মালদার সুপ্রাচীন নাট্যদল মালদা ড্রামাটিক ক্লাবের তিন দিনব্যাপী নাট্য উৎসব শেষ হল

Newsbazar24:মালদহের সুপ্রাচীন নাট্যদল মালদা ড্রামাটিক ক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো তিন দিনব্যাপী নাট্য উৎসব। সম্প্রতি প্রয়াত বিখ্যাত নাট্যকার পরিচালক ও অভিনেতা মনোজ মিত্র স্মরণে স্থানীয় দুর্গা কিংকর সদনে গত ২০ ডিসেম্বর শুক্রবার প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও প্রয়াত নাট্যকার মনোজ মিত্রের স্মরণে এই নাট্য উৎসবে শুভ সূচনা হয়। সেদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শক্তি পদ পাত্র, মালদা সাংস্কৃতিক পরিচালন সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ দাস বিশিষ্ট সমাজসেবী ও মালদা ড্রামাটিক ক্লাবের সভাপতি ডক্টর ডি সরকার, বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব মেঘনাদ ভট্টাচার্য। প্রথম দিন অর্থাৎ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় দুটি নাটক প্রথম নাটকটি ছিল মালদা ড্রামাটিক ক্লাবের পরিচালনায় ‘পলাতক ও সেই মেয়েটি’। সমাজে নিপীড়িত অত্যাচারিত একটি মধ্য বয়সী মেয়ের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছিল এই নাটকে। উপস্থাপনা ছিল এক কথায় চমৎকার।

দ্বিতীয় দফায় ছিল বেহালা ব্রাত্যজন নাট্যদল প্রযোজিত একটি স্বপ্নময় মৃত্যু।এই নাটকে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বিশিষ্ট নাট্যকার ও অভিনেতা মেঘনাদ ভট্টাচার্য। দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ শনিবার অভিনীত হয় বালিগঞ্জ স্বপ্নসুচনা নাট্যদল প্রযোজিত শল্যপর্ব। বিশিষ্ট নাট্যকার বিজয় মুখোপাধ্যায় ও রুদ্র তেজ সেনগুপ্তের নির্দেশনায় এই নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের অষ্টাদশতম দিন শল্য পর্ব নামে খ্যাত ছিল। সেই যুদ্ধ ছিল ধর্মের সঙ্গে অধর্মের ন্যায়ের সঙ্গে অন্যায়ের। কিন্তু সেই লড়াই আজও সমাজে চলছে। তাই নাট্যকার এই নাটকের মধ্যে দিয়ে বার্তা দিতে চেয়েছেন, চাই নতুন সকাল, বৃষ্টিস্নাত নতুন পরিবেশ, মনুষ্যত্ব যেখানে তুচ্ছ পার্থিব চাওয়া-পাওয়ার অনেক উপরে। মানুষের শুভ বোধ যেন জাগরিত হয়। শেষ দিন রবিবার অভিনীত হয় দুটি নাটক। প্রথম দর্শন ছিল মালদা ড্রামাটিক ক্লাবের প্রয়োজনায় বিপন্ন অলকেন্দু। এই নাটকের মধ্যে দিয়ে নাট্যকার প্রশ্ন তুলেছেন, যে নিজের ভালো থাকা খাওয়া এমনকি নিজেকে বাঁচাতে আজকের দিনে আমরা কি ক্রমশ ডুবে যাচ্ছি না অপরাধ জগতের মধ্যে? চাপের মুখে আমরা কি মেনে নিতে বাধ্য হচ্ছি অন্যায় অবিচারকে? দ্বিতীয় দফায় অভিনীত হয় বাংলার হারিয়ে যাওয়া লোকশিল্প আলকাপ নিয়ে একটি নাটক দমদম শব্দ মুগ্ধ প্রযোজিত মায়া মৃদংগ। বিশিষ্ট নাট্যকার রাকেশ ঘোষের নাটক ও নির্দেশনায় এই নাটকটি অভিনীত হয়। তিন দিনের নাট্য উৎসব এক কথায় ছিল জমজমাট কিন্তু বেশিরভাগ দিনেই দর্শক সমাগম ছিল খুবই কম।