Share on whatsapp
Share on twitter
Share on facebook
Share on email
Share on telegram
Share on linkedin

কী ভাবে ছট পুজো করা হয়? জেনে নিন এই পুজার ইতিহাস

Share on whatsapp
Share on facebook
Share on twitter
Share on email
Share on telegram
Share on linkedin

সূর্যকেই পুজো করা হয় ছট পুজোয়। কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার পর ষষ্ঠীতে এই পুজো হয়।

 উদয় পাঠক ঃ বাঙালির উৎসবের মরশুম শেষ লগ্নে চলে এল ছট পুজো। ছট পুজো মূলত বিহারিরা শুরু করেছিলেন বহু বছর আগে। ছট মানে ছট মাইয়া। সূর্যের আরেক নাম। সূর্যকেই পুজো করা হয় ছট পুজোয়। কার্ত্তিক মাসের অমাবস্যার পর ষষ্ঠীতে এই পুজো হয়।

পুজোর নিয়ম মেনে প্রথম দিন মহিলারা একবার কুমড়োর সবজি দিয়ে ভাত খেয়ে ১২ ঘণ্টা উপবাসে থাকবে। তারপর খাবার খেয়ে ২৪ ঘণ্টা উপবাসে থাকবে, তারপর আবার খাবার খেয়ে ৩৬ ঘণ্টা উপবাসে থেকে জলাশয় অথবা নদীতে গিয়ে আবক্ষ জলে দাঁড়িয়ে সূর্য দেবতার কাছে নিজের মনের চাহিদা জানাতে হবে। ছট পুজোর কোনও মন্ত্র নেই। যার যে ভাষায় সূর্যের কাছে মনবাসনা জানানোর ইচ্ছে, তিনি সে ভাষাতেই বলবেন মনে মনে।

রামায়ণ এবং মহাভারত দুয়েতেই ছট পুজোর উল্লেখ রয়েছে। সূর্য বংশের সন্তান হওয়ার কারণে শ্রীরামচন্দ্র নিয়মিত ছট পুজো করতেন। বনবাস কাটিয়ে অযোধ্যা ফেরার সময় রাম ও সীতা সূর্য দেবের উদ্দেশ্যে পুজো ও উপবাস করেন। সেই থেকেই ছট পুজোর সূচনা বলে মনে করা হয়। আবার মহাভারত অনুযায়ী সূর্যদেব ও কুন্তীর পুত্র কর্ণ। কথিত, কর্ণ এই সময় সূর্যের আলোয় আবক্ষ জলে দাঁড়িয়ে দরিদ্রদের মধ্যে প্রসাদ বিতরণ করেছিলেন। আবার নিজেদের রাজ্য ফিরে পাওয়ার জন্য দ্রৌপদী ও পাণ্ডবরাও এই পুজো করেছিলেন বলেও কথিত রয়েছে।

এখন কিন্তু ছট পুজো উদযাপন শুধু বিহারি সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। সারা দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং ধর্মের মানুষ এখন এই উৎসবকে আপন করে নিয়েছেন।

কী ভাবে ছট পুজো করতে হয়? জেনে নিন এই পুজার ইতিহাস

 বৈদিক যুগ থেকে সূর্যদেবতার পুজো চলে আসছে। তাহলে নাম কেন ছট পুজো? আসলে ছয় কথাটাকে নেপাল বা উত্তর ভারতের অনেকে ছট বলে থাকেন। পুজোটি ষষ্ঠীর দিন হয়, সেখান থেকেই ছট শব্দের উৎপত্তি। আর তা থেকেই ছট পুজো। ত্রেতাযুগে শ্রীরামচন্দ্র ও সীতাদেবী শুক্ল ষষ্ঠীর দিনেই সূর্যদেবের আরাধনা করেছিলেন। আবার দ্বাপরে সূর্যপুত্র কর্ণ অঙ্গদেশের রাজা ছিলেন। তিনিও সূর্যদেবের পুজো করেন ৷ দীপাবলীর ঠিক ৬ দিনপরে কার্তিক মাসের শুক্লা ষষ্ঠীতে এই পুজো করা হয়। তাই এর নাম ছট পুজো।

 আবার আরেক পৌরাণিক মতে, সূর্যদেবের ছোট বৌ ঊষাকে এই পূজায় ‘‘ছোটি মইয়া” হিসেবে অভিহিত করা হয়ে থাকে। সেখান থেকেই ছট পূজার নামটি প্রচলন হয়েছে। বিশ্বাস করা হয়‚ বৈদিক যুগের আগে থেকেই ছট পুজো বা সূর্য উপাসনার চল ছিল।মহাভারতে পঞ্চ পাণ্ডব এবং দ্রৌপদী পালন করেছিলেন এই উৎসব। এমনকি, রামায়ণেও আছে রাম সীতার ছট পুজোর কথা।

যাঁরা ছট পুজো করে থাকেন, তাঁরা ভাইফোঁটার পর থেকেই টানা নিরামিষ খান। এই নিরামিষে পেঁয়াজ রসুনও জায়গা পায় না। পুজোর দু’দিন আগে লাউয়ের যেকোনও পদ খেতে হয়। পুজোর ঠিক আগের দিন ‘খারনা’ নামের একটি নিয়ম পালিত হয়। এই সময় সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে পায়েস, লুচি, কলা অর্পণ করা হয়।

ছট পুজোর ডালাতে থাকে হলুদ গাছ, আম পল্লব, নারকেল, কলার কাঁদি, বিভিন্ন ফল, ঠেকুয়া ও খাস্তা টিকরি। নদীর ঘাটে বসে একমনে সূর্যদেবের আরাধনা করার পর নামতে হয় কোমর জলে। নদীর বুকে দাঁড়িয়ে পুজোর ডালা সূর্যদেবের উদ্দেশ্যে অর্পণ করে, ধূপ ধুনো দেখিয়ে হয় আরতি। অবশেষে পরিবারের সকলের নাম করে একটা একটা করে প্রদীপ ভাসিয়ে দেওয়া হয় নদীর বুকে। এটাই এই পুজোর নিয়মরীতি। ডালার প্রসাদ বাড়িতে নিয়ে যান সকলে। বাড়ি ফেরার পরও কিন্তু উপোস ভাঙা হয় না।

 পরের দিন ভোরে আরও একবার সূর্য পুজোর জন্য ঘাটে যেতে হয়। যাঁরা মানত করেন তাঁরা বাড়ি থেকে ঘাট পর্যন্ত দণ্ডি কাটেন। প্রণাম করা হয় উদয়গামী আর অস্তগামী সূর্য ও তাঁর স্ত্রী ঊষা আর প্রত্যুষাকে। তারপরেই ব্রতীরা ভঙ্গ করেন উপবাস। তারা বিশ্বাস করেন‚ ছটপুজোয় সব ইচ্ছা পূর্ণ করেন সূর্যদেব। সংসারের মঙ্গলকামনায় গৃহিণীরাই এই পুজো করে থাকেন। কলা-সহ বিভিন্ন রকম ফল‚ ঠেকুয়া‚ চালের লাড্ডু হল পুজোর প্রসাদ। ছট পুজোর শেষ দিনে ‘মৎস্যমুখী’ অনুষ্ঠান হয় অনেক পরিবারে।

পুরোহিত ছাড়াই ছট পুজো ! উদিত সূর্য ও অস্তমিত সূর্যের কাছে কেন করা হয় প্রার্থনা

 

Share on whatsapp
Share on facebook
Share on twitter
Share on email
Share on telegram
Share on linkedin