পুজোর মুখে বৃষ্টি, চরম সমস্যায় জেলার মৃৎশিল্পীরা

Newsbazar24কার্তিক পাল::বৃষ্টি কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। বর্ষার সময়ে বৃষ্টির জন্য হা হুতাশ করেছিল মানুষ , কিন্তু অগস্টের শেষ থেকে থেকে পরপর নিম্নচাপের বৃষ্টিতে মানুষ নাকানি চুবানি খাচ্ছে। আর মাত্র কয়েকদিন পরেই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। এই পরিস্থিতিতে চরম সমস্যায় পড়েছেন মালদা জেলার মৃৎশিল্পীরা। তাঁরা জানিয়েছেন,সূর্যের মুখ না দেখার ফলে প্রতিমার মাটির প্রলেপ শুকাচ্ছে না। তার ওপর লাগাতার বৃষ্টিতে মাটি পাওয়ার সমস্যা। এই দুইএ মিলে চরম সমস্যায় মৃৎশিল্পীরা।
মালদা শহর সহ গ্রামাঞ্চলের মৃৎশিল্পীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, নিজের নিজের এলাকা ছাড়াও বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিমার বরাত আসে। কাজেই এ সময় নাওয়া-খাওয়া ভুলে প্রতিমা তৈরিতেই ব্যস্ত তাঁরা। কিন্তু তাঁদের কাজে সমস্যা তৈরি করছে বৃষ্টি। শিল্পীরা জানান, প্রতিমায় মাটি লাগানোর কাজ প্রায় শেষ। এখন শুধু রঙের কাজ বাকি। কিন্তু প্রতিমা না শুকোলে রঙের কাজ করা যায় না। টানা বৃষ্টি সেই কাজে অনেকটাই সমস্যা তৈরি করছে। আর কিছুদিন এভাবে চললে তাদেরকে প্রতিমা শুকানোর জন্য অন্য কিছু ভাবতে হবে। কয়লা বা গ্যাসের ব্যবহার করে প্রতিমা শুকাতে হবে। আর এর ফলে খরচ বাড়বে তাঁদের।
মালদহ শহরের এক মৃৎশিল্পী জানান, এ বছর ছোট-বড় মিলিয়ে তিনি ২০ টি প্রতিমা তৈরি করছেন। কর্মীরা দিনরাত কাজ করছেন। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির জন্য প্রতিমা শুকোচ্ছে না।গ্যাস ব্যবহার করে প্রতিমা শুকোনোর কাজ করতে হচ্ছে। এর ফলে প্রতিমা পিছু অতিরিক্ত টাকা খরচ হবে। এই অতিরিক্ত টাকা, আমাদের লভ্যাংশ থেকে যাবে। কি করব অর্ডার যখন নিয়েছি প্রতিমা তো তৈরি করে দিতে হবে।
মালদহের বামনগোলার পাকুয়াহাটের এক মৃৎ শিল্পী নিখিল পাল আক্ষেপের সুরে বলেন চারিদিকে ভারি বৃষ্টির ফলে এক তো মাটি নিয়েও সমস্যায় পড়েছি। মাটি থেকে শুরু করে প্রতিমা তৈরীর সরঞ্জাম সবকিছুর দাম অন্য বারের তুলনায় এবার দ্বিগুণ। কয়েক দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টির জেরে সুর্যের দেখা নেই। প্রতিমার গায়ে মাটির প্রলেপ শুকাচ্ছে না। তাই প্রতিমার গায়ে রঙের প্রলেপ দিতে পারছি না। প্রতিমা তৈরীর কাজ আদৌ সময় মত হবে কিনা তাই নিয়ে দুশ্চিন্তায় মৃৎশিল্পীরা সূর্যের দেখা না পেয়ে বাধ্য হয়ে বার্নার দিয়ে প্রতিমার মাটির প্রলেপ শুকাতে হচ্ছে। পূজা উদ্যোক্তাদের সময় মতো প্রতিমা দিতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় প্রতিমা শিল্পীরা।