বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত দখল করার আগ্রহ, না কি অন্য কিছু?

NEWS BAZAR 24:
আজ থেকে পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটে বীরভূম জেলা তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডলের নেতৃত্বে এক কথায় প্রায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছিল তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতিতে মোট ৪৬৫ টি আসনের মধ্যে জয় পাওয়া গিয়েছিল ৩৩৭টি আসনে। গ্রাম পঞ্চায়েতে ২২৪৭ টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছিল ১৬৫৯ টি আসন।

পশ্চিমবঙ্গের বাঁকি জেলাগুলিতেও কম-বেশি একই ছবি দেখতে পাওয়া গিয়েছিল ৫ বছর আগে। সবমিলিয়ে জেলা পরিষদের ২৪.৬ শতাংশ, পঞ্চায়েত সমিতির ৩৩.১৯ শতাংশ, গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩৪.৫৬ শতাংশ আসন প্রায় এক কথায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পেয়ে গিয়েছিল তৃণমূল। কুড়ি বছর আগেও যখন বাম আমল ছিল তখন প্রায় একই ছবি দেখা গিয়েছিল। তখনো পঞ্চায়েত ভোটের আগে হয়েছিল প্রাণহানি সংঘর্ষ।

পঞ্চায়েত মনোনয়নের আগে সিপিএম দলের একাধিক বড় বড় নেতারা বিরোধী প্রার্থীদের বাড়িতে সাদা থান নিয়ে আসতো অর্থাৎ বাড়ির পুরুষ ভোটে দাঁড়ালে স্ত্রীদের বিধবা হতে হবে। আবার অনেক সময় বিরোধী রাজনৈতিক মতালম্বীদের বাড়ির পুকুরে ফলিডাল ফেলে মাছ মেরে দেওয়া হতো এই ভাবেও ইঙ্গিত দেওয়া হতো বেশি বাড়াবাড়ি করলে বাড়ির পুরুষদেরও মেরে ফেলা হবে। তবে তৃণমূল সিপিএমের মতো অতো রেখে ঢেকে কথা বলতে বিশ্বাসী নয়। সরাসরি মানুষকে আঘাত করে কিভাবে জয়ী হওয়া যায় তা খুব ভালো করেই জানে তৃণমূল সরকার।

বিরোধী শূন্য ভাবে কিভাবে পঞ্চায়েত দখল করা যায় তা প্রত্যেক রাজনৈতিক দলই খুব ভালো করে জানে। কিন্তু কেন এমন পন্থা অবলম্বন করে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল? এইভাবে কেন নিজের দলকেই বিপদে ফেলে দেয় রাজনৈতিক নেতারা? এই প্রসঙ্গে রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের এক কর্তা জানিয়েছেন, লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য এত যুদ্ধ দেখা যায় না যেটা পঞ্চায়েত নির্বাচনে দেখা যায়। এর পেছনে অন্যতম কারণ আর্থিক ক্ষমতায়ন। এই লক্ষ্যে শুধু বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পাওয়া নয় অন্য দলের জয়ীদের নিজের দলে টেনে আনাও রাজনৈতিক নেতাদের অন্যতম লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়।

কথাটি যে কত সত্য তা এই কুড়ি বছরে আমরা বারবার দেখেছি। ক্ষমতাসীনদের কাছে আর্থিক ক্ষমতায়ন একটি বড় ব্যাপার। শুধু রাজনৈতিক শক্তির বৃদ্ধি নয়, মধু অন্যত্র রয়েছে এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।