news bazar24: আমরা আজ আলোচনা করবো পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতির সর্বজনীন কালী পুজো নিয়ে।এক সময় মহান মহান বিপ্লবী বাঘাযতীন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু জড়িত ছিলেন এই পুজোর সঙ্গে। হাতে গড়ে ওঠা এই সমিতির পুজো শতবর্ষের পথে। এবার পা দিচ্ছে ৯৫-এ। এই পুজো কয়েক দশক ধরে কলকাতায় ‘বড় কালী’ বলেই পরিচিত। এই মণ্ডপের প্রতিমার উচ্চতা ৩০ ফুট। গয়নার লম্বা তালিকা। সাত সকালেই মন্দিরের সামনে পূজার জন্য অপেক্ষায় থাকা ভক্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল নানা অজানা কাহিনি। জানাগেছে, পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতির প্রতিষ্ঠা হয় ১৯২৪ সালে, বিখ্যাত লাঠিয়াল অতুলকৃষ্ণ ঘোষের আদর্শে তৈরি হয় এই অনুশীলন সমিতি।যার সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ছিলেন বাঘা যতীন। তখনকার দিনে অনুশীলন সমিতি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ঘাঁটি ছিল।
এরপর ১৯২৭ সালে অতুলকৃষ্ণ প্রয়াত হলে তাঁর স্মরণে পাথুরিয়াঘাটা ব্যায়াম সমিতি ১৯২৮ সালে শুরু করে কালী পুজো। সেই শুরু, তখন থেকে গত ৯৫ বছর ধরে ঐতিহ্যকে ধরে রেখেছেন পুজো কমিটির সদস্যরা। ১৯৩০ সালে এই পুজোর সভাপতিত্ব করেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু। এছাড়াও পুজোর সঙ্গে তৎকালীন বহু জমিদারের নাম জড়িয়ে আছে বলেই জানা যায়।
এই বছরের পুজোর যুগ্ম সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু ভট্টাচার্য্য জানান, গত ৯৫ বছরে পুজোর জায়গা, মায়ের গায়ের রঙ সহ একাধিক বিষয়ে নানা বদল এসেছে। তবে সব বদলেও ঐতিহ্যে বিন্দুমাত্র আঁচ লাগতে দেননি তাঁরা। ঘুরে ফিরে বছরখানেক বাদে ফের পুজো শুরু হয় যদুলাল মল্লিক রোডে। এখন পুরনো ঠিকানাতেই পুজো হচ্ছে ৩০ ফুটের বড় কালীর। শুরুর দিকে প্রতিমা নীল রঙেরও ছিল না। প্রবীণ সভ্য অমরনাথ ভট্টাচার্য্য জানান, রঙ বদলের পিছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। পাথুরিয়াঘাটার পুজো বরাবর হয় বৈষ্ণব মতে হত, মাঝে এক বছর প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় বিপত্তি ঘটে। অনেকেই বলেছিলেন কালো মায়ের পুজো শাক্ত মতে হওয়া দরকার ছিল। সব মিলিয়ে আলোচনা করে বদলে যায় মায়ের গায়ের রঙ। ৩০ ফুটের শ্যামা মায়ের হাতে থাকে ৬ ফুটের খড়্গ। ঠাকুরের জিভ সোনার, তাছাড়াও সোনা, রূপো মিলিয়ে হার, চোখ, আংটি, আম্রপল্লব, জবা ফুল, চাঁদ মালা, পঞ্চপ্রদীপ, ঘটসহ আরও একগুচ্ছ গয়না এবং পুজোর সামগ্রী।
এই মুহূর্তে পুজোর প্রস্তুতি তুঙ্গে। প্রতিমার গায়ে রঙ পড়েছে। ২২শে অক্টোবর পুজোর উদ্বোধন হবে। পুজোর চেয়ারম্যান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভাইস চেয়ারম্যান মন্ত্রী শশী পাঁজা। পুজোর দিন প্রতিমায় মাল্যদানের পর নদী থেকে রুপোর বড় কলসিতে জল ভরে আনতে হয়। সেই রুপোর কলসি মাথায় করে নিয়ে আসেন পুজো কমিটির সদস্যরা। ঘট স্থাপন করে শুরু হয় পুজো। পুজোর জন্য ৫৬ ভোগের আয়োজন করা হয়। তার সঙ্গেই ৫ রকমের মিষ্টি দেওয়া হয় মা’কে। লাড্ডু, জিভে গজা, খাজা, মালপোয়া এবং জিলিপি।।