news bazar24 : মালদা শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দুরুত্বে ইংরেজ বাজার থানার রায়পুর গ্রামে রয়েছে ঐতিহাসিক জহরা কালী মন্দির। সারা বছর শনি মঙ্গলবার করে এখানে দেবী পুজো পেলেও বৈশাখ মাসে দেবী জহরার প্রতিষ্ঠা মাস উপলক্ষে এই মাসের প্রতি দিন নিত্য পুজা হয় এবং মঙ্গল ও শনিবার বিশেষ পুজোর ব্যবস্থা করা হয়। বৈশাখ মাসের প্রতি শনি মঙ্গলবারে বিশাল মেলা বসে জহরা মায়ের পুজা কে কেন্দ্রে করে।
এবার আমরা জেনে নি জহরা মায়ের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস:-
…এই পুজার উৎপত্তি সম্পর্কে নানাজনে নানা রকম মতামত উঠে আসে কেউ কেউ বলেন যে, বল্লাল সেনের আমলে প্রতিষ্ঠিত মন্দিরগুলির মধ্যে এটি একটি অন্যতম মন্দির। আবার কেউ বলেন ৩০০ বছর আগে উত্তর প্রদেশের এক সাধক দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে এখানে গড়ের উপর দেবী জহরা চণ্ডীর বেদি স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তীকালে হীরারাম তিওয়ারি নামের এক সাধক দিব্য দর্শনে দেবীর রূপ প্রত্যক্ষ করেন বলেও শোনা যায়। আবার অনেকে বলেন যে ডাকাতদের হাতেই এই পুজোর সূচনা।অনেককাল আগে ডাকাতরা ডাকাতি করা ধনরত্ন মাটির তলায় চাপা দিয়ে রাখতো। আর তার উপরে তারা এই দেবী মূর্তি বসিয়ে রেখে ডাকাতি করতে যেত।
জহরা মায়ের দেবীর মূর্তি নিয়েও অনেক তথ্য খুজে পাওয়া যায়, কারন এই মায়ের মূর্তি অন্যান্য মূর্তিগুলির মত দেখতে নয়। লাল রংয়ের ঢিবির ওপর রয়েছে এক বিশালাকার মুখোশ। তাছাড়াও ঢিবির দুই পাশে আরও দুটি মুখোশ দেখা যায় ।
দেবীর ব্যতিক্রমী রূপ সম্পর্কে অনেকে বলেন যে অনেককাল আগে নাকি দেবী জহরার পূর্ণাবয়ব বিগ্রহ ছিল কিন্তু যখন বিধর্মীদের আক্রমণ শুরু হয় তখন বিধর্মীদের হাত থেকে এই দেবীর এই মুখাটি একমাত্র রক্ষা করা গেছিলো সেই কারণেই দেবীর এমন রূপ।
৪) বর্তমানে এই মন্দিরের দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন মাধব নগর এলাকার তেওয়ারি পরিবার। সেই পরিবারেরই বংশ গত পুরোহিত রমেশ তেওয়ারি বলেন, মালদা জেলা সহ গোটা রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রচুর ভক্তের সমাগম হয় এখানে। এই জহরা কালী অত্যন্ত জাগ্রত। কোন ভক্ত এসে কোন মানত করলে তা কয়েক দিনের মধ্যেই পূরণ হয়ে যায়।
৫) এই বছর প্রচণ্ড গরমের জন্য উপচে পড়া ভিড় শুরুতে ছিলনা। কারন মানুষের মন্দির প্রঙ্গনে ফি বছর আসার অভ্যাসে পেরেক পুঁতেছে করোনা। করোনা সময়ের জন্য ২ বছর মেলা না বসায় এই বছর প্রথমদিকে। আস্তে আস্তে মেলার দিন যতই গড়িয়েছে ততই উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে । আম বাগানের মধ্যে লালচে গেরুয়া রঙের পঞ্চরত্ন ধাঁচের এই মন্দিরে বহু মানুষ এখনও ঘোড়ার গাড়িতে করে আসেন পূজা দিতে । তাইতো এই চত্বরে এখনো ঘোড়ার গাড়ি বিশেষভাবে চোখে পড়ে মেলার দিন গুলিতে। মনে করিয়ে দেয় জহুরা মায়ের ইতিহাস লুকিয়ে আছে ঘোড়ার গাড়ির জামানার সাথে।