Newsbazar 24:ভারত বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সূদৃঢ় করার জন্য, মঙ্গলবার নয়াদিল্লির রেলভবনে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ভার্চুয়ালি এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ২০ টি ব্রডগেজ (BG) লোকোমোটিভ কার্যত বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করা হয় । বাংলাদেশের প্রান্ত থেকে রেলমন্ত্রী মোঃ নুরুল ইসলাম সুজনও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। রেল ভবনে এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সিইও,এ কে লাহোতি,
রেলওয়ে বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা।
বিগত ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বাংলাদেশকে ভারত সরকারের অনুদান সহায়তার প্রকল্পের অধীন প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অঙ্গ। বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তার সাথে মিল রেখে রেলওয়ে, লোকোমোটিভগুলি ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে উপযুক্তভাবে সংশোধন করা হয়েছে। এই লোকোমোটিভগুলি বাংলাদেশে যাত্রীবাহী এবং মালবাহী ট্রেনের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করবে।
অশ্বিনী বৈষ্ণব বলেন, “বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক সভ্যতাগত, সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক। উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রী সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। ভারতীয় রেলও সীমান্তের ওপারে রেল যোগাযোগের উন্নতি এবং শক্তিশালীকরণ এবং উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এখন পর্যন্ত, গেদা-দর্শনা, বেনাপোল-পেট্রাপোল, সিংহবাদ-রোহনপুর, রাধিকাপুর-বিরল এবং হলদিবাড়ি-চিলাহাটি নামে পাঁচটি বিজি সংযোগ চালু রয়েছে। আখাউড়া-আগরতলা এবং মহিহাসান-শাহবাজপুরের আরও দুটি আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগের কাজ ভালোভাবে এগিয়ে চলেছে এবং খুব শীঘ্রই শেষ হয়ে চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সমাবেশে ভার্চুয়ালি ভাষণ দিতে গিয়ে, বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী জনাব মোঃ নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, “আমি বাংলাদেশকে এই সহায়তা করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এর আগে ২০২০ সালের জুন মাসে ভারত সরকার অনুদান হিসেবে বাংলাদেশকে ১০টি লোকোমোটিভ প্রদান করে। ব্রডগেজ লোকোমোটিভ প্রদানের জন্য আমরা ভারতের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। লোকোমোটিভ সরবরাহ পণ্য এবং যাত্রী ট্রেন উভয়ের উন্নতিতে সহায়তা করবে। আমরা আশা করি রেলওয়ে খাতে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সহযোগিতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।”
দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে, বর্তমানে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে তিনটি জোড়া যাত্রীবাহী ট্রেন, যথা কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেস, কলকাতা-খুলনা বন্ধন এক্সপ্রেস এবং নিউ জলপাইগুড়ি-ঢাকা মিতালী এক্সপ্রেস চলছে।
রেলের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য প্রতি মাসে প্রায় ১০০টি পণ্যবাহী ট্রেনের আদান-প্রদানের সাথে ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং গত অর্থ বছরে বাংলাদেশে প্রায় ২.৬৬ মেট্রিক টন কার্গো পাঠানো হয়েছিল। ভারত থেকে রপ্তানিকারক পণ্যগুলি হল পাথর, ডিওসি, খাদ্যশস্য, চায়না ক্লে, জিপসাম, ভুট্টা, পেঁয়াজ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, যখন যা প্রয়োজন। 2020 সাল থেকে পার্সেল কন্টেইনার এবং এনএমজি রেকগুলি পরিচালনা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে যা সাধারণত কৃষি পণ্য, কাপড়, তৈরি পণ্য, হালকা বাণিজ্যিক যান এবং ট্রাক্টর বহন করে। জিও-সিন্থেটিক ব্যাগের একটি নতুন ট্রাফিক সবেমাত্র শুরু হয়েছে এবং গুজরাট থেকে ৩ টি পার্সেল ট্রেন পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশে রেল পরিষেবা উন্নত করার জন্য ভারতীয় প্রতিশ্রুতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, জুলাই ২০২০ সালে অনুদানের ভিত্তিতে ১০ টি বিজি ডিজেল লোকোমোটিভ বাংলাদেশকে হস্তান্তর করা হয়েছিল। বাংলাদেশের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই লোকোমোটিভগুলি ভাল পারফরম্যান্স করছে এবং বাংলাদেশে মসৃণ রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভাল অবদান রাখছে।