news bazar24: কথিত রয়েছে শিব হলেন দেবাদিদেব। ব্রহ্মা-বিষ্ণুর সঙ্গে সমোচ্চারিত তার নাম। একদিকে যেমন মহাপ্রলয়ের দেবতা তিনি, অপরদিকে তেমনি কল্যাণ সুন্দর। আবার পণ্ডিতের মতে শিব হলেন প্রাগার্য সংস্কৃতির দেবতা। শিব শব্দটি উচ্চারণ করা খুবই সহজ মধুর ও শান্তিময়। শিব শব্দের অর্থ হলো শুভ আনন্দ। যেখানে সুখ ও কল্যাণ আছে, সেখানে শান্তি ও আছে। যদিও প্রতিমাসে সোমবার শিবরাত্রি পালন করা হলেও ফাল্গুন মাসে কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে আসা মহা শিবরাত্রি বিশেষ কারণ রয়েছে। এই দিনে পরম পিতা মহাদেব এবং বিশ্বমাতা পার্বতীর বিয়ের রাত্রি। হিন্দু শাস্ত্র মতে শিবরাত্রি পূর্ণ লগ্নে শিব ও পার্বতী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। সেই সাথে এই রাতে মহাদেব প্রথমবারের মতো লিঙ্গ রূপে আবির্ভূত হন। সেই থেকে আজ অবধি শিবলিঙ্গের অবিরাম পুজো এবং শিবরাত্রি পালন হয়ে আসছে। শুধু মহিলারাই নন এই ব্রত পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে সকলেই পালন করে থাকেন। ভক্তদের বিশ্বাস এই পূর্ণ তিথি পালন করলে সমস্ত পাপ থেকে নিষ্কৃতি মেলে, সংসারের শান্তি ফিরে এবং মোক্ষলাভ হয়। আবার অনেকের বিশ্বাস এদিন মহা মৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র পাঠ করলে শক্তি বাড়ে। নির্দিষ্ট আচার-রীতি মেনেই এই বিশেষ দিনে হর- পার্বতীর পূজা করতে হয়। শাস্ত্রমতে, শিবরাত্রির দিন সকাল থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত উপবাস করে পূজা করতে হয় ভক্তকে। তবে যিনি উপবাস করছেন তিনি দুধ ফল ইত্যাদি খেতে পারবেন কিন্তু সেসব খেতে হবে সূর্যাস্তের আগে। যারা নিষ্ঠার সঙ্গে এই ব্রত পালন করেন তারা সারা রাত জেগে থাকেন। চোখের পাতা এক করেন না। বরং রাত জেগে ভক্তিগীতি গেয়ে থাকেন। পরের দিন পূজোর প্রসাদ খেয়ে উপবাস ভঙ্গ করতে হয়। কথায় আছে শিবরাত্রির দিন গঙ্গা স্নান করলে সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়। এদিন চার প্রহর ধরে মহাদেবের পূজো হয়। প্রথম প্রহরের জল দিয়ে, দ্বিতীয় প্রহরে দই দিয়ে, তৃতীয় প্রহরে ঘি এবং শেষ প্রহরে মধু দিয়ে শিবলিঙ্গের অভিষেক করতে হয়। শিবের পুজোয় অপরাজিতা, ধুতরা, আকন্দ ফুল এবং বেলপাতা অবশ্যই ব্যবহার করতে হয়। পুজো শেষ হলে মহাদেবের ১০৮ টি নাম যোগ করতে হয়। তবে বর্তমানে অনেকেই ব্যস্ততার জন্য এবং স্বাস্থ্যের কথা ভেবে ব্রত পালন করতে পারেন না। প্রায় একটা গোটা দিন উপবাস করা এবং সারারাত জেগে থাকা অনেকের পক্ষেই সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস করলেও হয়। স্নান করে শুদ্ধ বসনে সন্ধ্যেয় শিবলিঙ্গে জল ও বেল পাতা নিবেদন করে পুজো করতে হয়। তারপর পুজোর প্রসাদ গ্রহণ করলে ব্রতসম্পন্ন হয়।