ্য দ্বারা পরিচিত যে এই গ্রামটি ফুকুয়োকো প্রিফেকচারে অবস্থিত। এর একপাশে ইনুকি পাহাড়, অন্য পাশে ইনুনাকি গাওয়া নামে একটি নদী আছে । জনমত অনুযায়ী, দেশের সংবিধান মানতে মোটেই রাজী নয় এ গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের বাইরে একটি বিজ্ঞপ্তি আছে যে- “এই গ্রামে জাপানের সংবিধান কার্যকর হয় না ।”

আপনি যদি এই ভুতুরে গ্রামটি খুঁজে পেতে চান তবে আপনাকে একটি প্রাচীন সুরঙ্গের মধ্য দিয়ে যেতে হবে এবং রাস্তাটি খুঁজতে হবে, এমনই কথা বলে স্থানীয় মানুষেরা। জানা যায় যে ১৯৭০ এর দশকের শুরুতে, একটি তরুণ দম্পতি হিসায়ামা শহরে যাচ্ছিল। এমন সময় হঠাৎ তাদের গাড়িটি বিকল হয়ে যায়। গাড়ি থেকে নেমে তারা ইতুতি ঘুরতে ঘুরতে একটা জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। তারা সেই জঙ্গলের ভিতরে একটি পরিত্যক্ত গ্রাম দেখতে পায় । হঠাৎ, একটি পাগলা বৃদ্ধ জাতি তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং তাদের হত্যা করে।

জনমত আরও বলছে, এই সেতুর কাছেই এক ফাঁকা জায়গায় টেলিফোন বুথ রয়েছে। প্রতি রাতে হঠাৎ অদৃশ্য ইনুনাকি গ্রাম থেকে ফোন আসে । কেউ বুথ থেকে ফোন ধরলে এবং উত্তর দিতে গেলে তার ওপর নেমে আসে কঠিন অভিশাপ। তিনি বাস্তব জগত থেকে অদৃশ্য হয়ে যান এবং একটি অদৃশ্য গ্রাম ইনুনাকির বাসিন্দা হন। অভিশপ্ত ব্যক্তির শরীর বা মনের উপর তখন আর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা ।

এই সব গল্প শোনার পর মনে হবে, এই সব বাচ্চা ছেলেকে গল্প কথা বলছে। কিন্তু জাপানের একটি বড় অংশের মানুষ ইনুকাকি গ্রাম খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে এবং আজও তা চালিয়ে যাচ্ছে। পুরানো নথিপত্র পরিদর্শন করে দেখা গেছে যে টোকুগাওয়ায়া যুগে (১৬০৩-১৮৬৭ ) প্রকৃতপক্ষে ওই এলাকায় ইনুনাকিধানি নামে একটি গ্রাম ছিল। গ্রামের মানুষের প্রধান পেশা ছিল চীনামাটির জিনিস তৈরি করা। ১৮৮৯ সালে এই গ্রামটিকে ইয়োশিকাওয়া নামের আর একটি গ্রামের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। আরও পরে অন্যান্য এলাকা যুক্ত হতে থাকলে ইনুনাকিদানি তার অস্তিত্ব হারায়।

এই গ্রাম সম্পর্কে বিভিন্ন ‘ভূত’ উপকথার মূলে রয়েছে একটি সুরঙ্গ। আসলে ইনুনাকি টানেল নামে দুটি সুরঙ্গ আছে। প্রথমটি ১৯৪৯ সালে নির্মিত হয়েছিল, দ্বিতীয়টি ১৯৭৫ সালের দিকে। পুরানো সুরঙ্গটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। তাকে ঘিরে ছড়াতে থাকে নানা গল্প।

অনেকের মতে ১৯৮৮ সালে, পাঁচ যুবক এক কারখানার শ্রমিককে অপহরণ করে, তাকে পুরানো সুরঙ্গে নিয়ে আসে, তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে। ওই শ্রমিকের গাড়ি চুরির চেষ্টা করে এই পাঁচজন। তাকে হত্যার পর ওই সুরঙ্গের ভেতরে ওই শ্রমিকের দেহ পুড়িয়ে দেয়। পরে ওই পাঁচজনকে ধরা হয় এবং তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

সেই শ্রমিকের আত্মা জঙ্গলে থাকে এবং সে খুবই প্রতিহিংসাপরায়ণ। ২০০০সালে, ইনুনাকিগাওয়ায়া নদীর বাঁধের কাছে একজন ব্যক্তির মৃতদেহ পাওয়া যাওয়ার পর এই গল্পটি আরও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

১৯৯৯ সালে, একটি অজানা ব্যক্তির কাছ থেকে একটি জাপানি টেলিভিশন চ্যানেলে একটি চিঠি আসে। ওই চিঠিতে তরুণ দম্পতি হত্যার কথা উল্লেখ করে ওই চ্যানেলের সাংবাদিকদের ওই এলাকায় তল্লাশি চালানোর অনুরোধ করা হয়। সেই চিঠির শিরোনাম ছিল- ‘যে গ্রাম জাপানের অংশ নয়’।

বর্তমান স্যাটেলাইট এবং ড্রোন প্রযুক্তির যুগে, একটি গ্রাম খুঁজে পাওয়া এত বড় বিষয় নয়। রহস্য-রোমান্সের ব্যবসায়, এমন অনেক ইউটিউব চ্যানেলে বলতে শোনা যায় যে তারা এই গ্রামটি খুঁজে পেতে উন্মত্তভাবে অনুসন্ধান করছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেই গ্রামের সন্ধান কেউ পায়নি।

Share on whatsapp
Share on facebook
Share on twitter
Share on email
Share on telegram
Share on linkedin