এসএসসির দাগীর তালিকায় মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়র নাম অভিযোগ বিজেপি নেতার

Newsbazar24:পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি রাজ্যে এক কালো অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এই দুর্নীতির জাল রাজনৈতিক দল থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে গতকাল এস এস সির পক্ষ থেকে প্রকাশ হয়েছে গ্রুপ সি এবং গ্ৰুপ ডি এর অযোগ্যদের তালিকা। আর এই তালিকা প্রকাশিত হবার সাথে সাথেই বিজেপি নেতা ও আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি তার এক্স হ্যান্ডেলের পোস্টে বিস্ফোরক দাবি করেছেন। এই অভিযোগ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে রীতিমত চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানিয়েছেন , আজ পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি-র অবৈধ নিয়োগ পাওয়া প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় ৬৭৪ নম্বর নামটি বিশেষভাবে নজর কেড়েছে। অভিযোগ, ওই প্রার্থীর নাম বৃষ্টি মুখার্জি, যিনি নাকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামাতো ভাইয়ের মেয়ে।

তার অভিযোগ তালিকা অনুযায়ী, বৃষ্টি মুখার্জি OMR শিটে পেয়েছিলেন মাত্র ৭ নম্বর, অথচ “মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদে” সেই নম্বর বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ৫৩। ফলে এত দিন ধরে তিনি চাকরি করছিলেন। বিজেপি নেতার অভিযোগ, “এই পরিবর্তন সবার ভাগ্যে জোটে না কারণ উনি মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়া।”
এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শাসকদল ও বিরোধী শিবিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। বিজেপি মুখপাত্রদের দাবি, এই ঘটনা স্পষ্ট প্রমাণ করে যে, “তৃণমূল কেবলমাত্র টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি করেনি, বরং আত্মীয়স্বজনকেও অবৈধভাবে চাকরি দিয়েছে।” অন্যদিকে আর এক বিজেপি নেতা বলেন, “যে মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে ‘সততার প্রতীক’ বলে দাবি করেন, আজ তার নিজের পরিবারের নাম দুর্নীতির লিস্টে।
অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগকে ‘রাজনৈতিক চক্রান্ত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। দলের মুখপাত্র জানান, “বিজেপি এখন আদালতের বিষয়কেও রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। কমিশনের লিস্টে কারও নাম থাকা মানেই অপরাধ প্রমাণ নয়। বিচার প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে এমন কুৎসা ছড়ানো অনৈতিক।”

ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে এত বড় একটি দুর্নীতি কিভাবে এত দীর্ঘ সময় ধরে চলল? কে বা কারা এই চক্রের মূলচক্রী? তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আরও লিখেছেন, “এই লিস্ট কোর্টে জমা আছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই আরও বড় বড় নাম সামনে আসবে। জনগণের আদালত এখন প্রস্তুত চাকরি চোরদের বিচারের জন্য।”

রাজনীতির ময়দানে এই নতুন বিস্ফোরণ ঠিক এমন সময় এল, যখন রাজ্য সরকার চেষ্টা করছে এসএসসি মামলায় সুষ্ঠু নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে এগোতে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আত্মীয়ের নাম ওঠায় সেই প্রচেষ্টা আবারও প্রশ্নের মুখে।
এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন তরুণ প্রজন্ম। কেউ লিখছেন, “যদি মুখ্যমন্ত্রীর ঘরের মধ্যেও দুর্নীতির ছায়া থাকে, তাহলে আর সাধারণ চাকরিপ্রার্থী কোথায় যাবে?” কেউ বা বলছেন, “এটাই প্রমাণ করছে, যোগ্যতা নয়, সম্পর্কই এখন চাকরির চাবিকাঠি।”
এই ঘটনার পর এখন নজর আদালতের দিকে। আদালত এই অভিযোগের সত্যতা বিচার করে কিনা এটাই এখন দেখার।