দালাল ধরে পুলিসের হাতে তুলে দিলেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তারেরা

news bazar24 : হাতেনাতে দালাল ধরে পুলিসের হাতে তুলে দিলেন ডাক্তাররা।মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।এই হাসপাতালে দালালদের দৌরাত্ম নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘদিনের।অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে,এই বক্তব্যে কর্তৃপক্ষ বারবার বিতর্ক এড়িয়ে গিয়েছে।এদিন যেভাবে প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসকরা অ্যাম্বুলেন্স চালক দুই দালালকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিসের হাতে তুলে দেন তাতে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কার্যত কিছুটা চাপের মধ্যে পড়ে গিয়েছে। অভিযোগ,প্রতিদিন প্রকাশ্যে হাসপাতালে ডাক্তার থেকে শুরু করে আধিকারিকদের সামনে দালালরা দাপিয়ে বেড়ায়।নিজেদের ইচ্ছে মতো তারা রোগীদের ওয়ার্ড থেকে ছুটি করিয়ে নিয়ে নার্সিংহোমে চলে যাচ্ছে।এদিন টিকিট কাউন্টার থেকে প্রসূতি বিভাগ পর্যন্ত দুই অ্যাম্বুলেন্স চালকের গতিবিধি দেখে সন্দেহ হওয়ায় মোবাইল ফোনে ভিডিও রেকর্ডিং করে তাদের উপর নজরদারি শুরু করেন ডাক্তারার।প্রসূতি বিভাগের ঢুকে রোগীনিকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই তারা দরজা বন্ধ করে দেন।দালালরা ভেতরে আটকে পড়ে।এরপর উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ফাঁড়ির পুলিস ডেকে তাদের হাতে ওই দালালদের তুলে দেওয়া হয়।যদিও পুলিস জানিয়েছে,অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে
জিজ্ঞাসাবাদ উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।তাই তাদেরকে সতর্ক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।অভিযোগ,১০২ নম্বর অ্যাম্বুলেন্স চালকদের একাংশ প্রতিদিন রোগিনিদের আনার পর থেকে তাদের নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে যায়।কখনও ওয়ার্ডে ভর্তি করিয়েই প্রসূতিদের ছুটি করিয়ে নার্সিংহোমে নিয়ে যাচ্ছে তারজ।উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ডিন ও প্রসূতি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন,যেভাবে এদিন দুই দালালকে ধরা হয়েছে তাতে অন্য দালালদের কাছে বার্তা যাবে যে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দালালদের উপর কড়া নজরদারি রয়েছে।ভবিষ্যতে এভাবে কোনও রোগি বা প্রসূতি ভাগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে না।পুলিস আইন মেনে তার কাজ করেছে।তবে আমরা দালাল ধরার জন্য নজরদারি চালিয়ে যাব। কেননাএখানে দালালদের অত্যাচার রয়েছে।স্ত্রী রোগ ও প্রসূতি বিভাগের আউটডোরে দেখার পর যাদের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয় তাদের দ্রুত ডেট ডিম দেওয়া হয়।অস্ত্রঁপচারের আগে হাসপাতাল থেকে,তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে অনেকেই জানান তারা নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন বা নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার করেছেন।তাঁদের কথায় বোঝা যায় দালালদের খপ্পরে পড়ে তাঁরা নার্সিংহোমে যেতে বাধ্য হয়েছেন।সরকারি হাসপাতালে স্বেচ্ছায় আসা মানুষদের এভাবে দালালদের নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা যেকোন মূল্যেই বন্ধ করা প্রয়োজন।সেজন্য আমরা নজরদারি চালাচ্ছি।অভিযোগ,হাসপাতালের মূল গেটের মুখেই রাস্তার উপর দালালরা দাঁড়িয়ে থাকে।লোক বুঝে আলাপ করে দরকষাকষি শুরু হয়।যারা নার্সিংহোমে যেতে চান না তাদেরকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দ্রুত টিকিট কাটা,চিকিৎসক দেখানো,বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট দিয়ে দেওয়ার আশ্বাসে মোটা টাকা দাবি করা হয়।দরকষাকষি করে পাঁচ থেকে ১০ হাজার টাকার মধ্যে রফা হয়,এদিনও দেখা গিয়েছে এরকম এক দালাল গেটের মুখ থেকে এক ব্যক্তিকে পাকড়াও করে সোজা অর্থোপেডিক বিভাগের নিয়ে যেতে।কিন্তু রোগীর তরফে দালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ না থাকায় কোনও ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না বলে জানান অর্থোপেডিক বিভাগের এক চিকিৎসক।এপ্রসঙ্গে ডাঃ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন।গতিবিধিতে বোঝা যায় কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণ না থাকার জন্য তাদের ধরা যায় না।এদিন যেভাবে প্রসূতি বিভাগের ইন্টার্ন হাউস স্টাফরা দালালদের ধরেছে তাতে বাকিরাও উদ্বুদ্ধ হবেন।